এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছি দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষ মাঠা খায়। আর তা তৈরি হতো মানুষের চোখের সামনেই। এখন রাজধানীর যেখানে-সেখানে চলছে নামে-বেনামে মাঠা তৈরির কাজ। আর এসব মাঠা তৈরি হচ্ছে পরিত্যক্ত টিস্যু পেপার দিয়ে। এসব মাঠা বিভিন্ন বিপনিবিতান ও ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে।
সম্প্রতি রাজধানীর পুরান ঢাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, পুরান ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় ছোট-বড় মিলে প্রায় দেড়শ’ হোটেল রয়েছে। প্রত্যেক হোটেলেই খাওয়ার আগে ও পরে হাত মুছে টিস্যু ফেলার ঝুড়ি রয়েছে। এসব ঝুড়ি থেকে ওই টিস্যুগুলো বস্তা ভরে নিয়ে যায় কিছু ছেলে। এসব টিস্যু কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়- এ বিষয়ে অনেকের আগ্রহ না থাকলেও কিছু লোক বিষয়টা জানে।
এরকম একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, সূত্রাপুরের বিভিন্ন হোটেল থেকে সংগ্রহ করা টিস্যু পেপার শ্যামপুরের মুসলিম মাঠা কারখানায় যায়। ওই কারখানায় এগুলো দিয়ে মাঠা তৈরি হয়। পরে ওই কারখানায় গেলে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
কারখানার পাশের বাড়িওয়ালা আকবর সর্দার জানান, অনেক আগে থেকেই টিস্যু পেপার দিয়ে মাঠা তৈরি করা হচ্ছে। কারখানার মালিক মতিন মিয়া কয়েকবার জেলও খেটেছেন। বের হয়ে আবার একই কাজ করছেন তিনি।
কারখানায় কোনো সাইনবোর্ড না থাকলেও মাঠার বোতলে লেখা রয়েছে ‘মুসলিম মাঠা’। কিন্তু বোতলের গায়ে কারখানার ঠিকানা লেখা নেই। ‘ভেজালমুক্ত খাবার খাবেন, সারা জীবন সুস্থ থাকবেন’ এ কথাও লেখা রয়েছে বোতলের গায়ে।
শ্যামপুরে এ রকম অসংখ্য কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় তৈরি মাঠা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এসে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডাক্তার সুদীপ রঞ্জন দেব জানান, টিস্যু পেপার দিয়ে তৈরি মাঠা মানুষ খেলে সরাসরি কিডনি ড্যামেজ হবে। পাকস্থলি ও লিভারে পঁচন ধরবে।এভাবে যারা মাঠা তৈরি করছে, কঠোর আইন করে তাদের শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।