বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:১৫:০৩

শিউলি স্নিগ্ধ শারদে পুজার সাজ

শিউলি স্নিগ্ধ শারদে পুজার সাজ

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : 'যেমন আছো তেমনি এসো, আর কোরো না সাজ'

এখন বুঝি রবিঠাকুরের ধারণা কিছুটা হলেও অচল। সাজের প্রয়োজন স্বীকার করে সবাই। বিশেষ করে উৎসবে। সুন্দর সাজে অর্থাৎ নিখুঁত সাজ, পরিচ্ছন্ন পরিপাটি পোশাক উৎসবের সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ও স্বকীয়তাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য জরুরী।
সপ্তমী, নবমী, দশমী এই চার দিন কি শাড়ি বা পোশাক পরবেন তা ঠিক করা বা কেনা হয়ে গেছে নিশ্চয়ই, সেই সঙ্গে আনুষঙ্গীও। তবুও আর একবার পোশাক ও গহনার বঙ্ ও প্রসাধন বঙ্টা বের করে দেখে নিন। কোন কিছু বাদ পড়েছে কি না। কারণ পুজোর মধ্যে সুন্দর করে সেজে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে না ঘুরলে চলে কি?
সাজসজ্জার প্রাথমিক মেকআপ কাজটি সেরে নিন। কি কি করবেন?

প্রাথমিক টিপস

মেকআপের আগে ফেশিয়াল করতে পারলে ভাল। সম্ভব না হলে ফেশিয়াল মাঙ্ লাগাতে পারেন। পুজোর কয়েকদিন আগে ফেশিয়াল হেয়ার রিমুভ করে নিন।
ঙ্ স্কিনের ন্যাচারাল টোন বজায় রাখুন। মেকআপের বেস ভাল করে করম্নন।
ঙ্ নিজের মুখের সবচেয়ে সুন্দর অংশটি হাইলাইট করম্নন। আইলাইনার ও মাসকারা অন্যভাবে ব্যবহার করে চোখের অন্যরকম শেপ দিতে পারেন। বস্নাশার দিয়ে চিকবোন হাইলাইট করতে পারেন।

মেকআপে বেস্নন্ডিং জরম্নরী। ত্বকের যে অংশে কালার লাগাচ্ছেন সেই অংশের ভাঁজ, রেখার সঙ্গে কালার যেন ভালভাবে মিশে যায়। একই সঙ্গে মেকআপ ন্যাচারাল ও ড্রামাটিক হবে। পুজোর সময়ে সাজগোজ হবে বিভিন্ন দিনে ভিন্ন সাজ।

সপ্তমী (দিনে)
দিনের সাজ হবে নমনীয়। ঢাকারে আওয়াজ, মাইকের গান, ধূপধূনোর গন্ধ_সব কিছুর সঙ্গে শাড়ি খুব ভাল যায়। সকালে সাউথ কটন, জামদানি বা টাঙ্গাইল বুটিদার তাঁতের শাড়ির সঙ্গে মানানসই বস্নাউজ পরম্নন। টিনএজার হলে যে কোন পোশাকই মানিয়ে যায়। ওই বয়সটাই ওই রকম।

মেকআপ : মুখে ময়েশ্চারাইজার, অ্যাসট্রিনজেন্ট ও সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। পুজোর দিন বলে সূর্যদেব কিন্তু ছুটি নেননি। ওর রশ্মির তেজ এখনও প্রখর। এরপর সামান্য কম্প্যাকট পাউডারের প্রলেপ, চোখে ত্বক রঙা শ্যাডোর ওপর শাড়ি বা অন্য কোন পোশাকের (যা পারবেন) সঙ্গে মানাইসই রঙের শ্যাডো ব্যবহার করম্নন। ভ্রূ বরাবর বুলিয়ে দিন আইব্রাও পেনসিল খুব আলতো করে। ঠোঁটে লিপস্টিক ও হাতে নেল পলিশ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে। কপালে টিপ।

দিনের সাজে পুঁতি বা যে কোন ইমিটেশন জুয়েলারি ভাল লাগবে। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে পরম্নন হাত ভর্তি রেশমি চুড়ি, কানের ঝোলানো দুল, গলায় মালা। কুর্তার সঙ্গেও এসব চলে। এছাড়া হাল্কা গহনাও পরতে পারেন।

পায়ে চপ্পল, হাতে ছোট বটুয়া, আবশ্যই পোশাকের সঙ্গে মিশিয়ে। শরীরে অডিকোলন স্প্রে করে নিন। চুল শ্যাম্পু করে খোলা রাখুন। ক্লিপ দিয়ে আটকিয়ে দিন গোলাপ কুঁড়ি।

