বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:০২:৪১

কবর থেকে উদ্ধার হল জীবন্ত শিশু

কবর থেকে উদ্ধার হল জীবন্ত শিশু

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সোমবার সকালে কবরের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হল একটি জ্যান্ত শিশুকে৷ ভারতের লখনউয়ের সীতাপুরের কমলাপুর এলাকার একটি আখ খেতে মাটির তলা থেকে একটি বাচ্চা মেয়েকে উদ্ধার করা হয়৷

জানা গেছে মেয়েটি লখনউয়ের মড়িয়াব এলাকার হরিওমনগরে একটি ভাড়া বাড়িতে নিজের মায়ের সঙ্গে থাকত৷ পুলিশের অনুমান গলা টিপে তাকে অজ্ঞান করে ফের মাটি খুঁড়ে তাকে কবর দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশের তদন্ত শুরু হলে মামলা ক্রমশ জটিল হতে থাকে৷

পুলিশ জানিয়েছে, সীতাপুরের মানপুর থানার গ্রামে নবরাজপুর পট্টির আখ ক্ষেতে কর্মরত এক মহিলা হঠাৎই একটি বাচ্চার কাতরানি শুনতে পায়৷ মহিলা মেয়েটিকে করব থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকেদের খবর দেয়৷ মনে করা হচ্ছে, মেয়েটির জ্ঞান ফেরার পরই সে হাত পা নাড়ালে কবরের মাটি সড়ে যায়৷

জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার পর মেয়েটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে মেয়েটি জানায় সে মড়িয়াব থানার সেমরা গৌড়ি এলাকার বাসিন্দা৷ তার বাবার নাম বিমলেশ অবস্থি ও তার নাম তনু৷ মেয়েটির আনুমানিক বয়স পাঁচ বছর৷

তনু জানায় সে কৃষ্ণা কনভেন্ট স্কুলের কেজি টুয়ের ছাত্রী৷ তার মায়ের নাম রুচি৷ সীতাপুর পুলিশ মড়িয়াব থানার যোগাযোগ করে ঘটনার কথা জানায়৷ পুলিশ জানিয়েছে এই মামলা ক্রমশ জটিল হয়ে যাচ্ছে৷ পুলিশ রুচির খোঁজ করছে৷ রুচির মোবাইল ফোন আপাতত বন্ধ৷ তার কল ডিটেল্স বের করা হচ্ছে৷

পুলিশ মামলার তদন্ত করতে তনুর স্কুলে পৌঁছলে প্রিন্সিপাল রবিন সাগর জানান, তনু গত পাঁচ অাগস্ট ওই স্কুলে কেজি-টু ক্লাসে ভর্তি হয়৷ তনুর মা রুচি নিজেকে বিধবা বলে পরিচয় দেয়৷ স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর তনু মাত্র পাঁচ থেকে ছয় দিনে স্কুলে উপস্থিত ছিল৷

গত ২০ অাগস্ট রুচি তনুকে নিয়ে স্কুলে এসে চার-পাঁচ দিনের জন্য ছুটি চেয়ে তনুকে নিয়ে চলে যায়৷ স্কুলে তদন্ত করার পর পুলিশের দল রুচির খোঁজ করতে হরিওমনগর পৌঁছায়৷ বাড়ির মালিক রমেশ লোধি পুলিশকে জানায়, সেমরা গৌরি গ্রামের রাজবাহাদুর যাদবের স্ত্রী সবিতার মাধ্যমে রুচি তার মেয়েকে নিয়ে গত চার অাগস্ট এই বাড়িতে ভাড়া আসে৷

এই বাড়ির অন্য ভাড়াটে মোহম্মদ রইস জানিয়েছে চার পাঁচদিন আগে একজন মহিলা ও এক যুবক একটি বাচ্চাকে নিয়ে গাড়ি করে রুচির সঙ্গে দেখা করতে আসে৷ কিছুক্ষণ পরে রুচিরও তনুকে নিয়ে গাড়িতে বসে তাদের সঙ্গে চলে যায়৷ এরপর পুলিশের তদন্তকারী দল সবিতার বাড়িতে হানা দেয়৷

সবিতা জানায় জানকিপুরমের এক মহিলার মাধ্যমে রুচি তার বাড়িতে ভাড়া এসেছিল৷ তার সঙ্গে তনু ছাড়াও এক যুবক ও পুজা নামের এক যুবতী ছিল৷ সেখানে চারজদিন থাকার পর রুচি রমেশ লোধীর বাড়ি ভাড়া নেয়৷ পুজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় রুচির বাড়ির লোকেরা গোমতিনগরে থাকে৷

রুচির সম্পর্কে তদন্ত করার জন্য পুলিশের দল তার ঘরেও তল্লাশি চালায়৷ বিছানার তলায় থেকে বেশ কিছু বিয়ারের খোলা ক্যান পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ স্থানীয় লোকেরাদের থেকে জানা যায় রুচি তার বান্ধবীদের সঙ্গে বসে মদের নেশা করত৷ এমনকি মাঝে মধ্যেই সন্দেহজনক লোকেরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসত৷

পুলিশ প্রাথমিক অনুমান হয়ত রুচিই তনুর সঙ্গে এই জঘন্য অপরাধ করেছে৷ কিন্তু যতক্ষণ না রুচিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে এই রহস্যের সমাধান করা যাবে না৷ রুচি কোথায় থাকত, তার পরিবারে কারা রয়েছে, সে কি কাজ করত? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ৷

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে