এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : জার্মানির বার্লিনে একই ছাদের নিচে নির্মিত হচ্ছে মসজিদ, গির্জা ও সিনেগগ। স্থাপনাটির নাম রাখা হয়েছে হাউজ অব ওয়ান। ধর্মীয় দ্বন্দ্ব নিরসনে এই স্থাপনাটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
মুসলিম, খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের মধ্যে একতা আনার উদ্দেশ্যে অভিনব এ ধারণাটি প্রস্তাব করেন রেভারেন্ড গ্রেগর হোবার্গ নামের এক প্রোটেস্ট্যান্ট এ ধর্মযাজক। ৪৬ বছর বয়সী এই যাজকের বিশ্বাস এ পদক্ষেপটি প্রতিধ্বনিত হবে সারা পৃথিবী জুড়ে।
মার্টিন লুথার কিং জুনিয়য়ের শিক্ষা থেকে এ ধারণাটি নিয়েছেন গ্রেগর। যে স্থানটিতে নতুন এ উপাসনালয় নির্মিত হচ্ছে সেখানে প্রতিকী ইট হাতে নিয়ে একসঙ্গে দেখা যায় তিন ধর্মের তিনজন বিজ্ঞব্যক্তিকে। যাদের মধ্যে আছেন রেভারেন্ড গ্রেগর হোবার্গ, র্যাবাই তোভিয়া বেন-চোরিন ও ইমাম কাদির সানচি।
বার্লিনের কর্মকর্তাদের অনুমোদনের পর প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বেছে নেয়া হয় একটি নকশা। নির্মাণকাজের জন্য তহবিল গঠনে চলছে প্রচারণা। আয়োজকদের প্রত্যাশা দুই বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
বার্লিনের ‘হাউজ অব ওয়ান’ সম্ভাবনার অগ্রগতি হলেও, অভিনব এ প্রকল্প ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রতিবন্ধকার সম্মুখীন হয়েছে। সবগুলো ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেই এ প্রকল্পটি উল্লেখযোগ্য মানবিক সমর্থন অর্জন করতে সমর্থ হয়েছে। পক্ষান্তরে রয়েছে সমালোচনাও।
বার্লিনের তুর্কি মুসলিম জনসংখ্যার অনেকে প্রগতিশীল ওই ইমামের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অন্য ধর্মের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি কোরআন লঙ্ঘন করেছেন বলে তাদের অভিযোগ। শহরের অন্য মুসলিমরা এদিকে ‘ফোরাম ফর ইন্টারকালচারাল ডায়ালগ’-এর সঙ্গে ইমামের সংশ্লিষ্টতার কারণে সন্দেহ পোষণ করেছেন। কেননা ওই ফোরামের অনারারি চেয়ারম্যান হলেন ফেতুল্লাহ গুলেন- যিনি ভিন্ন মতাবলম্বী একজন তুর্কি ধর্মীয় নেতা।
বার্লিনের খ্রিষ্টান ও ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যেও আপত্তি রয়েছে। এর মধ্যে অনেকের দাবি, যে নকশাটি বাছাই করা হয়েছে সেটা বেশি দেখতে মসজিদের মতো। সম্ভবত সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, চূড়ান্ত ধর্মনিরপেক্ষ ইউরোপের এ শহরটিতে মানুষের ধর্ম-অনীহা জয় করা। এ শহরের বেশির ভাগ বাসিন্দা বর্তমানে কোন ধর্মের অনুসারী নয়। সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/