এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: তেলের কারণে একদিকে যখন অশঙ্কার পথে এগোচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য, সেই সময়ই সেখানে হদিস মিলল সঞ্জীবনী ভান্ডারের। টানা চার বছর ধরে চলা গবেষণায় জানা গেল, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের মধ্যে মূলত সুন্দরী গাছের মূলে মিলেছে ডায়াবেটিস প্রতিরোধী ওষুধ।
কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফার্মাকোলজি বিভাগের গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ২০১০ সাল থেকে এই গবেষণা শুরু হয়। সেই গবেষণায় যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা শুনলে সত্যিই ভিরমি খাবেন। বাজারচলতি ডায়াবেটিস রোগের ওষুধের সঙ্গে এই প্রাকৃতিক ভেষজ মেশানো হলে রোগ সারবে দ্রুত!
এই গবেষণার ফলাফলে ইতিমধ্যেই 'এপনো ফার্মাকোলজি', 'জার্নাল অব আয়ুর্বেদা', 'ফার্মানেট', ফার্মাকোলজি সোসাইটির জার্নাল প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও এই প্রকল্পের মুখ্য গবেষক ডা. অঞ্জন অধিকারি এই খবর জানিয়েছেন। ডা. অধিকারি জানান, সুন্দরীর মূলে 'ফ্ল্যাভোনয়েবস' নামে এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থের সন্ধান মিলেছে। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং প্রাণী দেহে ব্যবহার করে দেখা গিয়েছে -সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি উল্লেখযোগ্যভাবে সফল।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই উপদানটি সুগার স্বাভাবিক করে দেয়। স্বাভাবিক মাত্রার তুলনায় আরও কমিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার বিপদ ডেকে আনে না। গবেষকদের লক্ষ্য, উপাদনটিকে আরও ভালোভাবে বিশ্লেষণ করা এবং এটির পেটেন্ট নেওয়া। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, ভবিষ্যতে ট্যাবলেট হিসাবে বাজারে আনার ব্যাপারে সরকার অধীনস্থ ওষুধ নির্মাতা বেঙ্গল কেমিকেল আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, 'বাদাবন'-এর বহু মানুষ সুন্দরী গাছের পাতা, মাটি ভেদ করে উঠে আসা শ্বাসমূল ও অন্যান্য অংশ খেয়ে থাকেন। ওই বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের মধ্যে বড়সড় মড়ক, জটিল অসুখ বা একসঙ্গে বহু মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এই চমকপ্রদ তথ্য পাওয়ার পর ওই গাছ নিয়ে শুরু হয় গবেষণা।