এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মনে আছে কি মাত্র একজন স্কুল ছাত্রীর জন্য জাপানের একটি রেল স্টেশন সচল রাখা হয়েছিল। আর গতবছর সে খবর বিশ্বে আলোড়নও তুলেছিল। তবে আলোচিত সেই কিউ-শিরাতাকি স্টেশনটি বন্ধ করে দিয়েছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ।
তাহলে সে মেয়েটি স্কুলে যাবে কি করে, ভাবছেন এমনটি নিশ্চয়? মেয়েটি আর স্কুলে যাবে না। কারণ, সেই মেয়েটি স্কুল পাশ করে গেছে তাই এখন সব কিছু গুটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২৫ মার্চ কিউ-শিরাতাকি'র একমাত্র যাত্রী মেয়েটি স্কুল পাশ করে যায়।
স্টেশন থেকে শেষ ট্রেনটিকে বিদায় দিতে বেশ কিছু মানুষের সমাগম হয়। জাঁকজমকপূর্ণ এবং উষ্ণ পরিবেশে প্রেস এবং স্থানীয় জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন। স্টেশন একটি তাবু খাটিয়ে সেখান থেকে পথচারীদের এবং উপস্থিত সকলকে বিনামূল্যে দুধ এবং মিষ্টি বিতরণ করছিলেন।
স্টেশনটি জরাজীর্ণ কাঠের ছাউনির নীচে একটি মাত্র তাপোজ্জ্বল আলোর বাল্ব এবং পড়ার জন্যে একটি কাগজের ব্যানার যাতে লেখা রয়েছে "কিউ-শিরাতাকি স্টেশন, ৬৯ বছর, ধন্যবাদ।" দেয়ালে টাঙানো রয়েছে ট্রেনের সময়সূচী -দিনে চারবার ট্রেন থামছে কিউ-শিরাতাকি স্টেশনে।
আশিকাওয়া'র উদ্দেশ্যে শেষ ট্রেনটি বিকেল ৪টা ৫৩ মিনিটে স্টেশনে এসে থামে। ট্রেনে যাত্রী তেমন নেই কিন্তু তা সত্বেও মনে হচ্ছিলো আশেপাশের এলাকা থেকে মানুষ এদিন ট্রেনে চড়ে ছিলেন শেষবারের মতো ট্রেনটির প্রতি তাদের ভালোবাসা জানাতে।
যাত্রী বেশি না থাকলেও সকলের মনের ভেতর স্টেশনটির জন্যে একটি আলাদা উষ্ণ অনুভূতির একটি ব্যপার রয়ে গেছে। শুধু একাকী এক মেয়ের কারণে নয়, স্টেশনটি সকলের হৃদয়েই একটি বিশেষ স্থান জুড়ে রয়েছে, যা এখন কেবলই স্মৃতি।
যখন স্কুল ছাত্রীর জন্যে স্টেশন চালু থাকার খবর মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়, অনেকেই ভুল করে কিউ-শিরাতাকি'র স্থালে কামি-শিরাতাকি ভেবে বসেন। কেননা এই স্টেশনে ট্রেন দিনে দু'বার থামে।
কামি-শিরাসাকি স্টেশন দু'স্টেশনের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের পথ হিসেবে প্রতিযোগীতায় অবতীর্ণ হতে পারে। এখান থেকে ট্রেন পরের স্টেশনে পৌঁছুতে সময় নেয় ১ ঘন্টা ৮ মিনিট।
এই স্টেশনের ব্যানারে আরো মূল্যবান কথা লেখা রয়েছে "কামি-শিরাসাকি স্টেশন, ৮৪ বছর, চমৎকার কাজ করেছো"। শিমো শিরাসাকি স্টেশনটিও দেখতে আগের দু'টোর মতোই কিন্তু এটি ৮৭ বছরের পুরোনো এবং দিনে দু'বার এখানে ট্রেন থামে। এই স্টেশন গুলো হচ্ছে জাপানের সবচেয়ে দুর্গম ট্রেন স্টেশন।
৩০ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন