শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:৫৭:৫০

মৃত্যুকে ধোঁকা দিতে চাচ্ছেন যে ব্যক্তি

মৃত্যুকে ধোঁকা দিতে চাচ্ছেন যে ব্যক্তি

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : পিটার থায়েল যিনি মৃত্যুকে জয় করে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে জান দীর্ঘদিন। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী হিসেবে খ্যাতিমান এই ব্যক্তি মৃত্যুকে হার মানানোর জন্য দু’হাত ভরে বিনিয়োগ করে চলেছেন।

বর্তামানে পিটার থায়েল সিলিকন ভ্যালিতে অধিক সফল ও রঙিন মানুষ ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট হিসেবে সবচেয়ে পরিচিত একজন। পেপ্যালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি খ্যাতি ও সুনাম কুড়িয়েছেন অনেক আগেই। শুধু তাই নয়, বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের প্রাথমিক পর্যায়েও বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।

বর্তমানে  তিনি মৃত্যুকে পরাজিত করার বা বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দেওয়ার প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছেন। স্মার্ট ও আধুনিক তরুণদের স্কুল-কলেজের প্রচলিত পড়াশোনার পরিবর্তে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ দিচ্ছেন তিনি।

পিটার থায়েলকে নিয়ে ব্যবসা ও প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডারে প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলিকন ভ্যালির উদ্যোক্তাদের মধ্যে যত ধ্রুপদি জীবনগল্প আছে, সেগুলো এক করে একটি মানুষের চরিত্র দাঁড় করালে যা দাঁড়াবে, তাই হবে পিটার থায়েল।

পিটার থায়েলের জন্ম জার্মানিতে। তার বয়স যখন এক বছর, তখন তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসে এবং সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়াতে বসবাস শুরু করে। স্ট্যানফোর্ডে পড়াশোনা করেন দর্শনশাস্ত্রে। পরে আইন বিষয়ে ডিগ্রি নেন। ‘পেপ্যাল মাফিয়া’ হিসেবে একটি টিম দাঁড় করানোর জন্য সব সদস্যকে তিনি একত্র করেছিলেন। এই দলে ছিল কেইথ রবিস, ডেভিস স্যাকস, রেইড হফম্যান প্রমুখ।

পিটার থায়েল বিতর্কিত মতামত তুলে ধরতে কখনো পিছপা হননি। ১৯৯৯ সালে তিনি থায়েল ও ডেভিড স্যাকস মিলে লেখেন ‘দ্য ডাইভারসিটি মিথ’ নামের একটি বই যাতে কলেজগুলোর বৈচিত্র্যময় বিষয়ে সমালোচনা করা হয়।

২০০৪ সালে মার্ক জাকারবার্গ তার উদ্যোগ হিসেবে ফেসবুক শুরু করেন। পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে ১০ শতাংশ মালিকানা নেন থায়েল। এর মধ্যে তিন শতাংশ রাখেন নিজের নামে। ফেসবুকের ওটাই ছিল প্রথম বিনিয়োগ। পরে ফেসবুক যখন আইপিও ছাড়ে থায়েল তার শেয়ার বিক্রি করে দেন এবং ১০০ কোটি ডলার আয় করেন।

এখন থায়েলের বড় পরিচয় ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট হিসেবে। তার প্রতিষ্ঠান ফাউন্ডার্স ফান্ড সম্পর্কে তিনি একবার বলেছিলেন, ‘আমরা উড়ুক্কু গাড়ি চাই, তাই পরিবর্তে পেলাম ১৪০ অক্ষর।’ উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ভালো ধারণা উঠে না আসায় আক্ষেপ তার। অবশ্য বর্তমানে ৮০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে তার বিনিয়োগ রয়েছে।

থায়েল সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটির সমাধান করতে কাজ করছেন, তা হচ্ছে মৃত্যুকে ঠেকানো। বয়স বাড়ার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করার বিষয়ে কাজ করছেন তিনি।

থায়েল বলেন, তিনি ১২০ বছর বাঁচার পরিকল্পনা করছেন। এ জন্য তিনি প্রতিদিন মানুষ বেড়ে ওঠার বিশেষ হরমোন নেন। বয়স কমানোর প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করা মেথিউলিস ফাউন্ডেশনে তিনি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার দান করেছেন। এ ছাড়া তিনি বয়স থামিয়ে দেওয়ার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা এসইএনএস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের কাজে তিনি সমর্থন করছেন। এ ধরনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে তিনি নানা সহযোগিতা করছেন।

ক্রায়োজেনিকস কোম্পানি আলকোরের সঙ্গে তিনি চুক্তিও করেছেন। এ চুক্তির ফলে তিনি ভয়াবহ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার শরীর ভবিষ্যতে সারিয়ে তোলার জন্য বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করে রাখা হবে। ‘দ্য ইমমরটালিটি প্রজেক্ট’ নামে অ্যান্টি এজিং গবেষণায় তিনি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।
২২ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে