এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগের হাত থেকে বাঁচতে মানুষের সতর্কতার কোনো শেষ নেই৷ আক্রান্ত রোগীদের হাজার রকম বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হয়৷
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কম ক্যালরি যুক্ত খাবার, অপেক্ষাকৃত কম সোডিয়াম যুক্ত ফল, কম লবণ, কম তেল এবং বিশেষ করে চিনি মুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি৷ কিন্তু মিষ্টি খেতে কে না ভালোবাসে বলুন তো?
তাই ডায়াবেটিস রোগীর খাবার ‘মিষ্টি’ করতে এতদিন ‘আর্টিফিশিয়াল সুইেটনার' ব্যবহার করার একটা চল ছিল৷ বাংলায় যাকে এক কথায় ‘স্যাকারিন' বলা হতো!
চায়ে, গরম দুধে, এমনকি রান্নাতেও এই কৃত্রিম মিষ্টি উৎপাদক এবং ‘ক্যালরি মুক্ত' সুইটেনার ব্যবহার করতেন অনেকে৷ কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা বহুমূত্র রোগীদের শেষ ভরসাটাকেও যেন ছিনিয়ে নিল৷
ইসরায়েলি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াইজমান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স'-এর দুই গবেষক এরান এলিনাভ এবং এরান সেগাল তাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানিয়েছেন, ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার'-এর নিয়মিত এবং অতিরিক্ত ব্যবহার ডায়াবেটিস টাইপ-২ হওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।
মূলত তিন ধরনের ‘আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার' বাজারে পাওয়া যায় - অ্যাসপারটেম, সুক্রালোস এবং স্যাকারিন (দক্ষিণ এশিয়ায় এটাই সবচেয়ে বেশি প্রচলিত)।
এরান এলিনাভ এবং এরান সেগাল জানান, এগুলো যদি বেশি পরিমাণে নেয়া হয়, তবে শরীরে ‘গ্লুকোজ ইনটলারেন্স' দেখা দেয়, যা পরবর্তীতে ডায়াবেটিসের রূপ ধারণ করে৷
তার ওপর অ্যাসপারটেম নাকি শরীরের ‘হ্যাপি হরমোন' বা সেরোটোনিন-কে নষ্ট করে ফেলে, যা ‘লিবিডো' বা যৌন ইচ্ছাকে কমিয়ে দেয়৷
এলিনাভ এবং সেগাল-এর গবেষণাটি এখনো পর্যন্ত ইঁদুরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও তাদের ধারণা, এটা মানুষের শরীরেও একইভাবে কাজ করবে৷
স্কটল্যান্ডে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনটেগ্রেটিভ ফিসিওলজি'র অধ্যাপক জন মেনজিস অবশ্য বলেন অন্য কথা। তার কথায়, প্রতিটি মানুষের শারীরিক গঠন যেমন আলাদা, তেমনি খাওয়া-দাওয়ার ধরণও আলাদা৷ তাই কে কতটা পরিমাণ সুইটেনার খাচ্ছেন, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে৷
প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত৷ ২০৩০ সাল নাগাদ গোটা বিশ্বে আনুমানিক ৭.৮ শতাংশ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সূত্র : ডয়চে ভেলে
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/