এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ফুলের বনে যার পাশে যায় তারেই লাগে ভালো। রবীন্দ্রনাথ পূর্ণিমা রাতে যতই খুশিমনে এমন কথা বলুন না কেন, সব ফুল কিন্তু ভালো লাগার পরশ বোলায় না। ধুতুরা-হেমলকও ফুল। তাই বলে তাদের কদর তো গোলাপ-রজনীগন্ধার মতো নয়। ফুলের চেয়ে বরং বিষাক্ত উদ্ভিদ হিসেবেই এগুলো বেশি পরিচিত। এ তো গেল দু-একটা গাছের কথা। ভাবুন তো, একবার যদি পুরো বাগানভর্তি থাকে এমন সব গাছপালায় তবে কেমন হবে?
বেশি চিন্তার দরকার নেই। চাইলেই আপনি ঘুরে আসতে পারেন এমন বাগান থেকে। ঠিক এমনই এক বাগান রয়েছে ইংল্যান্ডে। নর্থ অ্যাম্বারল্যান্ডের অ্যালানউইক দুর্গ ভরিয়ে রাখা হয়েছে বিশ্বের সব ভয়ঙ্কর গাছগাছালিতে। নাগরিক ক্লান্তি এড়াতে আপনি সেখানে বেড়াতে গেলেও কিন্তু ভয় আপনার পিছু ছাড়বে না। কারণ, অসাবধানতাবশত যদি কোনো গাছ স্পর্শ করেন বা ঘ্রাণ নেন, তবেই মরেছেন। বিষয়টির ভয়াবহতা বোঝাতেই এ দুর্গের মূল ফটকে লাগানো রয়েছে বিপদ সংকেত। সঙ্গে লিখিতভাবে দর্শনার্থীদের সতর্কও করা হয়েছে। শিশুদের নিয়ে গেলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে বাবা-মাকে। বুঝতেই পারছেন, নির্দেশ না মানলে যে শুধু মালীর বকা খাবেন, এমন নয়। জীবন দিয়েও এর মাশুল দিতে হতে পারে।
তাই বলে আবার বাগানটির জনপ্রিয়তা নিয়ে সন্দেহ করবেন না। ভিন্ন বৈশিষ্ট্যই একে দিয়েছে পরিচিতি। প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভিড় করেন এর ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য দেখতে। সচরাচর ইংলিশ বাগানগুলো যে ধাঁচের হয়, এ বিষবৃক্ষের বাগান মোটেও তেমন নয়। ২০০৫ সালে গড়ে তোলা এ বাগানে স্থান পেয়েছে ইতিহাসখ্যাত শতাধিক প্রাণঘাতী গাছপালা। তা ছাড়া মানবদেহে নানা রোগব্যাধিও সৃষ্টি করে এগুলো। এমনকি খুনের হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছে এদের।
বাগানে থাকা ট্রাম্পেট আকৃতির ব্রুগমেনশিয়া ফুল সম্পর্কে একবার এক ডাচেস বলেছিলেন, আপনাকে মেরে ফেলার আগে এটি প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির মতো মোহিত করবে। এ জন্যই ভিক্টোরিয়ান যুগের নারীরা চায়ের সঙ্গে এর পরাগরেণু মিশিয়ে খেতেন। কম পরিমাণে হলে এটি এলএসডির মতো কাজ করে। তবে মাপে হেরফের হলেই বরণ করতে হবে বীভৎস মৃত্যু। ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে মুখ দিয়ে ফেনা তুলে তবেই মারা যাবে আক্রান্ত ব্যক্তি।
এত সতর্কতার পরও দুর্ঘটনা যে একেবারেই ঘটে না, তা কিন্তু নয়। দীর্ঘক্ষণ বাগানে ঘোরাঘুরি করে শ্বাস নেওয়ার কারণে দেহে বিষাক্ত বাতাস ঢুকে অনেকেই ঝিমিয়ে পড়েন। তা ছাড়া প্রতিবছরই গাছপালা ছাঁটাইয়ের সময় কর্মীরা জ্ঞান হারান। আর কাটা ডালপালা ভাগাড়ে ফেলতে নিয়ে যাওয়ার পথে তো একশ্রেণীর লরেল ফুলের গন্ধে ট্রাকচালকরা মাঝপথেই ঘুমিয়ে পড়েন।-অল দ্যাট ইজ ইন্টারেস্টিং ডটকম