ইমরুল কায়েস, বাগেরহাট থেকে: মারা গেল বাগেরহাটের হযরত খানজাহান (রহ:) এর মাজার সংলগ্ন খান জাহান আলী দিঘী বা ঠাকুরদিঘির ধলাপাহাড় এর শেষ বংশধর ”কানা কুমির” নামে পরিচিত মিঠা পানির প্রজাতির শেষ নারী কুমিরটি। আর এই শেষ ”কানা কুমির” মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই দিঘীতে দীর্ঘ ছয় শত বছর ধরে থাকা হযরত খানহাজানের আমলের ‘কুমির রাজত্বের’ অবসান ঘটল।
বুধবার রাতের কোন এক সময়ে ধলাপাহাড় নামের ওই কুমিরটির মৃত্যু হয়। বৃহষ্পতিবার দুপুরে মাজারের খাদেমদের সহযোগিতায় কুমিরটি দিঘী থেকে মাজারের সামনে তোলা হয়। কুমিরের মৃত্যুর খবর পেয়ে মৃতদেহটি দেখতে হাজার হাজার ভক্ত মাজারে ছুটে আসেন।
মাজারের খাদেমরা জানান, মৃত ”কানা কুমির” বয়স আনুমানিক একশ বছর। এই কুমিরটির মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে হযরত খানজাহান (রহ.) এর হাতে ছাড়া শেষ বংশধরের জীবনাবসন ঘটল। এই নারী কুমিরটি প্রতি বছর চৈত্র মাসে ডিম পাড়তে দীঘির পাড়ে একটি বাড়ির বাগানে আশ্রয় নিত। আজ এই কুমিরের মৃত্যু কোন ভাবে মেনে নিতে পারছেন না খাদেমরা। এসময়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
বাগেরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুখেন্দু শেখর গায়েন বলেন, কুমিরটির বয়স একশত বছরের কিছু বেশী। লেজ থেকে মাথা পর্যন্ত কুমিরটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ ফুট এবং ওজন প্রায় ১০ থেকে বারো মন। ময়না তদন্তের পর কুমিরের মৃত্যুর কারন জানা যাবে। বাগেরহাট মডেল থানার এসআই সেলিম উৃদ্দিন জানান, কুমিরের মৃত্যুর খবর পেয়ে মাজারে আসি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা এখানে নিয়োজিত রয়েছি।
এখানে কুমিরের বিচরণ অব্যাহত রাখার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ ২০০৪ সালের ২৬ জুন ভারতের চেন্নাই ক্রোকোডাইল ব্যাঙ্ক থেকে এনে একই প্রজাতির ৬টি কুমির অবমুক্ত করা হয়। অবমুক্ত করা ঐ কুমিরগুলোর মধ্যে দুটি কুমির মারা যায়। দিঘীর অবশিষ্ট চারটি কুমিরের মধ্যে দুটি কুমির সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রানী ও কুমির প্রজনন কেন্দ্রে রয়েছে।
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/