রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬, ০৫:৩৮:৩২

বলতে পারেন, দিনে পাঁচবার নাক, কান, চোখ, মুখ দিয়ে কেন রক্ত ঝরে এই মেয়েটির?

বলতে পারেন, দিনে পাঁচবার নাক, কান, চোখ, মুখ দিয়ে কেন রক্ত ঝরে এই মেয়েটির?

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : এলাকার মানুষ তাকে ভয় পায়। কেউ বলে, সে নাকি অতৃপ্ত আত্মা। মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে ফিরে এসেছে। তবে ১৭ বছরের মার্নি হার্বি ভূত নয়, পেতনিও নয়। অসাধারণ সুন্দরী এক ব্রিটিশ কিশোরী। কিন্তু ওইটুকু বয়সে মার্নির জীবনে কী এমন ঘটল, যে সবাই তাকে 'ভূত ভূত' বলে দূরে সরিয়ে দেয়?

৩ বছর আগের জুলাই মাসের ঘটনা। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মার্নি দেখে, তার চোখ ভেসে যাচ্ছে রক্তে। আয়নায় নিজের ওই চেহারা দেখে আতঙ্কে অজ্ঞান হয়ে যায়। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় ডাক্তাররা নানারকম পরীক্ষা চালায় মার্নির শরীরে। কিন্তু সব রিপোর্ট নর্মাল। মার্নি সম্পূর্ণ সুস্থ। তবে রক্ত ঝরা থামে না।

ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে শুরু করে। চোখের সঙ্গে শুরু হয় নাক, কান, জিভ, মাথা দিয়ে রক্তপাত। দিনে অন্তত পাঁচবার রক্তপাত হয় মার্নির। ব্রিটেনের অনেক বড় বড় ডাক্তার মার্নির চিকিৎসা করেছেন। রক্তপাতের কারণ বা সূত্র কেউই খুঁজে বের করতে পারেননি। রক্তপাত রুখতে আমূল বদলে দেয়া হয়েছে মার্নির ডায়েট। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। হাল ছেড়ে মার্নিকে তারা 'রহস্যময়ী কিশোরী' আখ্যা দিয়েছেন।

মার্নির এই দুর্দশায় তার জীবনটাই পালটে গেছে। হাসিখুশি মেয়েটির এখন স্কুলে যাওয়া বন্ধ। যাবে কী করে? তাকে দেখলেই তো সবাই ক্লাস ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। সিট ছেড়ে পরের সিটে গিয়ে বসে। স্কুলেও সবাই ধরেই নিয়েছে মার্নি ভূত। তাই মনের দুঃখে স্কুলের চ্যাপ্টার আপাতত বন্ধ করেছে মার্নি। দু-একজন বন্ধু দেখা করতে আসে ঠিকই। কিন্তু যেই না দেখে, মার্নির চোখ, কান থেকে রক্ত বেরিয়ে আসছে, তারাও ভয় পালিয়ে যায়। একা অন্ধকার ঘরে বসে থাকে মার্নি।
 
মেয়ের এই দুঃখ সহ্য করতে পারেন না মা ক্যাথরিন। মেয়েকে অনেকভাবে মোটিভেট করার চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু মেয়ের মুখে এটাই প্রশ্ন, আমার কী হয়েছে? কেন আমার সারা শরীর থেকে রক্ত বেরোয়?

এই প্রশ্নের উত্তর ক্যাথরিনের কাছেও নেই। যা হোক কিছু একটা বলে মেয়েকে চুপ করাতে পারেন না তিনি। মাকে নিরুত্তর দেখে মার্নি তখন একটাই কথা বলে, “আমি মরে যেতে চাই।”

নিজের রোগের কথা জানিয়ে মার্নি ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছিল কিছুদিন আগে। কিন্তু সেখানেও সে আঘাত পায় মানুষের ব্যবহারে। কেউ তাকে নিয়ে মজার টিপ্পনি কাটে, আবার কেউ তাকে বলে শরীরে ইবোলা ভাইরাস ঢুকেছে। এমনকী, হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীনও আশপাশের মানুষের ব্যবহার মার্নিকে হতাশাগ্রস্ত করে তোলে।

নিজের অসুস্থতার জন্য মার্নির যত না যন্ত্রণা, তার চেয়ে অনেকবেশি যন্ত্রণা মানুষের দুর্ব্যবহারে। এসব দেখে মার্নির একটাই অনুরোধ, তাকে যেন সুস্থ জীবনে ফিরে আসতে দেয়া হয়।-ইআই
১০ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে