এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ছত্রাক জাতীয় উপাদান মাইসেলিয়াম দিয়ে বানানো হয়েছে ড্রোন। পরীক্ষামূলক ভাবে এই জৈব ড্রোন বানানোর কাজে সফল হয়েছেন এক দল বিজ্ঞানী। চলতি মাসের গোড়ার দিকে এমন ড্রোনটি প্রথমবারের মতো আকাশেও উড়েছে। বোস্টনে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারিং মেশিন সংক্রান্ত প্রতিযোগিতায় আকাশে উড়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এ ড্রোন।
দুর্গম এবং দূরাগত এলাকায় অনুসন্ধান চালানোয় ড্রোনের জুড়ি নেই। এ কথা আমরা সবাই কমবেশি জানি। সামরিকসহ নানা প্রয়োজনে এমন অনুসন্ধান চালানোর অনিবার্য হয়ে দেখা দেয়। কিন্তু মুশকিল হলো, অনুসন্ধান চালাতে যেয়ে ড্রোনটি ভেঙ্গে পড়তে পারে। এটি কেবল স্পর্শকাতর পরিবেশকেই নষ্ট করবে না বরং গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর বিষয়টি ধরা পড়ে যাবে। জৈব ড্রোন ব্যবহারে এমন পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পার।
এ জাতীয় ড্রোন যখন বিধ্বস্ত হবে তখন কোনো যন্ত্রাংশ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বরং আঠালো এবং সাদামাটা অল্প খানিকটা পদার্থ পড়ে থাকবে। ওটা যে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ তা বোঝার কোনো উপায়ই থাকবে না।
চিনির পানি ছলকে পড়েছে নাকি একটি চালকহীন বিমান ধ্বংস হয়ে এমনটা ঘটেছে তা জানার কোনো উপায়ই আর থাকবে না। এ কথা বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অ্যামেস রিসার্চ সেন্টারের লিন রথচাইল্ড। জৈব ড্রোন নির্মাণে যে সব গবেষক দল কাজ করেছেন তাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন রথচাইল্ড।
অবশ্য, ড্রোনটির সবকিছু জৈব উপাদান দিয়ে তৈরি করা সম্ভব হয়নি। বোস্টনে যে ড্রোনটি উড়েছিল তার চারটি পাখা এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রচলিত ড্রোন থেকে ধার করা হয়েছিল। এ ছাড়া এ ড্রোনে প্রচলিত ব্যাটারিই লাগানো হয়েছিল। এদিকে ড্রোনে ব্যবহৃত সেন্সরগুলো তৈরির জন্য এরই মধ্যে ই.কোলি ব্যাকটেরিয়াকে নানা সমীক্ষা চলছে।
এ ছাড়া, ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি উপাদান দিয়ে হয়েছে এ ড্রোনের ‘ত্বক’ বা দেহাবরণ। আর এর ওপর লাগানো হয়েছে বোলতার লালা থেকে তৈরি উপাদান । বাসাকে পানিরোধক করার জন্য লালা থেকে তৈরি এ উপাদান ব্যবহার করে এ জাতীয় বোলতা। ইংরেজিতে এ জাতীয় বোলতাকে পেপার ওয়াসপ বলা হয়। এ ছাড়া, ড্রোনের সার্কিটগুলো ছাপানো হয়েছে রূপার তৈরি ন্যানো কণিকা দিয়ে। ড্রোনকে যথাসাধ্য পচনশীল বানানোর জন্যেই এ সব করা হয়েছে।
অবশ্য, এমন অভিযানের যাওয়ার পথে জৈব ড্রোন অকালে পচে আকাশ থেকে পড়ে যেতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। এ বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সতর্ক হতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।