এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বাংলাদেশ বিমান বন্দরে যাত্রীদের লাগেজ চুরি করে কোটিপতি বনে গেছেন জয়নাল আবেদীন নামে বিমানের ক্যাটারিং শাখার এক সামান্য কর্মচারী। অভিনবভাবে তিনি এ চুরি করতেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী।
অভিযোগে একাধিকবার গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে তিনি ফিরে যান পুরনো পেশায়। সম্প্রতি শেষবার গ্রেফতারের পর ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল জানান চুরির কলাকৌশল। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৬ অক্টোবর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলাটি ডিবিতে এলে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জয়নাল জানান, তিনি মূলত দুটি কৌশলে লাগেজ চুরি করেন। এর মধ্যে একটি হলো লাগেজ স্লিপ পরিবর্তন। এ কৌশলের অংশ হিসেবে তিনি ভারত বা পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে বেড়াতে যান। সেখান থেকে ঢাউস আকারের লাগেজ নিয়ে বিমানে দেশে ফেরেন। নিয়ম অনুযায়ী, যাত্রীর লাগেজে ক্রম নম্বর সংবলিত একটি স্লিপ সেঁটে দেয়া হয়।
একই স্লিপের আরেকটি অংশ দেয়া হয় যাত্রীকে। দ্বিতীয় অংশটি তার লাগেজের মালিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। জয়নাল বিমান থেকে নেমে দ্রুত কনভেয়ার বেল্টের পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে টার্গেট করেন কোন লাগেজে মূল্যবান জিনিসপত্র রয়েছে। এরপর নিজের লাগেজের গায়ে থাকা স্লিপ খুলে নিয়ে টার্গেটে থাকা লাগেজের গায়ে লাগিয়ে দেন।
এ সময় দ্বিতীয় লাগেজের আসল স্লিপটিও তিনি নষ্ট কওে ফেলেন। ফলে বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল হয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় পরীক্ষা করা হলেও তা ধরা পড়ে না। তিনি লাগেজ ও তার হাতে থাকা একই ক্রমের স্লিপ সংশ্লিষ্টদেও দেখিয়ে বেরিয়ে আসেন।
ডিবির এ কর্মকর্তা জানান, জয়নালের অপর কৌশলটি হলো, তিনি বিভিন্ন যাত্রীর ভুয়া নাম-ঠিকানা, পাসপোর্ট ও বিমানের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড শাখার জাল রসিদ তৈরি করে এ শাখার গুদামে গিয়ে ওইসব কাগজপত্র দেখিয়ে যাত্রীদের লাগেজ নিয়ে চলে যান।
এ সময় তিনি সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি করেন, ওই যাত্রীরা তাকে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন। পরে প্রকৃত যাত্রী লাগেজ খুঁজতে গিয়ে দেখেন তা আগেই কেউ নিয়ে গেছে। রিমান্ড শেষে জয়নালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।