বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:২০:১৩

বাকশক্তিহীনের কথা ফোটাবে ‘টক’

বাকশক্তিহীনের কথা ফোটাবে ‘টক’

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ‘বাক্যহীন’ মুখে কথা ফোটাবে খুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত যন্ত্রের সাহায্যে। এই খুদে বিজ্ঞানীর বয়স সবেমাত্র ১৬ বছর। পড়াশোনা স্কুলে। ভারতীয় খুদে বিজ্ঞানীর খেলাধুলার ফাঁকেই চলে বিজ্ঞান চর্চা।

কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবেনি, সখের বিজ্ঞানচর্চাই তাকে এনে দেবে আন্তর্জাতিক সম্মান। তার আবিষ্কার বিস্মিত করে দেবে বিশ্বের তাবৎ চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের। এ খবর দিয়েছে ভারতের একটি গণমাধ্যম।

তার এক আবিষ্কৃত যন্ত্র্রের সাহায্যে এবার কম খরচেই কথা বলতে পারবেন লকড-ইন-সিনড্রোম অর্থাৎ গলা বা মুখমণ্ডলে পক্ষাঘাতের ফলে বাকশক্তি হারানো ব্যক্তিরা। তাও একেবারে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে।

গুরগাঁওয়ের পানিপথের বাসিন্দা এই কিশোর বিজ্ঞানীর নাম আর্শ শাহ দিলবাগি। পানিপথের ডিএভি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্র সে। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞানে উৎসাহ বাড়াতে প্রতিবছরই গুগল একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

গুগল'স সায়েন্স ফেয়ার নামক ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বিশ্বজুড়ে তেরো থেকে আঠারো বছর বয়সী ছাত্রছাত্রীরা। এ বছর বিশ্বের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীর সঙ্গেই গুগল-এর ওই বিজ্ঞান প্রতিযোগিতায় প্রথমবার অংশ নেয়। প্রথমবারেই বাজিমাত! প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বাছাই পর্বে এশিয়া থেকে একমাত্র জায়গা করে নেয় আর্শ।

কী আবিষ্কার করেছে আর্শ? এই খুদে বিজ্ঞানী এমন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেছে, যার ফলে মুখণ্ডল ও গলায় পক্ষাঘাতের ফলে বাকশক্তি হারানো ব্যক্তিরা সহজেই মনের ভাব প্রকাশ করতে পারবেন। তাও আবার স্রেফ স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে। আর্শ এই যন্ত্রটির নাম দিয়েছে 'টক'।

আর্শ জানিয়েছে, 'টক' নামক এই যন্ত্রে থাকছে একটি সেন্সর। লকড-ইন-সিনড্রোম আক্রান্ত মানুষ মনের ভাব প্রকাশ করতে চাইলে, তার শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে সিগন্যাল পড়ে নেবে ওই সেন্সর। এরপর ওই সিগন্যাল কথায় রূপান্তরিত হবে।

একটি মাইক্রোফোনের সাহায্যে সেই কথা শোনা যাবে। ফলে মনের ভাব প্রকাশ করতে বাকশক্তি হারানো ব্যক্তিকে কোনো রকম কসরতই করতে হবে না। স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিলেই হবে। 'টক' ওই শ্বাস-প্রশ্বাসকে কথায় রূপান্তরিত করে দেবে।

মোটর নিউরো ডিজেবিলিটি’র ফলে বাকশক্তি হারানো ব্যক্তিরা মনের ভাব প্রকাশের জন্য সাধারণত যে অগমেন্টেটিভ অ্যান্ড অলটারনেটিভ কমিউনিকেশন (এএসি) ডিভাইস ব্যবহার করে থাকেন, সেগুলোর থেকে 'টক' অনেক বেশি কার্যকরী বলেই দাবি আর্শের।

তার কথায়, বাজারে যেসব এএসি ডিভাইস পাওয়া যায়, তার দাম প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার কাছাকাছি। আকাশছোঁয়া দামের জন্য অনেকেই কিনতে পারেন না। এছাড়া এই এএসি ডিভাইসগুলি খুব ধীরগতিতে কাজ করে, আয়তনেও বড়। তাই আমি ভাবলাম, এমন কোনো ডিভাইস যদি তৈরি করা যায়, যা অনেক তাড়াতাড়ি কাজ করবে, দামও সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই হবে।

আর্শের আবিষ্কৃত এই ডিভাইসের দাম রাখা হয়েছে ৮০ মার্কিন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় ৫ হাজার টাকার কাছাকাছি। খুদে বিজ্ঞানীর দাবি, বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী নয়টি আলাদা আলাদা স্বরে কথা বলা যাবে 'টক'-এ। ইংরেজি ছাড়াও কথা বলা যাবে অন্য ভাষাতে।

ছেলের এহেন সাফল্যে স্বভাবতই যারপরনাই খুশি আর্শের বাবা অমিত শাহ দিলবাগি। তিনি জানান, বিজ্ঞানের প্রতি ওর (আর্শ) বরাবরই খুব ঝোঁক। আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে অনুরোধ করব, আর্শের এই প্রকল্পকে যেন বাকশক্তিহীন মানুষদের জন্য কাজে লাগানো হয়।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে