এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রকৌশলী কামরুল হাসান সম্প্রতি যানজট নিরসনের এক বিশেষ কৌশল আবিষ্কার করেছেন। তার এ আবিষ্কার এরই মধ্যে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ হয়েছে। কামরুল বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এ পদ্ধতিতে একাধিক রাস্তার সংযোগস্থল বা ইন্টারসেকশনে কিছুটা পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে।
সেইসঙ্গে ক্রসিংয়ে কাছাকাছি সড়কের ভেতরে বিশেষ ধরনের ইউটার্ন স্থাপন করতে হবে। এতে সড়কে আর সিগন্যাল পড়বে না। ফলে সিনগ্যাল বাতি কিংবা ট্রাফিক পুলিশও লাগবে না। শাহবাগের চার রাস্তার ইন্টারসেকশনের ক্ষেত্রে সুবিধা মতো উত্তর-দক্ষিণ বা পূর্ব-পশ্চিম এর যে কোনো একটি সড়ক দিয়ে সরাসরি গাড়ি চলাচল করবে। সরাসরি চলাচল নিশ্চিত করতে নির্ধারিত সড়কে স্থায়ী ডিভাইডার স্থাপন করতে হবে।
যারা সরাসরি যেতে পারবে না, তাদের জন্য প্রতিটি সড়কে অভ্যন্তরীণ ইউটার্ন থাকবে। এটি ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত দিকে যাওয়া যাবে। প্রকৌশলের ভাষায় ইন্টারসেকশন বন্ধ করা হলেও শুধু ডানে মোড় নেওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই ইন্টারসেকশনের কাছাকাছি মূলত ডানে মোড় নেওয়ার জন্যই অভ্যন্তরীণ ইউটার্ন ব্যবহার করা হবে।
ধরা হলো শাহবাগ মোড় দিয়ে উত্তর-দক্ষিণের (বাংলামটর-টিএসসি) সড়ক দিয়ে সরাসরি গাড়ি চলবে। ডিভাইডারের কারণে পূর্ব-পশ্চিমের (মৎস্যভবন-কাঁটাবন) গাড়ি সরাসরি চলতে পারবে না। বাংলামটর থেকে আসা গাড়ি টিএসসি গেলে সরাসরি সড়কে সোজা চলে যাবে। মৎস্যভবন যেতে চাইলে বাঁয়ে মোড় নিয়ে চলে যাবে। কিন্তু কাঁটাবন যেতে চাইলে শাহবাগ মোড় সরাসরি সড়ক অতিক্রম করে টিএসসির দিকে গিয়ে অভ্যন্তরীণ ইউটার্ন ব্যবহার করে ডানে মোড় নিয়ে যেতে হবে।
একইভাবে টিএসসি থেকে আসা গাড়ি বাংলামটরে সরাসরি, কাঁটাবনে বাঁয়ে মোড় নিয়ে এবং মৎস্যভবনের দিকে যেতে চাইলে শাহবাগ ইন্টারসেকশন অতিক্রম করে কিছুটা বাংলা মটরের দিকে গিয়ে অভ্যন্তরীণ ইউটার্ন নিয়ে ডানে ঘুরে যেতে হবে। আর সরাসরি যেতে না পারায় পূর্ব-পশ্চিমের (মৎস্যভবন-কাঁটাবন) গাড়ি যার যার সড়কে বাঁয়ে মোড় নিয়ে উত্তর-দক্ষিণের সরাসরি সড়কে প্রবেশ করে ইউটার্ন ব্যবহার করে গাড়ি ঘোরাতে পারবেন।
যেমন মৎস্যভবন থেকে আসা গাড়ি বাঁয়ে মোড় নিয়ে টিএসসির দিকে ইউটার্নের মাধ্যমে ঘুরে সরাসরি রাস্তার বাঁয়ের লেনে ঢুকে কাঁটাবন ও সোজা গিয়ে বাংলামটরের দিকে যেতে পারবে। একইভাবে কাঁটাবনের গাড়ি বাঁয়ের লেনে ঢুকে ইউটার্ন দিয়ে ঘুরে টিএসসি বা মৎস্যভবনের দিকে যেতে পারবে।
প্রকৌশলী কামরুল হাসানের মতে, তিন সড়কের ইন্টারসেকশনে এ পদ্ধতি অবলম্বন করা আরও সহজ হবে। এ পদ্ধতিতে শুধু ঢাকা শহর নয়, যে কোনো এলাকার যানজট নিরসন করা সম্ভব। সড়কের ভেতরে ইউটার্ন সড়কের জন্য শুধু কিছুটা বাড়তি জায়গা প্রয়োজন হবে। সরকার চাইলে এটি ব্যবস্থা করা কঠিন কিছু নয়।
যানজট নিরসনে প্রকৌলশী কামরুল হাসানের উদ্ভাবিত এ পদ্ধতিটি রিলিজ ফ্রম ট্রাফিক জ্যাম :নো ভিহিকেল হেজ টু স্টপ ফর এ সেকেন্ড; শিরোনামে ফ্রান্সের ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ তাদের চলতি বছরের আগস্ট সংখ্যায় ছেপেছে। এর আগে এটি ছাপা হয়েছে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের জার্নালে।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/