একদিনের প্রেমেই রাজরানী
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সাড়া জাগানো কয়েকটি রাজকীয় বিয়ে হয়েছে। তবে একদিনের প্রেমে রাজরানী হয়েছে কেউ জানা না থাকলেও ঘটেছে তা-ই।
অবশ্য সাড়া জাগানো বিয়েগুলো নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনার ঝড় ওঠে। ২০১১ সালের এপ্রিলে প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটনের বিয়ে বেশ সাড়া জাগিয়েছে।
জুলাইয়ে মোনাকোর প্রিন্স আলবার্ট বিয়ে করেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাঁতারু চারলেন উইটস্টোককে। এই দুই সুখী দম্পতির ছবি সব মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। অন্য আরেকটি রাজকীয় বিয়ে অক্টোবরে হয়েছিল এশিয়ায়।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক বিয়ে করেন তার পছন্দের জেটসান পেমাকে। সেই কাহিনীই বলা হচ্ছে এখানে।
ভুটানের সবচেয়ে আনন্দদায়ক রাজকীয় ঘটনা,
একবার ৭ বছরের ছোট্ট এক বালিকা ১৭ বছরের এক কিশোরকে দেখে বলে, প্লিজ, আমাকে নিয়ে চল না। কিশোরটির নাম জিগমে।
ছোট্ট জেটসানকে কিশোরটি জবাব দিল, তুমি যখন বড় হবে তখন। আমি যদি একা থাকি এবং বিয়ে না করি তোমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করব।
১৪ বছর পর জেটসান অপূর্ব সুন্দরী, আত্মবিশ্বাসী নারীতে পরিণত হলেন। আর জিগমে হলেন ভুটানের রাজা। ২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর তিনি জেটসানকে তার রানী করে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন।
বিয়ের অনুষ্ঠানটি হয় পুনাখা জংয়ে। ১৬৩৭ সালে ফো চু ও মো চু নদীর সঙ্গমস্থলে এটি নির্মিত হয়। ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত এটা রাজপ্রাসাদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখন এটা ভুটানের বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের শীতকালীন আবাস। এটি রাজকীয় বিয়ে ও অভিষেক অনুষ্ঠানেরও ঐতিহ্যবাহী স্থান।
স্বর্ণখঁচিত পোশাক ও বর্ণিত সাজে রাজা এসে পৌঁছলেন বর। কয়েক মিনিট পর কনে আত্মপ্রকাশ করলেন। রিসিপশন পার্টি তাকে স্বাগত জানাল। রাজা ও রাজবধূ শুদ্ধকরণ অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ বেদিতে উপস্থিত হলেন। সেখানে চতুর্থ রাজা সিনগে ওয়ানচুক ও তার রানী জে খেনপো তাদের আশীর্বাদ করেন।
এরপর আনুষ্ঠানিকতা সারতে মন্দিরে যান নতুন জুটি। জাতীয় টেলিভিশনে সেটা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। রাজার পিতা জেটসানকে পাঁচটি পবিত্র স্কার্ফ দেন। তিনি তখন অনন্ত জীবনের অমৃতভর্তি সোনালি পানপাত্র নিয়ে রাজার সিংহাসনের দিকে যান। দু’জনে সেটা কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখেন এবং তারপর রাজা তা পান করেন।
রাজকীয় জ্যোতির্বিদরা এ সময়টাকেই সবচেয়ে শুভমুহূর্ত মনে করেছিলেন। সময় তখন ৮টা ২০ মিনিট। মুকুট পরিহিত রাজা তার সোনালি সিংহাসন থেকে নেমে বিশাল এক বৌদ্ধমূর্তির সামনে দাঁড়ানো রাজবধূর মাথায় একটি সিল্কের ব্রোকেড মুকুট পরিয়ে দেন। নতুন রানী হিসেবে তিনি যখন রাজার পাশে বসছিলেন, তখন সন্ন্যাসীরা জয়ধ্বনি দিচ্ছিল।
তারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করিতে লাগল। বিয়ে অনুষ্ঠানের পর এক সাংবাদিক রাজাকে জিজ্ঞেস করলেন, বিয়ের অনুভূতিটা তার কেমন লাগছে। রাজার সোজা জবাব, দারুণ, নিজেও করে দেখ না তুমি!
একদিনের দেখা মেয়েটির প্রেমে পড়ল কিশোর। অতঃপর বিয়ে। সত্যিই রূপকথা গল্পের মতো।
২৩ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম/এফএম