এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মঙ্গল গ্রহে কোনো এক সময় যে নদী প্রবাহিত হতো, যার দৈর্ঘ্য ছিল ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার বা ৯০০ মাইল। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ইসার পাঠানো ‘মার্স এক্সপ্রেস ক্রাফট’ নভোযান পরিবেশিত তথ্য থেকে এমন প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সমপ্রতি ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। যাতে মঙ্গলের উত্তরাঞ্চলে জলপ্রণালির গতিপথ থাকার স্পষ্ট চিহ্ন দেখা গেছে। গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই মঙ্গলগ্রহের ভূপৃষ্ঠে পানির প্রবাহ ছিল বলে ধারণা করে আসছিলেন। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার প্রকাশ করা ছবি মঙ্গলের রেউল ভ্যালিস অঞ্চলে বেশ কিছু লম্বা ও গভীর রেখা দেখা গেছে, যার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়েছেন, এ পথে এক সময় পানির প্রবাহ ছিল।
পানি প্রবাহের ফলে এ খাদ তৈরি হয়েছে। এটি প্রায় ৭ কিলোমিটার চওড়া ও ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার লম্বা এবং এর গভীরতা প্রায় ১ হাজার ফুট। এ ছাড়া মূল নদীটির কয়েকটি উপনদী বা শাখানদীও লক্ষ্য করা গেছে। গবেষকরা জানান, ছবি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো মঙ্গলের প্রাচীন কয়েকটি নদীর সংযোগস্থল।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মঙ্গলগ্রহে এক সময় জমাটবাঁধা বরফ ছিল। যা গলে নদীতে প্রবাহিত হওয়ার সময় এ উপনদীগুলো তৈরি হয়েছে। পৃথিবী সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে মঙ্গল সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায়ের তেমন কোনো পার্থক্য নেই বলে মনে করছেন গবেষকরা। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, এ সাদৃশ্যগুলো আভাস দিচ্ছে আমাদের পৃথিবীর গঠনের সঙ্গে মঙ্গলের গঠনের তেমন কোনো বৈসাদৃশ্য নেই, কখনোই ছিল না। তবে গবেষকরা বলছেন, লোহিত গ্রহটির সিক্ত অতীত নিয়ে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা লাল গ্রহটির ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। এগুলো আমাজনিয়ান হিসপ্যারিয়ান ও নোয়াচিয়ান পিরিয়ড নামে পরিচিত। গবেষকরা মনে করছেন, মঙ্গলে নদী সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আমাজনিয়ান পিরিয়ডে। এরপর হিসপ্যারিয়ান পিরিয়ডে তরল পানি দীর্ঘদিন প্রবাহিত হওয়ার পর খাদগুলো তৈরি হয়, যা ৩.৫ বিলিয়ন থেকে ১.৮ বিলিয়ন বছর আগে শেষ হয়।