বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:৫৩:৩৫

পড়ার খরচ চালাতে চকলেটের দোকান

পড়ার খরচ চালাতে চকলেটের দোকান

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পড়ালেখার প্রতি ঝোঁক তার। কোনো অবস্থাতেই স্কুল থেকে বিতাড়িত হতে চায় না সে। লেখাপড়া করে বড়মাপের কিছু হওয়ার স্বপ্ন তার। যুক্তরাজ্যের স্যালফোর্ডে টমি রোসের স্কুলটির নাম বুইলে হাই হিল স্কুল।

কিন্তু স্কুলের খরচ চালানোর সামর্থ্য নেই টমির বাবা-মা’র। তাই স্কুলের মাঠেই চকলেটের দোকান দিয়ে বসেছে সে। চকলেট, ডেইরি মিল্কবার এবং মিষ্টি জাতীয় কিছু খাবার বিক্রি করে সহপাঠীদের কাছে।

এতে বাদ সাধে স্বয়ং স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের মাঠে কোনো দোকান চলবে না। এমনকি তার দোকানটি বন্ধ করার জন্য হুমকি পর্যন্ত দেন প্রধান শিক্ষক। বন্ধ না করলে টমি রোসকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

১৫ বছর বয়সী টমি রোস দোকানটি একা সামলাতে না পেরে আরো দুই সহপাঠীকে রেখেছে সহযোগিতা করার জন্য। এ দুজনকে সে প্রতিদিন ৫.৫ পাউন্ড করে বেতনও দেয়। বেশ ভালোই চলছিল তার দোকানটি।

কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষই তার বিরুদ্ধে কালোবাজারির অভিযোগ আনে। শিক্ষকরা জানান, তারা স্কুলের ছাত্রদের জন্য খাবারের মানের বিষয়ে কড়াকড়ি নীতি মেনে চলেন। তাই টমির ব্যবসাটি বন্ধ করতে হবে।

স্কুলের খেলার মাঠে টমি ব্যবসাটা পেতে বসেছে তিন বছর আগে। এর আগে অন্য একটি স্কুলে পড়তো সে। সেখানেও ব্যবসা পেতে বসায় ১০ দিনের জন্য বহিষ্কার হয়। পরে সেখান থেকে চলে এসে এই স্কুলে ভর্তি হয়েছে।

তার ব্যবসা শুরু করার আইডিয়াটা এসেছে টেলিভিশন শো ‘ড্রাগন ডেন’ এবং ‘দ্যা এপ্রেন্টিস’ দেখে।  টমি প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ পাউন্ড উপার্জন করে।

টমি জানায়, বড় হয়ে অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসার ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে চায় সে। সে জন্য তাকে পড়ালেখার পাশাপাশি ব্যবসাও চালিয়ে যেতে হবে। এ ধরনের  স্বপ্ন থাকলেও পড়ালেখার খরচ চালানোর মতো যথেস্ট সামর্থ্য নেই তার বাবা-মা’র। বাবা গ্যারি (৩৩) একজন অফিস কর্মী আর মা ট্র্যাসি (৩৩) একজন জিম কর্মী।

বাবা ও মা দুজনই ছেলেকে নিয়ে বেশ গর্ব করেন। বাবা গ্যারি জানান, সন্তানের জীবনের লক্ষ্য দেখে তারা মুগ্ধ। এখন থেকেই ছেলেটা কঠোর পরিশ্রম করে বড় হয়ে উঠছে, এটাও তার ভালো লক্ষণ।
 
তিনি বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম তার ব্যবসাটি বন্ধ করে দেব। কিন্তু পরে দেখলাম, সে বুদ্ধিমানের মতো সঠিক কাজটিই করছে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের টমির ব্যবসাটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত সতিই লজ্জাজনক।

এদিকে বেঁকে বসলেন প্রধান শিক্ষক জ্যামস ইনম্যান। তিনি বলেন, আমরা এখানে ছাত্র ভর্তি করি পড়ালেখার জন্য। কালোবাজারির জায়গা নয় স্কুল। খাবারের ব্যাপারে কড়াকড়ি নীতি মেনে চলি আমরা। সূত্র : মিরর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে