মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:৫৩:২৭

কাউকে 'না’ বলতে না পারাটা কী কোন রোগ? এটি ভাল নাকি মন্দ?

কাউকে 'না’ বলতে না পারাটা কী কোন রোগ? এটি ভাল নাকি মন্দ?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আমরা অনেকেই আছি, যারা কারও অনুরোধে ‘না’ বলতে পারি না। চেনা হোক বা অচেনা, কেউ কিছু চাইলে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই, এই ভেবে যে না বললে হয়তো অন্যজন মন খারাপ করবেন। অথচ এই অভ্যাসের কারণে নিজের ইচ্ছেগুলো হারিয়ে যায় এবং পরে নিজের ওপরই হতাশা ও রাগ জন্ম নেয়।

মনোবিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ‘সবার মন রাখার’ বা ‘পিপল-প্লিজিং’ অভ্যাসের পেছনে এক ধরনের মানসিক উদ্বেগ বা ‘অ্যাংজাইটি’ কাজ করে। এই উদ্বেগ থেকেই জন্ম নেয় অন্যদের খুশি করার চাপ। সব সময় চাওয়া হয় যে সবাই খুশি থাকুক, কেউ রাগ না করুক বা কেউ কিছু মনে না করুক। তাই নিজের না থাকা সত্ত্বেও অনেকেই ‘হ্যাঁ’ বলে ফেলেন।

মনোবিশেষজ্ঞ মনসী কোঠারি জানান, ছোটবেলা থেকেই কিছু মানুষ এমন পরিস্থিতিতে বড় হন, যেখানে কেবল ভালো ব্যবহার বা আবদার মেটালেই প্রশংসা বা ভালোবাসা পাওয়া যায়। ফলে বড় হয়েও তারা এই অভ্যাস ধরে রাখেন এবং মনে করেন সব সময় হাসিমুখে ‘হ্যাঁ’ বলাই ‘ভদ্রতা’। কিন্তু এর ফলস্বরূপ নিজের কথা না বলতে পারার হতাশা, মানসিক চাপ এবং ভেতরে বিরক্তি, হতাশা ও ক্ষোভ জমতে থাকে।

এই অভ্যাসের কারণে সম্পর্কগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয়। কারণ, আপনি শুধু দিয়েই যাচ্ছেন, কিছুই নিচ্ছেন না। দিনশেষে নিজেকে ফাঁকা লাগে। অনেকে আড্ডা দেওয়ার পরেও ঘরে ফিরে চিন্তা করেন, ‘আমি কিছু ভুল বলিনি তো?’ আবার কেউ কিছু চেয়ে বসলে, অনেক কিছু বাদ দিয়ে হলেও সেটি করে দেন, শুধু এই ভয় থেকে যে ‘না’ বললে হয়তো রেগে যাবে।

তবে আশার কথা, এই মানুষ খুশি করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। এর জন্য প্রথম পদক্ষেপ হলো—আপনি এমন করছেন কেন, সেই কারণটি বোঝা। তারপর ধীরে ধীরে ‘না’ বলার অভ্যাস করতে হবে। শুরুতে অস্বস্তি লাগলেও, ধীরে ধীরে এটি সহজ হয়ে আসবে।

মনে রাখতে হবে, মানুষকে খুশি রাখার জন্য সব সময় নিজেকে হারিয়ে ফেলার মানে নেই। নিজের ইচ্ছা, নিজের চাওয়া, এগুলোরও মূল্য আছে।

নিজেকে বোঝা, নিজের প্রতি দয়াশীল হওয়া এবং প্রয়োজনে পেশাদার কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়াই হতে পারে এই মানসিক চাপ থেকে মুক্তির পথ।

কারণ সবাইকে খুশি রাখতে গিয়ে যদি আপনি নিজে খুশি না থাকেন, তাহলে সেটা কারো জন্যই ভালো নয়। সবার আগে দরকার, নিজের সঙ্গে ভালো থাকা। (তথ্যসূত্র: টাইম নাউ)

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে