এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : “কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা” এই ধারনা যদি ভয়ঙ্কর ১০টি শহরের ক্ষেত্রে থাকে তাহলে আপনি ভুল করছেন। যেই দেশে নতুন শিল্প, ব্যবসা , নতুন প্রজন্মের জন্ম হয় সেই দেশে খুন খারাবি, ডাকাতি, রোগ বালাই ও হয়। আজকে আমরা যেসব শহরের তালিকা দিব সেসব শহরকে মানুষ বিশৃঙ্খলা এবং মৃত্যুর শহর হিসেবেই চিনে।
চলুন না উঁকি দিয়ে আসি সেই সব ভয়ঙ্কর শহর গুলোতে :
১০। করাচি, পাকিস্তান :
জঙ্গিবাদ , জাতিগত সংঘাত এসব করাচিতে খুব বেশি। ২০১১-১২ তে অনেক হামলা হয়েছে । করাচি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় শহর , সমুদ্র বন্দর, অর্থনৈতিক কেন্দ্রও বটে। ১৪-২১ মিলিয়ন লোকের বাড়ি- ঘর করাচিতে। সুইসাইড বম্বিং, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অতর্কিত বন্ধুক যুদ্ধ পাকিস্তানের এই পুরোনো রাজধানীতে অহরহ হয়। আল জাজিরার এক সমীক্ষায় বিশ্বের ১৩ টি বড় শহরের মধ্যে কোনো দেশে করাচির ২৫% খুনও হয় না ! রাজনৈতিক হত্যা , মোটরবাইক থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের খুনের জন্য করাচি আলাদা ভাবে পপুলার। ৭০০০০- ১০০০০০ পাকিস্তানি রুপি হলেই ভাড়াটে সন্ত্রাসী পাওয়া যায় এখানে।
৯। বেলেম, ব্রাজিল :
ব্রাজিলের বেলেম কলম্বিয়া, বলিভিয়া, পেরু সহ পার্শ্ববর্তী দেশ গুলো থেকে কোকেইন পাচারের সচরাচর রাস্তা। চারপাশে অ্যামাজন জঙ্গল থাকায় ব্রাজিল সহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ড্রাগ স্মাগ্লিং অনেক সহজ । কোকেইন সেবনের মাত্রা এতো বেশি যে শহরটি ভয়ঙ্কর শহরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। ড্রাগেই শেষ নয়, অ্যামাজন রেইনফরেস্ট রক্ষা করতে গিয়ে অনেককে প্রান হারাতে হচ্ছে। রাঘব বোয়ালরা খুনি ভাড়া করে আন্দোলনকারীদের সরাচ্ছে।
বেলেমে ক্রাইম রেটঃ
মানুষহত্যাঃ ১৬৩৯
স্থানীয়ঃ ২,১০০,৩১৯
খুনের হারঃ ৭৮.০৪%
৮। কেপ টাউন, সাউথ আফ্রিকা :
পৃথিবীর অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ কেপ টাউন। দিন দিন ক্রাইম রেট বেড়েই চলেছে শহরটিতে বিশেষ করে রাতের বেলা নারীর জন্য পৃথিবীর অন্যতম অনিরাপদ জায়গা কেপ টাউন। সামাজিক বৈষম্য এধরনের অপরাধের মূল কারন।
৭। নাইরোবি, কেনিয়া :
বেশ কিছু জঙ্গি হামলার সাথে সাথে জঙ্গিবাদ প্রকট হচ্ছে নাইরোবিতে। পশ্চিমাদের সতর্ক করা হয়েছে নিম্ন শ্রেণীর এলাকায় না যাওয়ার জন্য। সেখানে ক্রাইম রেট সেখানকার অনেক বেশি। রাস্তা ঘাটে অপরাধ অহরহ সংঘটিত হয়। আর রাতের বেলা চুরি ছিনতাই প্রতিদিনের ঘটনা।
৬। সানা, ইয়েমেন :
ডিসেম্বরে মারসার কোয়ালিটি অফ লিভিং সার্ভের পর থেকেই ইয়েমেনের রাজধানী সানার জীবনযাত্রার মান দিন দিন নিচে নামছে। সরকার বিরোধিতা জঙ্গিবাদের নতুন দিক তৈরি করে দিচ্ছে। ইউএস ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ব্রিটিশ ফরেইন অফিস তাদের নাগরিগদের ইয়েমেন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। উভয় দেশই কিছু বাণিজ্যিক ফ্লাইট ছাড়া বাকি ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।
৫। কারাকাস, ভেনিজুয়েলা :
ভেনিজুলেয়ার রাজধানী কারাকাস মাদকের স্বর্গ। চুরি এবং ছোট ছোট অপরাধ নিত্য অপরাধ, যার সম্পর্কে পুলিশের বক্তব্য বা নিয়ন্ত্রন খুবই কম।
ক্রাইম রেটঃ
মানুষ হত্যাঃ ৩১৬৪
বাসিন্দাঃ ৩,২০৫,৪৬৩
খুনের হারঃ ৯৮.৭১%
৪। বাগদাদ, ইরাক :
বেশ কয়েক বছর ধরে পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম জায়গার স্থান দখল করার পর মার্কিনী হস্তক্ষেপের মাধ্যমে কিছুটা শান্ত হয়েছিলো বাগদাদ। ইউএস মিলিটারি বাগদাদ থেকে সরানোর পর আবার রাজনৈতিক অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে সেখানে। বছরের পর বছর লাগাতার বোমা হামলায় শহরের অনেক নিদর্শনই ধ্বংস হয়ে গেছে। সুইসাইড বম্বিং , অতর্কিত বন্দুক যুদ্ধ , রাস্তার মধ্যে মাইন পাতা হামলা টাইগ্রাস নদীর তীরের শহরটির জনগনকে অসহায় করে তুলেছে।
৩। মোগাদিশু, সোমালিয়া :
এখন পর্যন্ত সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশু সব সময় পৃথিবীর ভয়ঙ্কর শহর গুলোর অন্যতম। ইউএন এবং অন্যান্য এমব্যাসি সমূহ তাদের কাজ গুটিয়ে নিয়েছে সেখান থেকে। সর্বশেষ কার্যকর সরকার ১৯৯১ সালে ছিলো সেখানে। আল-কায়দার সাথে স্থানীয় মিলিটারির সহযোগে ২০০৭ থেকে অস্থির অবস্থা এখন পর্যন্ত বিরাজ করছে।
২। সিউদাদ জুয়ারেজ, মেক্সিকো :
মেক্সিকো মাদক স্বর্গ এবং সেই স্বর্গের অঘোষিত রাজধানী সিউদাদ জুয়ারেজ। মাদক সম্রাটেরা খুবই বেপরোয়া , তাদের যা ইচ্ছা তারা তাই করতে পারে সেখানে। অসৎ পুলিশ মাদক সব মিলিয়ে যুদ্ধ কবলিত দেশ বাদ দিয়ে সিউদাদ অন্যতম ভয়ঙ্কর শহর।
মানুষ হত্যাঃ ১৯৭৪
স্থানীয় জনসংখ্যাঃ ১,৩৩৫,১৯০
খুনঃ ১৪৭.৭৭%
১। সান পেদ্রো সুলা, হুণ্ডরাস :
সান পেদ্রো সুলা, হুণ্ডরাস অপরাধে ঘেরা একটি শহর। সন্ত্রাসী দলের সংঘর্ষ, মাদক নিয়ে খুন এবং রাস্তা ঘাটে এলোপাতারি সংঘর্ষ এখানকার প্রধান নীতি। হুণ্ডরাস বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জায়গা। অন্য কোনো দেশ এখানকার ক্রাইম রেটের সাথে পাল্লা দিয়ে পারবে না।
ক্রাইম রেটঃ
মানুষ হত্যাঃ ১,১৪৩
স্থানীয় বাসিন্দাঃ ৭১৯, ৪৪৭
খুনঃ ১৫৮.৮৭%