এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : শুধু পাখি নয় উড়ে মাছও। এমনই এক মাছের সন্ধান পাওয়া গেল সাগরে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাগরে দীর্ঘদিন ধরেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে এ মাছ। পাখি ও ডাইনোসরদের আগে থেকেই এ মাছের অস্তিত্ব ছিল- এখনও রয়েছে। পাখির মতোই উড়ে সেই মাছের নাম হল উড়ূক্কু মাছ।
গবেষকরা জানান, উড়ূক্কু মাছের অস্তিত্ব সাগরে বিদ্যমান ২৪ কোটি বছর আগে থেকেই। চীনের জীবাশ্ম বিজ্ঞানীদের দাবি, আকাশে পাখিদের উড়ার ৮ কোটি বছর আগে থেকেই উড়ূক্কু মাছের রাজত্ব ছিল। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন উড়ূক্কু মাছটি ২৪ কোটি বছর আগে সাগর থেকে লাফিয়ে উঠেছিল শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পেতে। সম্প্রতি চীনের জাদুঘরে সংরক্ষিত একটি উড়ূক্কু মাছের জীবাশ্ম গবেষণা করে এ তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এখবর জানিয়েছে, বিবিসি ও ডেইলি মেইল অনলাইন।
গবেষকদের ধারণা ছিল, উড়ূক্কু মাছের প্রজাতি বড়জোর সাড়ে ছয় কোটি বছরের পুরনো হতে পারে। কারণ, এ সময়ের আগের কোনো উড়ূক্কু মাছের জীবাশ্ম তাদের কাছে ছিল না। চীনের জাদুঘরে থাকা উড়ূক্কু মাছের ফসিল বা জীবাশ্ম গবেষণায় তারা দেখেছেন, ২৩ থেকে ২৪ কোটি বছর আগের মধ্য ট্রায়াসিক যুগে ্তুপোটানিক্সাস কিংজিনসাস নামের উড়ূক্কু মাছের প্রজাতির অস্তিত্ব ছিল, যা জুরাসিক যুগের ডাইনোসরদের থেকেও ৫ কোটি বছর আগেকার।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়, চীনা বিজ্ঞান একাডেমী ও জেজিয়াং প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় এ নিবন্ধ ‘প্রসিডিংস অব দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। এতে গবেষকরা জানিয়েছেন, সবচেয়ে প্রাচীন উড়ূক্কু মাছের জীবাশ্ম হিসেবে এর আগে ইউরোপে খোঁজ পাওয়া জীবাশ্মের তুলনায় পোটানিক্সাস কিংজিনসাস্থ প্রজাতির উড়ূক্কু মাছের জীবাশ্ম ২ কোটি ৭০ লাখ বছরের পুরনো।
গবেষক ও নিবন্ধের লেখক গুয়ান-হুই জু উড়ূক্কু মাছের প্রাচীন প্রজাতি সম্পর্কে জানিয়েছেন, মেরুদী প্রাণীদের মধ্যে ওড়ার দিক থেকে সবচেয়ে প্রাচীন প্রাণীর প্রমাণ হচ্ছে, পোটানিক্সাস কিংজিনসাস। এর অর্থ হচ্ছে কিংজিংয়ের পাখাওয়ালা মাছ। ২০০৯ সালে চীনের কিংজিং শহর থেকে এ প্রজাতির মাছের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন গবেষকরা। মাছটির আদি নিবাস ছিল ভারত মহাসাগরে।
অদ্ভুত-দর্শন, বোঁচা নাকের এ প্রাণীটি সম্পর্কে গবেষকদের ধারণা, শিকারি প্রাণীদের থেকে রক্ষা পেতেই উড়তে শুরু করে উড়ূক্কু মাছ। এদের গতি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বা এরও বেশি হতে পারে। পানি স্পর্শ না করে বাতাসে এরা প্রায় এক মিনিট পর্যন্ত উড়তে পারে। এখনকার গ্রীষ্মলীয় সাগরের উপকূলে যেসব উড়ূক্কু মাছ দেখা যায় সেগুলো ডলফিন, স্কুইড ও বড় মাছের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ৬ মিটারের বেশি ওপর দিয়ে ৪০০ মিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে। ৬ ইঞ্চি মাপের এ উড়ূক্কু মাছটির মোট চারটি পাখা ছিল। এর মধ্যে দুটি পাখা বড়। লেজও ছিল তুলনামূলকভাবে অনেক বড়, যা পানি থেকে ওপরে উঠতে ব্যবহৃত হতো।