রাতের সাজ হবে একটু জমকালো। তসর বা সিল্ক। সঙ্গে টিসু্য বা ব্রোকেডের বস্নাউজ। রাতে একটু ভারি গয়না পরতে পারেন। পোশাক সবার ব্যক্তিরম্নচির ওপর নির্ভর করে। জোর করে বয়স কমাবেন না।

মেকআপ : একসঙ্গে চোখ, ঠোঁট ও চিকজ_একসঙ্গে হাইলাইট করবে না। হাল্কা ব্রাউন বস্নাশার লাগিয়ে চিকজ হাইলাইট ডার্কার টোনের বস্নাশার লাগান। শুষ্ক ত্বকে ক্রিম বস্নাশার ভাল। তৈলাক্ত ত্বকে আবার পাউডার বস্নাশার উপযুক্ত। পাউডার বস্নাশার লাগানোর জন্য রাউন্ড ব্রাশ ব্যবহার করম্নন।
আর একটি কাজ করতে পারেন_নীল গোত্রের শাড়ি পরলে আইলাইনারের বদলে শ্যাডো হবে ওশানিক হিউজের বস্নু। শাড়িতে গোলাপি ছোঁয়া থাকলে পিংক এন পার্পেলের পিংকও ব্যবহার করতে পারেন। সবুজ শাড়ির সঙ্গে মানাবে পিচ এন গ্রিনের সবুক শ্যাডো। ভারি গয়না পরতে পারেন।

পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে জুতো, ব্যাগ নিন। কপালে বড় টিপ। ঠোঁটে ও নখে গাঢ় নেলপলিশ ও ডার্ক লিপস্টিক। সাজগোজের সঙ্গে চুলের বিন্যাসে রয়েছে গভীর সম্পর্ক। বিশেষ করে শাড়ির সঙ্গে খোঁপার মেল বন্ধনে সাজে আনে অন্যমাত্রা। ছোট চুল হলেও কৃত্রিম খোঁপা লাগাতে পারেন। খোঁপায় তাজা ফুলের মালা দিন। যদি ছোট চুল খোলা রাখেন তাহলে একটি তাজা ফুলের ছোট মালা ক্লিপ দিয়ে আটকিয়ে দিন।

অষ্টমী

মহা অষ্টমীর দিন ও রাতে চাই অভিনব সাজ। বিশেষ করে অন্ধলীর সময়ে।
দামি শাড়ি অর্থাৎ বালুচরী, কাথান, ঢাকাই, বেনারসি বেছে নিতে পারেন। এর সঙ্গে ভারি গয়না ও প্রসাধনও হওয়া চাই নিখুঁত মেকআপ : প্রথমেই মুখ ক্লেনজিং দিয়ে পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। রাতে সানস্ক্রিন নিষ্প্রয়োজন। মুখে লাগাতে পারেন লিকু্যইড মেকআপ। অবশ্যই মুখের সঙ্গে শেড মিলিয়ে। লাগানোর সময় নজর দিন গলা ও কানের দিকও। গালের ঠিক উপরিভাগে বুলিয়ে দিন বস্নাশার। সেটাও ত্বক ও সাজের সঙ্গে মিলিয়ে। চোখে আইলাইনার-ব্রাউন আইশ্যাডো বা পিংক অথবা সেভি। সেই সঙ্গে মাসকারা। ঠোঁটে ম্যাচিং লিপস্টিক-কপালে বড় টিপ। চুলের বিন্যাস সপ্তমীর মতোই।

নবমী
মহা অষ্টমীর মতো হবে জমকালো সাজ (দিনে ও রাতে)। জমকালো সাজের সঙ্গে পরম্নন জমকালো গয়না। হতে পারে তা সোনা অথবা ইমিটেশন।

দশমী
দশমী অর্থাৎ বিজয়া। আর বিজয়া মানে সিঁদুরের খেলা, বিজয়া মানে মিষ্টি মুখ, বিজয়া মানে ঐতিহ্যবাহী সাজ। ঐতিহ্যবাহী সাজের সঙ্গে পরম্নন জমকালো গয়না। গলায় তিন লহরী হার, কানে লম্বা দুল অথবা বড় কান পাশা বা কানবালা। হাতভারি সোনার চুড়ি বা কঙ্কন, বাজুবন্ধ ও পায়ে পায়েল।
এই সাজের প্রধান অঙ্গ কপালে বড় সিঁদুরের টিপ, সিঁথিতে চওড়া সিঁদুরের রেখা। ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, গালে তারই প্রতিচ্ছবি বস্নাশারের দৌলতে। জুতো-ব্যাগ সাজের সঙ্গে মিলিয়ে। চুল খোলা রাখুন। এলো চুলে এই সাজ ভাল লাগবে।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে