এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : মানুষের মতো এতো বহুরুপী বোধহয় পৃথিবীতে আর কোন প্রাণী নেই! বিশেষ করে বিয়ের ক্ষেত্রে। মানুষই একমাত্র প্রাণী যে মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীর সঙ্গেও শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করে। বিয়ে করে। জীবনসঙ্গী হিসেবে কেউ বেছে নেয় বেড়াল, কুকুর, ছাগল কিংবা ব্যাঙকে! খুব অবাস্তব শোনালেও এই আজগুবি কাজগুলোই করেছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের যত অদ্ভুত মানুষ। এবারের আয়োজন এই সব আজগুবি বিয়ে নিয়ে।
ব্যাঙের সঙ্গে বিয়ে: সাত বছরের ফুটফুটে দুই কিশোরী। ভিগ্নেশ্বরী আর মাইসাকান্নি। একদিন দু’জনকে ঝলমল শাড়ি আর সোনার গহনায় বধূ বেশে সাজানো হলো। একটু পরেই যে ওদের বিয়ে। তবে বর হলো একজোড়া ব্যাঙ। রূপকথার গল্পের মতো শোনালেও এটাই ভারতের পল্লীপুদেপ্ত নামক গ্রামে বড় হওয়া এই কিশোরীদ্বয়ের জীবনের বাস্তবতা। এটি ২০০৯ সালের ঘটনা। গ্রামে রহস্যময় রোগের বিস্তার থামাতেই ব্যাঙ রাজপুত্রের সঙ্গে এ দুই কিশোরীর বিয়ের আয়োজন করে পূর্ব আর পশ্চিম দিকের দুই গ্রামের বাসিন্দারা। ভারতের আর সব বিয়ের মতোই এ বিয়েতে সব ধরনের আয়োজন করা হয়। হাঁকডাক, নিমন্ত্রণ করে গ্রামবাসীকে খাওয়ানোসহ আনন্দ-উৎসব, নাচগান!
ছাগলকে বিয়ে: ফিনফিনে সাদা রঙের ওড়না জড়ানো হয়েছে এক ছাগলের গায়ে। মাথায় সাদা ফুলের মালা, গলায় কাপড়ের অলঙ্কার। ছাগলটিকে দেখলে গোমড়া মুখের মানুষটিরও না হেসে উপায় থাকবে না। হ্যাঁ, ২০০৬ সালে সুদানে চার্লস টোম্বি নামক এক পুরুষের বিয়ে হয় বধূ বেশের এই ছাগলটির সঙ্গে। শুধু কী তাই, ছাগলটিকে বিয়ে করার জন্য ওর মালিককে যৌতুক হিসেবে ১৫ হাজার দিনারও দিতে হয় বেচারা টোম্বিকে। ছাগলটির মালিক আলিপি নামের ভদ্রলোক এই বিয়ে সম্পর্কে বিবিসিকে জানান, আমরা ছাগলটিকে টোম্বিকে বউ হিসেবে দেই। যতদূর জানি, ওরা দু’জন এখনো একসঙ্গেই আছে।
গরুর সঙ্গে মালাবদল: ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের ১৮ বছর বয়সী কিশোর নগুরাহ আলতি। বেচারা আলতিকে বিপদে পড়ে এক গরুর সঙ্গেই মালাবদল করতে হলো। ২০১০ সালের জুন মাসে হাজার গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে আলতির সঙ্গে এক সুন্দর গরুর বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পর সামাজিক রীতি অনুসারে গরুটিকে সমুদ্রের জলে বিসর্জন দেয়া হয়।
স্বামী যখন ডলফিন: ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে ৪১ বছর বয়সী ব্রিটিশ মিলিওনিয়ার স্যারন টেন্ডলার এক অদ্ভুত কাজ করে বসেন। টানা ১৫ বছর ইসরাইলে ভ্রমণকালে কিনডি নামের যে ডলফিনটার সঙ্গে তার পরিচয় হয়, হুট করে তাকে বিয়েই করে ফেলেন এ মহিলা। ইসরাইলের একটি অবকাশ যাপন কেন্দ্রে প্রথম জলের ভেতর কিনডির সঙ্গে স্যারনের পরিচয় হয়। এরপর প্রতি বছরই কয়েকবারই কিনডিকে দেখতে যান। একসঙ্গে সময় কাটান। এরপর ২০০৫ সালের ডিসেম্বরের ২২ তারিখ সাদা শাড়ি জড়িয়ে, বন্ধুবান্ধবকে নিমন্ত্রণ করে ঘটা করে প্রিয় ডলফিনটিকে বিয়ে করে ফেলেন এ মহিলা।
কুকুরকে বিয়ে: ভারতের নাগরিক সিলভা কুমার। বয়স ১৮ হবে। কৈশোরিক দুরন্তপনার কারণে হঠাৎ করেই একদিন সিলভা দুটি কুকুরকে মেরে ফেলেন। মারার পর কুকুর দুটোকে গাছে পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখেন। আর কুকুর হত্যা করার বিষয়টিই হয় কাল। এ ঘটনার কিছুদিন পরে হাত ও পা প্যারালাইজড হয়ে যেতে শুরু করে। এমনকি কানেও কম শুনতে শুরু করেন তিনি। এর পর প্রায় ১৫ বছর কেটে যায়। ব্যথা আর ভোগান্তি সহ্য করতে না পেরে সিলভা সন্ন্যাসীর শরণাপন্ন হন। কুকুরের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য সন্ন্যাসী কুকুরকে বিয়ে করার পরামর্শ দেন সিলভাকে। অবশেষে ২০০৭ সালের নভেম্বরে ১০ বছর বয়সী ‘সিলভি’ নামের কুকুরের সঙ্গে মালাবদল করেন এ পুরুষ।