বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:৩২:৫৮

পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হওয়া কিছু পশুর গল্প

পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হওয়া কিছু পশুর গল্প

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বিবর্তন ও ক্রমগত পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাবের ফলে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে অনেক প্রাণী। এক সময় যাদের দেখা যেত সর্বদায় বিচরণ করতে আজ তারা হারিয়ে গেছে পৃথিবীর বুক থেকে। পৃথিবীতে বেশ কিছু বিশাল আকারের প্রাণী ছিল। ডাইনোসরের মতোই কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে তারা। তাদের হারিয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে মানুষেরও হাত।

তাসমানিয়ান বাঘ : তাসমানিয়ান বাঘ বা Thylacine ছিল একটি পরিচিত মাংসাশী প্রাণীর নাম। বিংশ শতাব্দিতে অস্ট্রেলিয়া এবং নতুন গিনিতে ওগুলো কিছুটা দেখতে পাওয়া যেত। তবে এটাকে Tasmanian Wolf নামেও ডাকা হত।Thylacine মহাদেশের ইউরোপীয় উপনিবেশের পূর্বে অস্ট্রেলিয়া এবং পরে বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জে এগুলো দেখতে পাওয়া যেত। ধারণা করা হয় এটি ১৯৩৬ সাল থেকে বিলুপ্ত হয়েছে।

কাসপিয়ান টাইগার : Caspian Tiger ইরান, ইরাক, আফগানিস্তান, তুরস্ক, মঙ্গোলিয়া, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তানে, উজবেকিস্তানে এটি পাওয়া গিয়েছিল। যা ১৯৭০ সালের দিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এই প্রজাতির বাঘটি ছিল বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম বাঘ। এই প্রজাতির পুরুষ বাঘের ওজন ১৬৯-২৪০ কেজি হয়ে থাকত এবং স্ত্রী বাঘের ওজন ৮৫-১৩৫ কেজি হয়ে থাকত। তবে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন এখনও এই প্রাণীটির অস্তিত্ব রয়েছে।

স্টেলারস সি কাউ : Asiatic সমুদ্রের উপকূলের কাছে Ormerly প্রজাতীর প্রাণীটি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল, এইটিnaturalist ‡eorg Steller এর দ্বারা ১৭৪১ সালে খুঁজে বার করা হয়েছিল। এই প্রাণীটি প্রায় ৭.৯ মিটার হয়েছিল। যাmanatee অথবা du gong এর চেয়ে তিন টন বেশি ওজনের ছিল। Steller অনুসারে, এই প্রাণীটি তীরে কখনও আসে না , জলের মধ্যেই চিরন্তন বসবাস করে।

এর ত্বক কালো এবং পুরু, একটি পুরনো ড়ধশ গাছের বাকলের মতো। তবে আশ্চর্যের কথা হল এটির কোন দাঁত নেই। গ্রিনল্যাণ্ড থেকেStellerÕs Sea Cow মতো প্রাণীর এখনও কিছুটা প্রজাতি আছে, সুতরাং এইটি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে এই প্রাণীটির ক্ষুদ্র অংশ হলেও বর্তমান সময়ে বেঁচে থাকতে পারে। এইটি এখনও পর্যন্ত অপ্রমাণিত। তবে এটাকে ১৭৬৮ সালের পর থেকেই বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এই সকল প্রাণী আর দেখা যায়নি তাদেরই এই পৃথিবীতে।

কুয়াগা : আধা জেব্রা, আধা ঘোড়া : আফ্রিকা মহাদেশের বিচিত্র বিলুপ্ত একটি প্রাণী হচ্ছে Quagga। এই প্রাণীটি দেখে অনেকটাই অকল্পনীয় প্রাণী মনে হয়। কিন্তু এটিও কোন একসময় সচরাচর দেখতে পাওয়া যেত। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ প্রদেশে একবার খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল এবং যা ছিল একটি বিরল ঘটনা। এই প্রাণীটার প্রথম অর্ধেক অংশ ছিল জেব্রার মতো দেখতে কিন্তু পিছনের অংশ ছিল ঘোড়ার মতো।

ধারণা করা হয় এটি ১৮৮৩ সালের পর থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। এটাকে ১৭৮৮ সালে প্রাণীদের একটি প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সর্বশেষ ১৮৭০ সালের দিকে একটি Quagga পাওয়া যায় যেটিকে Artis Magistra zoo তে সংরক্ষণে রাখা হয়। কিন্তু সর্বশেষ পাওয়া এই প্রাণীটি ১৮৮৩ সালের ১২ আগস্ট মারা যায়। তবে সমপ্রতি Smithsonian সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে যে এই প্রাণীটি আলাদা একটি প্রজাতি ছিল না বরং সাধারণ জেব্রাদের মতোই একটি। এর পর থেকে বিলুপ্ত এই প্রানী।

অ্যাওরোকস : Aurochs এই প্রাণীটি কোন একসময়ে ইউরোপের বিখ্যাত একটি প্রাণী ছিল। যা ভারত এবং এশিয়ার আরও কিছু দেশে পাওয়া যেত। ১৫৬৪ সালে gamekeepers রাজকীয় পরিসংখ্যান অনুসারে কেবল ৩৮ প্রাণীর সংখ্যা বের করতে পেরেছিল। তবে ১৬২৭ সালে এই প্রাণীকে পূর্ণাঙ্গভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এই সকল প্রাণী আর দেখা যায়নি তাদেরই এই পৃথিবীতে।

গ্রেট আক : Great Auk প্রাণীটি ছিল পেঙ্গুইনদেরই একটি প্রজাতি, যাAtlantic সমুদ্রের পাড়ের দ্বীপ এবং দেশগুলোতে পাওয়া যেত। কিন্তু এগুলো আজকে বিলুপ্ত। এগুলো দাঁড়ানো অবস্থায় ৭৫ সেন্টিমিটার অথবা ৩০-৪০ ইঞ্চি হয়ে থাকত। এগুলোর ওজন ৫ কেজির মতো হয়ে থাকত। এগুলো আগে কানাডা, গ্রিনল্যাণ্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, আয়ারল্যাণ্ড এবং ব্রিটেনে বহু সংখ্যক খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল এবং শিকারও করা হয়েছিল। তবে ১৮৪৪ সালের পর থেকে এগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এই সকল প্রাণী আর দেখা যায়নি তাদেরই এই পৃথিবীতে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে