এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আমরা কথায় কথায় বলি যে আমাদের দেশ বাংলাদেশ আয়তনে ছোট কিন্তু একবার চিন্তা করে দেখুন টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া যদি আপনি গাড়িতেও যান তবে আপনার সময় লাগবে ৩০-৩২ ঘন্টা। তবে পৃথিবীতে এমন একটি দেশ আছে যার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে লাগে মাত্র পাঁচ মিনিটেরও কম সময়। গোটা দেশে জনসংখ্যা বলতে মাত্র চার জন। আজব এই দেশটির নাম সিল্যান্ড। আজও এই দেশটিকে কেউ স্বীকৃতি না দিলেও বিরোধীতা করেনি কেউ। কারণ একটি দেশের সকল মৌলিক উপাদান রয়েছে সেখানে।
এক দেশে ছিলো এক রাজা আর এক রানী। আর তাদের ছিলো এক রাজপুত্র। রূপ কথায় অজস্রবার শোনা এই গল্পের শুরুটা যেন সত্য হয়ে গেছে। রূপ কথার সেই দেশটির নাম সিল্যান্ড। প্রজাহীন এই দেশটির আয়োতন সর্বসাকুল্যে ৫’শ ৫০ স্কয়ার মিটার।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বৃটিশরা তাদের বানানো এই দুর্গ পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে বৃটিশ মেজর পাদ্র রয় বেইটস এই জায়গার প্রেমে পড়ে যান। ১৯৬৭ সালে ২ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী জোয়ানকে নিয়ে আসেন। আর তারা আদিম নর-নারী অ্যাডাম-ইভের মতো হয়ে ওঠেন। জন্ম নেয় ছেলে মিসেল আর মেয়ে পেনোলো।
উত্তর ইংল্যান্ড সাগরের উপকূল থেকে মাত্র ১০ কি.মি. ভেতরে গেলে চোখে পড়বে স্বগর্ভে উড়তে থাকা সিল্যান্ডের পতাকা। ঠিক যেনো আটকে যাওয়া কোনো যুদ্ধ জাহাজ অথবা নৌবহরের কোনো ধ্বংসাবশেষ। ছোট্ট এই দেশের রাজধানীর নাম এইচএম ফোর্টরা। মাতৃভাষা ইংরেজি হলেও দেশটিতে আছে নিজেদের মুদ্রা, পাসপোর্ট, পোস্টাল সার্ভিস এমন কি জাতীয় সংগীত। সিল্যান্ড পৃথিবীর এক মাত্র রাষ্ট্র যা কখনো মাটি স্পর্শ করেনি। সাগরগর্ভে বিশাল দুটি স্টিলের পাইপের উপর দাঁড়িয়ে আছে ধাতব ভূমির এই দেশ।
গোটা দেশে একটি মাত্র কামরা আর সেটিই নাকি রাজপ্রাসাদ। তবে রাজ্যে নয় নিজের মতো বেঁচে থাকটাই বড় মনে করেন ইচ্ছে স্বাধীন রাজপরিবার। এমনটিই জানালেন দেশটির রাজা মেজর রয় বেইটস, দেশটা যেমনই হোক নিজের মতে করে বেঁচে থাকাটাই বড়। প্রতিকূলতা আছে তবে মেনে নিতে হচ্ছে।
আর রানী ইভ জোয়ান বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশই আমাদের স্বীকৃতি দেয়নি। তাই বলে বিরোধীতাও করেনি। একটি দেশের সবকিছুই এখানে আছে।
২০০৬ সালে ২৩ জুন সিল্যান্ডে একবার আগুন ধরে । খবর পেয়ে ইংল্যান্ডের উদ্ধাকারি হেলিকপ্টার এই রাজপরিবারকে উদ্ধার করে। তবে এর পরের বছর রয় বেইটস আবারো তার রাজ্য ফিরে পান। -৭১ টিভি