রবিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:৩৯:০০

ঠিক কীভাবে তৈরি হয় একটি ওয়েবসাইট? জেনে রাখলে কাজে আসবে

ঠিক কীভাবে তৈরি হয় একটি ওয়েবসাইট? জেনে রাখলে কাজে আসবে

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ঠিক কীভাবে তৈরি হয় একটি ওয়েবসাইট, জেনে নিলে আপনিও পারবেন।  লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন, কীভাবে গড়ে ওঠে একটি ওয়েবসাইট? ওয়েব ডিজাইনিং থেকে সিএসএস কোডিং, জেনে নিন কোন কোন স্তর পেরিয়ে ওয়েব-এ জন্ম নেয় একটি সাইট।

• প্রথমেই বুঝে নেয়া যাক একটি ওয়েবসাইট আসলে কী দিয়ে তৈরি
একটি ওয়েবসাইট হলো একগুচ্ছ ওয়েবপেজ-এর সমন্বয়।  ওয়েবসাইটের মূল দু’টি অংশ, ব্যাকঅ্যান্ড এবং ফ্রন্টঅ্যান্ড।  ফ্রন্টঅ্যান্ড হলো যে অংশটি ইউজাররা দেখতে পান।  

ব্যাকঅ্যান্ড হলো ওয়েবসাইটের মূল খাঁচা।  যদি একটি বাড়ির সঙ্গে তুলনা করা হয় তবে ফ্রন্টঅ্যান্ড হলো বাড়ির ঘরদোর, দেয়াল, রং— সবকিছু যা চোখে দেখা যায়।  ব্যাকঅ্যান্ড হলো সেই সিমেন্ট-বালির স্তর, যা উপর থেকে চোখে পড়ে না।

প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের যাবতীয় তথ্য জমা হয় একটি ডেটাবেসে, যেটি সংযুক্ত থাকে ব্যাকঅ্যান্ডের সঙ্গে।  প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য যোগ হতে পারে ডেটাবেসে।  সেই তথ্যগুলো ফ্রন্টএন্ডে কীভাবে দেখাবে তা নির্ভর করে ফ্রন্টঅ্যান্ড কোডিং এবং ব্যাকঅ্যান্ড প্রোগ্রামিংয়ের ওপর।  ফ্রন্টঅ্যান্ডে থাকে ওয়েবসাইট কনটেন্ট।  কনটেন্ট বলতে সমস্ত ধরনের লেখাজোখা, ছবি, ভিডিও, ওয়েবকাস্ট সবই বোঝায়।  প্রত্যেকটি ওয়েব পেজ-এর কনটেন্ট একটি টেমপ্লেটের ওপর ডিসপ্লে হয়।  এগুলোকে ওয়েব ডিজাইনিং টেমপ্লেট বলা হয়।

মোট ৮টি ধাপে গড়ে ওঠে একটি ওয়েবসাইট—

১) প্রাথমিক আলোচনায় ঠিক হয় কী ধরনের ব্যাকঅ্যান্ড প্রোগ্রামিং ব্যবহার করা হবে।  ইদানীং ওয়র্ডপ্রেস, ড্রুপাল বা ম্যাজেন্টোর মতো কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অবলম্বন করে ওয়েবসাইট তৈরি করার চল বেশি। মাইক্রোসফ্‌টের এএসপি ডট নেট ফরম্যাটও অত্যন্ত জনপ্রিয় কাস্টমাইজ্‌ড ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্টের জন্য।

২) একদিকে যখন ব্যাকঅ্যান্ড প্রোগ্রামিং চলে তখন অন্যদিকে ডিজাইনিংয়ের কাজ শুরু হয়।  এখন প্রায় সব ওয়েবসাইটই ‘রেসপন্সিভ’ অর্থাৎ সমস্ত ধরনের ডিভাইসের সঙ্গে কমপ্যাটিবল। স্মার্টফোন আসার পরে গত কয়েক বছরে ইন্টারনেটে মোবাইল ট্রাফিক অত্যন্ত দ্রুতহারে বেড়ে যাওয়ায় এই রেসপন্সিভ ওয়েব ডিজাইনিংয়ের কনসেপ্টটি চালু হয়।  এই পদ্ধতির মূল কথা হলো গ্রিড-বেস্‌ড ডিজাইন যা সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে যেকোনো ধরনের ডিভাইসের ‘ভিউপোর্ট’-এ।

৩) ব্যাকঅ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এবং ডিজাইনিংয়ের পাশাপাশি চলে ‘কনটেন্ট’ তৈরির কাজ। প্রত্যেকটি ওয়েব পেজ-এ কী কী লেখা থাকবে, কী কী ছবি ব্যবহার করা হবে, ভিডিও বা ওয়েবকাস্ট থাকবে কি না, ইন্টার‌্যাক্টিভ ইউজার এক্সপেরিয়েন্স কেমন হবে তা মূলত ঠিক করেন কনটেন্ট ডেভেলপররা। কনটেন্ট, ডিজাইনিং এবং প্রোগ্রামিং টিম একে অপরের সঙ্গে কো-অর্ডিনেট করে কাজ করে।

৪) ডিজাইনিং এবং ব্যাকঅ্যান্ড সম্পূর্ণ হলে এবং ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি পেজ-এ কনটেন্ট আপলোডিং হয়ে যাওয়ার পরে কাজ শুরু করে ফ্রন্টঅ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট টিম।  ওয়েব ব্রাউজারে একটি ওয়েবপেজ কীভাবে ‘রান’ করবে তা নির্ভর করে এইচটিএমএল, জাভাস্ক্রিপ্ট এবং সিএসএস কোডিংয়ের ওপর। সিএসএস বা কাসকেডিং স্টাইল শিট কোড খুবই গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান সময়ের মোবাইল রেসপন্সিভ ওয়েবসাইটের জন্য।  এই কোডিং যত ভালো হবে ততই ডেস্কটপ ছাড়াও যেকোনো ডিভাইসে সহজে ওয়েবসাইটের সমস্ত পেজ দেখতে পাবেন ইউজাররা।

৫) এর পরের ধাপে একাধিক টেস্টিংয়ের মধ্যদিয়ে যেতে হয় একটি ওয়েবসাইটকে। ইন্টিগ্রেশন, স্ট্রেস, লোডিং, স্কেলেবিলিটি, ক্রস ব্রাউজার কমপ্যাটিবিলিটি, রেজলিউশন ইত্যাদি বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। এই সবকিছুই প্রথমে পরীক্ষা করা হয় স্টেজিং সার্ভারে। এর পরে আর একবার পরীক্ষা করা হয় লাইভ সার্ভারে ওয়েবসাইটটি আত্মপ্রকাশ করার পরে।  

৬) এর পরের ধাপ হলো এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। যাতে ইন্টারনেটে ওয়েবসাইটটি খুব তাড়াতাড়ি অনেক বেশি ইউজারের কাছে পৌঁছতে পারে এবং সার্চ ইঞ্জিন যাতে ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্স এবং কনটেন্টের বিচারে ভাল ‘পেজ র‌‌্যাংক’ দেয় ওয়েবসাইটকে তার জন্যই প্রয়োজন পড়ে এসইও।  এসইওর কাজ কিন্তু ওয়েব ডিজাইনিং এবং ডেভেলপমেন্ট স্তর থেকেই শুরু হয়। সাইট তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে এসইও'র যেক’টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকে সেগুলো হলো, মেটা টাইট্‌ল ও মেটা ডেসক্রিপশন লেখা, এক্সএমএল সাইট ম্যাপ তৈরি করা, গুগ্‌ল অ্যানালিটিক্স কোড ওয়েবসাইটের সঙ্গে লিংক করা ইত্যাদি।

৭) একটি ওয়েবসাইট অন্তর্জালে আত্মপ্রকাশ করে ওয়েব হোস্টিংয়ের মাধ্যমে। হোস্টিং মানে ইন্টারনেট সার্ভারের একটি বিশেষ অংশ লিজ নেয়া বা কিনে নেয়া। এটা একেবারেই বাড়ি ভাড়া করা বা কেনার মতোই। ওয়েব হোস্টিং ঠিকঠাক হলে তবেই অন্তর্জালে জায়গা করে নিতে পারে একটি ওয়েবসাইট এবং ওয়েবসাইটটি ইউজারদের কাছে পৌঁছতে পারে।

৮) আত্মপ্রকাশ করার পরই কিন্তু সব কাজ শেষ হয়ে যায় না।  এর পরের স্তর হলো ‘মেইনটেনেন্স এবং আপডেটিং’। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর আপডেট করতে হয় ওয়েবসাইটের সিএমএস ফ্রেমওয়র্ক বা সফ্‌টওয়্যার প্রোগ্রাম এবং অ্যাপ্লিকেশন।  তাছাড়া কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট তো আছেই।

এছাড়া প্রয়োজন পড়লে ওয়েবসাইটেরও মেকওভার করতে হয়।  সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পাল্টে ফেলতে হয় লুক অ্যান্ড ফিল।  ব্যাকঅ্যান্ড এবং ফ্রন্টঅ্যান্ড দুয়েরই পরিবর্তন করতে হয়।  এ পদ্ধতিকে বলা হয় ‘রিভ্যাম্প’। -ইবেলা
১৭ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে