বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০১:৪২:২৩

মরার জন্য সংগঠন!

মরার জন্য সংগঠন!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বাঁচার জন্য কত চেষ্টাই না করে মানুষ। জীবনের অর্জিত সবকিছুর বিনিময়ে হলেও বাঁচতে চায় মানুষ। সুন্দর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে যেতে চায় কেউ? কিন্তু একদিন তো সবাইকে সেই মায়া ত্যাগ করে চলে যেতে হবে না ফেরার দেশে। যেখানে থাকতে হবে অনন্তকাল। তবে নিজের ইচ্ছায় এ দুনিয়া ছেড়ে সহজে কেউ যেতে চায় না।

নিজের ইচ্ছায় মরার আকুতি জানিয়েছে কেউ এমন কথা শোনা না গেলেও ঘটছে তা-ই। মরার জন্য লড়ছে মানুষ। বাঁচার লড়াইয়ের চেয়ে অনেক কঠিন সে লড়াই৷

একটা মানুষ জেনে গেছে তার ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু অনিবার্য এবং অচিরেই আসবে ওপারের ডাক৷ এ পৃথিবীকে, প্রিয় পরিজনকে তিনিও ভালোবাসেন৷ ভালোবাসার এ বন্ধন ছিন্ন হবে৷ তার আগে যন্ত্রণা টেনে টেনে নেবে মৃত্যুর দিকে।

স্বজনরা আছেন পাশে৷ ডাক্তার আছে৷ রোগীও আছেন৷ কিন্তু রোগী বাঁচতে চান না৷ ডাক্তারও তাকে বাঁচাতে চান না৷ রোগী যে ইচ্ছামৃত্যু বরণের অপেক্ষায়! বিশেষ পরিস্থিতিতে কোথাও কোথাও নিজের ইচ্ছায় মরতে পারাটাও মানবাধিকার৷

নিজের ইচ্ছায় মৃত্যু হলেও সাধারণভাবে আমরা যাকে ‘আত্মহত্যা' বলি, ঠিক সেরকম নয় বলে ইচ্ছামৃত্যুর একেক দেশে একেক নাম৷

যুক্তরাষ্ট্রে এর নাম হয়েছে ‘ডেথ উইথ ডিগনিটি'৷ যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র পাঁচটি রাজ্যেই শুধু দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে মৃত্যুকে বরণ করে নিতে পারেন৷

ইচ্ছামৃত্যু বরণ করতে ইচ্ছুকদের আন্তর্জাতিক সংগঠনও রয়েছে, নাম ‘ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অফ রাইট টু ডাই সোসাইটিজ'৷শুনলে অবাক লাগে৷

ওই যন্ত্রণা থেকে বাঁচতেই মৃত্যুকে তাড়াতাড়ি কাছে টেনে নেয়া৷ যিনি নেবেন, তিনি জানবেন৷ তার মা-বাবা জানবেন, সন্তান তাদের ছেড়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছায়৷অন্যরাও জানবেন৷

অনিচ্ছায় হলেও ইচ্ছামৃত্যুতে সায়ও দিতে হবে সবাইকে৷ একটি জীবনের ‘কাউন্টডাউন' একযোগে চলতে থাকবে সবার মনে৷ সাধারণ আইন এখানে অসহায়৷ মানবাধিকারের সাধারণ নিয়মনীতি অকেজো৷ চিকিৎসা বিজ্ঞান যেখানে বলছে, রোগীর আর বাঁচার আশা নেই, রোগী নিজেও যেখানে মৃত্যুকেই খুঁজছেন!

ব্রিটানি মেনার্ডকে ফেরানো যায়নি (উপরে ছবি)৷ মস্তিষ্কের ক্যানসার বাকশক্তি প্রায় কেড়ে নিয়েছিল তার৷ ধীরে ধীরে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও যেত৷ তাকেও যেতেই হতো৷

জীবন কখনো কখনো মূল্যহীন বোঝা হয়ে ওঠে৷ ক্যানসার জীবনের সব হাসি কেড়ে সেদিকেই নিচ্ছিল৷ তাই মাত্র ২৯ বছর বয়সেই তারও মনে হয়েছে, ‘মরণ রে, তুঁহুঁ মম শ্যামসমান'৷

ওরিয়নের আইন তাকে দিয়েছে মৃত্যুকে স্বাগত জানানোর অধিকার, ডাক্তারকে দিয়েছে মৃত্যু ত্বরান্বিত করতে সহায়তার অধিকার৷ স্থানভেদে, বিশেষ পরিস্থিতিতে এ-ও ‘মানবাধিকার'৷
গোপনে আত্মহত্যা নয়, সবাইকে জানিয়ে ডাক্তারের সহায়তায় নিজের জীবনের যবানিকা। সূত্র : ডয়চে ভেলে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে