এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : কাজাকিস্তানের রহস্যময় একটি গ্রাম রয়েছে। এ গ্রামে ঘুম মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের অন্তঃসারশূন্য তন্দ্রাচ্ছন্ন লোক বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
জানা গেছে, উত্তর কাজাকিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকার গ্রাম কালাচি ও এর পাশের ক্রাসনোগোরস্ক শহরের অধিবাসীরা এ রহস্যময় ঘুমের রোগে আক্রান্ত। প্রায় চার বছর ধরে তাদের এ অবস্থা চলছে।
চিকিৎসকরা মনে করছেন, মস্তিষ্কে অত্যধিক তরল পদার্থের উপস্থিতির কারণেই এমনটি হতে পারে। তবে এখনো এ অবস্থার সঠিক কোনো কারণ নির্ণয় করতে পারেননি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ অদ্ভুত ঘুমের ব্যাধি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। শহরটিতে এ ব্যাধির হার ১৪ শতাংশ। শহরের প্রায় ৬০০ বাসিন্দা এ ঘুমে আক্রান্ত হয়েছে।
কাজাখ রাজধানী আস্তানা থেকে ২৭৬ মাইল দূরের ওই প্রত্যন্ত এলাকায় কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তারা চিন্তিত যে, অদ্ভুত এ ঘুমের ব্যাধি হয়তো তাদেরকেও চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দিতে পারে।
গত গ্রীষ্মে ঘুমের এ ব্যাধিতে আক্রান্ত ৬০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আক্রান্ত লোকগুলো মাথা ঝিমঝিম করা, দাঁড়াতে অক্ষমতা, অবসন্নভাব এবং মস্তিষ্কের সমস্যায় ভুগছিলেন।
এছাড়াও কেউ কেউ তীব্র দৃষ্টিভ্রমেও ভুগছেন বলে জানা গেছে। চিকিৎসকরা এ রোগের কারণ হিসাবে মেনিনজাইটিসের মতো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কথা বলছেন।
মাটি কিংবা পানিতে রাসায়নিক পদার্থের কারণেও এমনটি হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও বিজ্ঞানীরা সেখানকার মাটি কিংবা পানিতে কোনো ধরনের রাসায়নিক পদার্থের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি।
স্থানীয়দের মতে, সাবেক সোভিয়েত যুগের ইউরেনিয়াম খনির তেজষ্ক্রিয়তার প্রভাবেও এমনটি হতে পারে। সোভিয়েত যুগের ইউরেনিয়াম খনিগুলো এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।
যদি এ কথাই সত্যি হয় তবে যারা এ খনির নিচে কাজ করছে তাদেরও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা। কিন্তু তারা কেউ এ রোগে আক্রান্ত হয়নি।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, খনির ব্যাকগ্রাউন্ডে বিকিরণের যে মাত্রা পাওয়া গেছে, আক্রান্ত গ্রাম ও প্রতিবেশী শহর ক্রাসনোগোরস্কে বিকিরণের মাত্রাও একই।
ক্রাসনোগোরস্ক শহর একসময় একটি সমৃদ্ধ এলাকা ছিল। রহস্যময় রোগ ছড়িয়ে পড়ার পর এখন এটি যেন এক প্রেতপূরী।