রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:৫৬:৩৩

৮ উপায়ে আয় করতে পারেন ছাত্রজীবনেই

৮ উপায়ে আয় করতে পারেন ছাত্রজীবনেই

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক :  অনেকেই ছাত্রজীবনকে সাধারণত শুধু বই পড়া, ক্লাস-পরীক্ষা আর ক্যাম্পাস জীবনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ মনে করা হয়। এদিকে এখন আর আগের সময় নেই, অনেক বদলেছে। এযুগের শিক্ষার্থীরা শুধু নিজের পড়াশোনাই গুছিয়ে নিচ্ছেন না একই সঙ্গে বাস্তব অভিজ্ঞতা, উদ্যোক্তা দক্ষতা ও অতিরিক্ত আয়ের সুযোগও তৈরি করছেন। বিশেষ করে ডিজিটাল মাধ্যম, ই-কমার্স ও সেবা-বিষয়ক ব্যবসার বিস্তারে ছাত্রজীবনেই নানা ধরনের ছোট ব্যবসা শুরু করা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। খুব বেশি পুঁজি ছাড়াই এসব উদ্যোগ শুরু করা যায় এবং ভবিষ্যতে এগুলো বড় ব্যবসাতে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।

নিচে তুলে ধরা হলো এমন কয়েকটি ছোট ব্যবসা, যেগুলোতে ছাত্রজীবনেই যুক্ত হওয়া সম্ভব-

অনলাইন রিসেলিং বা ছোট ই-কমার্স ব্যবসা
ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম এ নিজের একটি ছোট পেজ খুলে পণ্য বিক্রি করা এখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবসার একটি। পোশাক, কসমেটিকস, বই, গ্যাজেট বা হ্যান্ডমেড সামগ্রী যেকোনো কিছু দিয়েই শুরু করা যায়। ড্রপশিপিং মডেল হলে পণ্য নিজের কাছে রাখারও প্রয়োজন হয় না, ফলে বিনিয়োগের ঝুঁকি খুব কম। শুধু সঠিক মার্কেটিং ও গ্রাহকসেবা দিয়েই এই ব্যবসা থেকে নিয়মিত আয় করা সম্ভব।

টিউশন বা ছোট টিউশন সেন্টার
টিউশন বহুদিন ধরে শিক্ষার্থীদের নির্ভরযোগ্য আয়ের উৎস। তবে এখন অনেকেই দুই–তিনজন মিলে ছোট ‘টিউশন সেন্টার’ বা কোচিং ক্লাস পরিচালনা করছেন। এতে আয়ের সম্ভাবনা আরও বাড়ে। পাশাপাশি নিজের বিষয়বস্তুর ওপর দক্ষতাও বাড়ে, যা ভবিষ্যতে একাডেমিক বা পেশাজীবনে কাজে আসে।

গ্রাফিক ডিজাইন ও ডিজিটাল সার্ভিস ব্যবসা
গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, মোশন গ্রাফিক্স বা সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট—এসব স্কিল শিখে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করা এখন খুব সহজ। Fiverr, Upwork বা স্থানীয় ক্লায়েন্টদের কাছ থেকেই নিয়মিত কাজ পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ছোট একটি স্টুডিও খুলে ডিজাইন–প্রিন্টিং সার্ভিসও চালানো যায়।

কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবসা
বর্তমানে কন্টেন্ট ক্রিয়েশন শুধু শখ নয়—এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবসা। ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ বা টিকটক অ্যাকাউন্টে নিয়মিত তথ্যবহুল বা বিনোদনধর্মী কন্টেন্ট তৈরি করে অনেকেই উল্লেখযোগ্য আয় করছেন। ব্র্যান্ড স্পনসরশিপ, অ্যাডস রেভিনিউ এবং প্রোডাক্ট প্রমোশন সব মিলিয়ে এটি দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায় পরিণত হতে পারে।

ফুড বেইজড মাইক্রো বিজনেস
কেক, বেকারি আইটেম, বাসায় তৈরি খাবার বা স্ন্যাক্স বিশ্ববিদ্যালয়পাড়ায় এসব খাবারের চাহিদা সবসময় থাকে। হোস্টেল-মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের কাছে বাসায় তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবারের বাজার খুবই ভালো। ছোট একটি কিচেন সেটআপ, ভালো প্যাকেজিং ও অনলাইন অর্ডার ডেলিভারি—এতেই শুরু করা যায়।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও ফটোগ্রাফি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগেই নানা অনুষ্ঠান হয়। সেমিনার, ওরিয়েন্টেশন, ক্লাব ফেস্ট, কনসার্ট, সাংস্কৃতিক আয়োজন। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ছোট আকারের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট দল তৈরি করে এসব অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে পারেন। সঙ্গে ফটোগ্রাফি ও ভিডিও কভারেজ যুক্ত করলে এটি আরও লাভজনক ব্যবসা হয়ে ওঠে।

অ্যাপ–ভিত্তিক বা ক্যাম্পাস সার্ভিস ব্যবসা
ক্যাম্পাসে স্টেশনারি, প্রিন্টিং, লজিস্টিক, নোট–সরবরাহ কিংবা মেস–খাবার ডেলিভারি—এসব সেবা দিয়েও ভালো আয় করা যায়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র–ছাত্রীরাই এখন ক্যাম্পাস ডেলিভারি অ্যাপ পরিচালনা করছেন। ব্যবহারকারী বেশি হলে খুব দ্রুতই এই ধরণের সেবা লাভজনক হয়ে ওঠে।

লেখালেখি, অনুবাদ ও একাডেমিক সার্ভিস
ব্লগ রাইটিং, নিউজ রাইটিং, কনটেন্ট রাইটিং, অনুবাদ এসব দক্ষতা থাকলে ফ্রিল্যান্স কাজ সহজেই পাওয়া যায়। অনেক শিক্ষার্থী আবার এসাইনমেন্ট গাইডলাইন, থিসিস প্রুফরিডিং বা ডেটা এন্ট্রি সার্ভিসও দিয়ে থাকেন। এতে সময় অনুযায়ী কাজ বেছে নেওয়া যায়, তাই পড়াশোনার ক্ষতিও হয় না।

ছাত্রজীবনে ব্যবসা শুরু করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঝুঁকি কম, শেখার সুযোগ বেশি, আর উদ্যোক্তা মানসিকতা তৈরি হয় খুব দ্রুত। অনেক বড় উদ্যোক্তা তাদের যাত্রা শুরু করেছিলেন ঠিক এমনই ছোট উদ্যোগ দিয়ে। তাই দক্ষতা, সময় ব্যবস্থাপনা ও সামান্য সৃজনশীলতা থাকলেই যে কেউ ছাত্রজীবনেই সফল ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে