বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:৪৮:০৬

কুকুর যখন সন্ত্রাসী!

কুকুর যখন সন্ত্রাসী!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : টেবিলে উঠে সরকারি ফাইলপত্র কামড়ে-আঁচড়ে ছিঁড়ে ল্যাব্রাডর। মাঝে মধ্যে দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে যাচ্ছে চেয়ারে কুঁকড়ে বসে থাকা অফিসারের দিকে। জাঁদরেল পোষ্যর গলার চেন ধরে হুমকি দিয়ে চলেন বিহারের এক মন্ত্রীর স্বামী!

এমনই কাণ্ড ঘটেছে ভারতের পূর্ণিয়ার ভবানীপুরে। পুলিশের কাছে এ নিয়ে নালিশ করেছেন ভূমি-বিষয়ক দফতরের ব্লক সার্কেল অফিসার অনিল কুমার।

থানায় এফআইআর দায়ের করেন রাজ্যের তফসিল জাতি-উপজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিমা ভারতীর স্বামী অবধেশ কুমার ও তার ল্যাব্রাডর কৃষ্ণার বিরুদ্ধে!

মন্ত্রীর স্বামীর পাশাপাশি ওই পোষ্যের বিরুদ্ধেও সরকারি কর্মীর কাজে বাধা, নিগ্রহ, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা নিয়ে আলোচনায় মেতেছে গোটা রাজ্য।

কীভাবে ফ্যাসাদে পড়েছিলেন অনিলবাবু? ওই সরকারি অফিসারের  কথায়, ২০-২৫ জন লোক নিয়ে আঁচমকা আমার অফিসে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েছিলেন অবধেশ। সঙ্গে একটা কুকুরও ছিল।

তার অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ‘কাট-মানি’ চেয়েছিলেন অবধেশ। মাসে মাসে তোলাও চান। তাতে  মানতে রাজি হননি অনিলবাবু। এরপরই তার অফিসের তিন কর্মীকে মারধর করেন অবধেশের চামচারা

তার দিকে ল্যাব্রাডর (কুকুর) লেলিয়ে দেয়া হয়। এক লাফে সেটি টেবিলে উঠে পড়ে। কামড়ে ছিঁড়তে থাকে সরকারি কাগজপত্র। বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ‘ঘেউঘেউ’ করে অনিলবাবুদের দিকে তেড়ে যায়।

হামলার অভিযোগ মানতে রাজি হননি অবধেশবাবু। তার দাবি, ওই অফিসারের বিরুদ্ধে জমি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ শুনেছিলেন। তাই তার সঙ্গে কথা বলতে যান।

অবধেশবাবুর বক্তব্য, নাগরিক হিসেবেই সরকারি দফতরে গিয়েছিলাম। কিন্তু অফিসারের সঙ্গে দেখাই হয়নি। একই কথা    বলেছেন মন্ত্রীও।

তার কথায়, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় আমার স্বামীকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। অনিলবাবুর পাল্টা জবাব, সব মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। আমার অফিসের কর্মীরাও ঘটনার সময় হাজির  ছিলেন।

তিনি জানান, ওঁদের খুব মারধর করা হয়। এলাকার লোকজন অবশ্য জানিয়েছেন, মন্ত্রীর স্বামী হিসেবে অবধেশবাবুর যথেষ্ট প্রভাব-প্রতিপত্তি রয়েছে। তার নামে এর আগেও পুলিশের খাতায় টুকটাক ঝামেলার অভিযোগ ছিল। কিন্তু উপরওয়ালাদের ভয়ে পুলিশ তাকে সহজে ঘাঁটাতে চায় না।

এবারের ঘটনায় পুলিশকর্তারা বিব্রত। একদিকে মন্ত্রীর স্বামী, অন্যদিকে সরকারি অফিসার, তাই তারা ‘শ্যাম রাখেন না কুল’!

স্থানীয় থানার ওসি এস এন পাণ্ডে বলছেন, অভিযোগ পেয়েছি। কী ঘটেছিল তা দেখা হচ্ছে। এখন এর বেশি কিছু বলতে চাই না। এ নিয়ে মুখে কুলুপ দিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপারও।

কিন্তু অনিলবাবু জানিয়েছেন, এ সবের শেষ না দেখে তিনি ছাড়বেন না। মনিবসহ ল্যাব্রাডর শেষে থানার লকআপে ঢুকবে কি না তা দেখতে উৎসুক পূর্ণিয়ার বাসিন্দারা!

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে