এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : কুকুর যে খুব প্রভুভক্ত তা তো আমরা সবাই জানি। তাই এ প্রাণীটি সেই প্রাচীন যুগ থেকে মানুষের বাড়িঘর পাহাড়া দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। কিন্তু তাই বলে নেকড়ে!
নেকড়ে খুবই হিং¯্র একটা প্রাণী। বাঘ-সিংহের মতোই এ প্রাণীর তেজ। এ বিপজ্জনক পশুটিকে এখন কুকুরের মতোই বাড়ি পাহাড়া দেয়ার কাজে লাগানো হয়েছে।
শুধু যে একটা দুটো এরকম ঘটনা ঘটছে, তান কিন্তু নয়। পোষা প্রাণী হিসেবে নেকড়ে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে কাজাকিস্তানের গ্রামগুলোতে। স্থানীয় টিভি চ্যনেল কেটিকের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
জানা গেছে, কাজাকিস্তানে এখন ৫শ’ ডলারে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮ হাজার ১শ’ ৪৫ টাকা) একটি নেকড়ের বাচ্চা কিনতে পাওয়া যায়। কেনার পর এ বন্য প্রাণীটিকে নানা কৌশলে পোষ মানিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়।
পোষ মানার পর একে লাগানো হয় জমাজমি আর ঘরবাড়ি পাহাড়া দেয়ার কাজে। কাজাস্তানের গ্রামবাসীদের কাছে এরা নাকি কুকুরের মতোই বিশ্বস্ত।
কাজাকিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় আলমাতি অঞ্চলের বাসিন্দা নুরসেইত জিলকিসাইবের অভিজ্ঞতার কথা শোনা যাক। তিনি নিজেও একটি নেকড়ে পুষছেন। নিজের এ পোষা জন্তুটির গুণপনায় তিনি যারপরনাই মুগ্ধ।
তিনি বলেন, তিন বছর আগে শিকারিদের কাছ থেকে তিনি ওকে খরিদ করেন। সে এখন অব্দি কাউকে কামড়ায়নি। তিনি এখন একে ছেড়েই রাখেন।
তিনি আরো জানান, প্রায়ই তিনি নেকড়েটাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বের হন। তার পরিবার কিংবা গ্রামের লোকজন কেউই ওকে ভয় পায় না।
তার মতে, নেকড়েদের যদি ঠিকভাবে খাবার দেয়া হয় তাহলে তারা কখনোই কাউকে কামড়াবে না। তবে নেকড়ে বিশেষজ্ঞ আলমাস জাপারভের মতে, এসব জন্তু বাড়িতে রাখাটা বিপজ্জনক।
গণমাধ্যমকে তিনি জানান, বাড়িতে একটা বোমা রাখলে সারাক্ষণ যেমন এটি ফেটে যাওয়ার ভয় থাকে, তেমনি পোষা নেকড়েটিও যে কোনো মুহূর্তে বিগড়ে যেতে পারে।
নেকড়ে পালন সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে তিনি আরো বলেন, আসলে কাজাকিস্তানে নেকড়ে পালা এখন একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা ঘরবাড়িতে নেকড়ে খোলা অবস্থায় রেখে দিয়েছেন তারা যে কোনো সময় ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলেও তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন।
তবে কাজাকিস্তানের এ নেকড়েপ্রীতি সাড়া জাগিয়েছে সেখানকার সামাজিক সাইটগুলোতে। অনলাইন ইউজাররা নানাভাবে একে উৎসাহিত করছেন। নুর নিউজ পোর্টালে এক ইউজার লিখেছেন, নেকড়েদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে নেকড়ে পালতে শুরু করেছে গ্রামবাসীরা।
এজন্য আপনি তাদের দোষ দিতে পারেন না। আর একজন মজা করে লিখেছেন, ভেড়াগুলোকে খোঁয়াড়ে পুরে রাখা হয়েছে আর ভরা পেটে ঘুরছে নেকড়ের পাল। কিন্তু এখানে কোনো মেষপালক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।