শুক্রবার, ০৮ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:৫৯:৩৫

আমাদের সমাজটা কি আসলে পুরুষবিদ্বেষী? মিলিয়ে নিন ১১টি কারণ

আমাদের সমাজটা কি আসলে পুরুষবিদ্বেষী? মিলিয়ে নিন ১১টি কারণ

সিদ্ধার্থ সিধু : নারীর স্বাধীনতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে দেশে বিদেশে ঝড় উঠলেও অনেক পুরুষ আছে যারা প্রায় স্বাধীনতা বঞ্চিত। যারা প্রতিনিয়ত আত্মসন্মানের ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। প্রায় মেয়েরা কথায় কথায় বলে থাকে, ‘ইস্ যত সুযোগ, স্বাধীনতা সব ছেলেদের।’ কিন্তু একটু ভাল করে অনুসন্ধান করে দেখলে দেখা যাবে বাস্তবটা মোটেও তেমন নয়। বরং মনে হবে এই সমাজ আসলে পুরুষবিদ্বেষী।

১। বয়স হয়েছে! খুব ক্লান্ত! দাঁড়াতে পারছেন না! তবু খালি থাকা বাস বা রেলের লেডিস সিটে বসলে বাঁকা চোখে দেখবেন মহিলা সহযাত্রীরা।

২। কোনও মহিলার গায়ে দুর্ঘটনাজনিত কারণে ধাক্কা লেগে গেলেও সর্বসমক্ষে অপমান এমনকি চড় খেতে হবে। জনতার সহানুভূতি পাওয়া যাবে না, উল্টো পাবে মহিলা।

৩। কোনও মহিলা পুরুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে কিংবা কু-ইঙ্গিতের অভিযোগ তুললেই পুরুষ কাঠগড়ায়। কেউ তলিয়ে মূল ঘটনা যাচাই করবে না।

৪। একা বাবা হিসেবে কোনও পুরুষ কন্যাসন্তান দত্তক নিতে পারেন না। একলা মা অবশ্য পুত্রসন্তান দত্তক নিতে পারেন।

৫। সর্বত্র আলাদা লাইনে দাঁড়াতে হবে। ভাবটা এমন যেন, পুরুষ মানেই সুযোগসন্ধানী। যখন তখন যা খুশি করতে পারে।

৬। স্ত্রী বা শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পণ অথব নির্যাতনের অভিযোগ আনলেই জেল। বিচার পরে হবে।

৭। যখন তখন যে কোনও অভিযোগে পুরুষকে গ্রেফতার করা যায়। কিন্তু মহিলাদের জন্য সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় ছাড় আছে।

৮। মাধ্যমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক সব পরীক্ষা শুধু যেন মেয়েরাই দেয়, ফলাফলের রেজাল্ট বের হলে তাদেরই ছবি। কখনও ছাত্রদের ছবি সংবাদপত্রে ছাপা হয় না। শুধু নকল করলে বা টুকলে তখন ছাত্রের ছবিসহ পেপারিং হয়।

৯। বিয়ের পরে একটি মেয়ের হাউসওয়াইফ হওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু হাউস-হাজব্যান্ড শব্দটাই চালু নেই। যেন পুরুষকে রোজগেরে হতেই হবে।

১০। বেকার মেয়ের বিয়ের অধিকার আছে কিন্তু বেকার পুরুষের নেই। পুরুষকে ভাল চাকরি, বাড়ি, গাড়ি ইত্যাদি অর্জনের পরীক্ষায় পাশ করতেই হয়, তারপর বিয়ে।

১১। একটি মেয়ে স্বামীর সেবা করলে ‘পতিব্রতা’ বলে সুখ্যাতি, আর পুরুষ বউয়ের দিকে মনোযোগ দিলেই ‘বউয়ের গুলাম’।

প্রিয় পাঠক লেখাটা সত্যি মনে হলেও সিরিয়াস ভাবে নিবেন না। কারণ আমাদের সমাজে পুরুষ নির্যাতন হলেও যেমন কথা ওঠে না, তেমনই নারী নির্যাতনও কম হচ্ছে না। এই খবরটা প্রকাশের উদ্দেশ্য মোটেও নারীদের ছোট করে দেখা নয় বরং খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে সত্যিকারের সম-অধিকারের উদ্দেশ্যে।

এটা সত্য যে, এখনও আমাদের দেশে, আমাদের সমাজে বড় একটা অংশ নারীবিদ্বেষী। যারা নারীদের চলাফেলা, পোশাক ও স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করতে তৎপর। এটা তাদের নিচু মানসিকতার পরিচয় মাত্র। কিন্তু তাই বলে তাদের এই সকল জগণ্য কর্মকান্ডের কারণে গোটা পুরুষ সমাজকে দায়ী করলে হবে না। এবং নারী-পুরুষের বিভেদ সৃষ্টি করলে সেটা হবে আরো বড় ভূল। কারণ জগতে যা কিছু হয়েছে তা শুধু নারী বা পুরুষের একক কর্মে হয়নি। বরং দুইয়ের সমন্বয়ে। মনে রাখতে হবে ‘অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’।
৮ এপ্রিল ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে