ধনী হতে চান? তাহলে বিশ্বের শীর্ষ এই ১০ ধনীর পরামর্শ আপনার জন্যই

এক্সক্লসিভ ডেস্ক :  প্রকাশ্যে বা গোপনে সবাই স্বপ্ন দেখেন ধনী হতে। ধনী হওয়ার জন্য মানুষ প্রতিনিয়ত কতই না কষ্ট করে যাচ্ছেন। কেউ নাগাল পাচ্ছেন স্বপ্নে। কেউ বা আবার ছুটেই চলেছেন। তবে কথায় আছে, ধনী হওয়া সহজ ব্যাপার নয়। আবার একদম কঠিনও নয়। দরকার শুধু সঠিক প্রচেষ্টা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঠিকঠাক মত প্রেচেষ্টা চালালে ধনী যে কেউ হতে পারেন। তবে এর জন্য প্রথমেই লক্ষ্যটাকে স্থির করতে হবে। এরপর সুন্দর মতো একটা পরিকল্পনা করে নেমে পড়তে হবে। তবে অলসতাকে সারা জীবনের জন্য বলতে হবে গুড বাই।

বিশ্বের শীর্ষ ১০জন ধনী ব্যক্তি সম্প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন কিভাবে ধনী হওয়া যায়। আর এই পরামর্শ কাজে লাগিয়ে অাপনিও পৌছে যেতে পারেন আপনার লক্ষ্যে। তাহলে আসুন দেখে নিই বিশ্বের শীর্ষ ধনীরা কি বলছেন?

১। বিল গেটস : ৭৭ বিলিয়ন ডলারের মালিক তিনি। বিশ্বের অন্যতম সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন এই বিল গেটস। বিল গেটস ২০১৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে রোলিং স্টোনকে বলেন, উন্নতি প্রায়ই কোনো একটি প্রকল্পের মতো মনে হয়, যেখানে নির্দিষ্ট একটি কাজ করা হয় এবং এর বাইরে বড় কোনো কাজ হয় না। কিন্তু আপনি যদি শুধু সেদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন তাহলে হবে না। এক্ষেত্রে আপনার যা করতে হবে তা হলো ক্রমাগত উন্নতি ও উদ্ভাবনের চেষ্টা করে যাওয়া।

২। ওয়ারেন বাফেট : বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সফলতম ব্যক্তির কথা বলতে গেলে সবার আগে তার কথাই বলতে হবে। তিনি বর্তমানে ৬৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক। ওয়ারেন বাফেট বলেন সফল বিনিয়োগের জন্য সময়, নিয়ম-শৃঙ্খলা ও আগ্রহ থাকা প্রয়োজন। আপনার প্রচেষ্টা যতই দারুণ হোক না কেন, এটি সফল হতে কিছু সময় লাগবেই।

৩। জেফ বেজোস : অ্যামাজন ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তিনি। নিজের প্রচেষ্টায় তার সম্পূর্ণ সম্পদ গড়েছেন তিনি। বর্তমানে তার ৫২.১ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। তিনি ২০১০ সালে এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি ব্যবসাকে একটি  ধর্মপ্রচারের মতো বিষয় হিসেবেই দেখেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এটি শুধু ব্যবসা নয়, এটি ব্যবসার চেয়েও বড় কিছু।

৪। মার্ক জাকারবার্গ : ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমানে ৪৯.৪ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি তৈরি করেন ২০০৪ সালে। এরপর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। জাকারবার্গ জানান, ক্রমাগত উন্নতি করার জন্য আপনাকে হ্যাকারদের মতোই চিন্তা করতে হবে। হ্যাকররা যেমন বিশ্বাস করেন কোনো বিষয়ে আরও উন্নতি সম্ভব এবং কোনো বিষয়ই পরিপূর্ণ নয়।

৫। ল্যারি এলিসন : সিআইএর জন্য ডেটাবেজ তৈরি করে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। বর্তমানে ৪৮.৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক ল্যারি। এরপর তিনি ১৯৭৭ সালে ওরাকল নামে ডেটাবেজ সফটওয়্যার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ওয়াল স্ট্রিটকে তিনি বলেন, আমরা বহু কাজে আমাদের অর্থ ব্যয় করি। আমরা স্টক কিনতে পারি, ডিভিডেন্ডের জন্যও অর্থ ব্যয় করতে পারি। কিন্তু আমরা প্রায়ই বড় অংকের অর্থ ব্যয়ে অধিগ্রহণ করতে আগ্রহী হই না। যদিও এ বিষয়টি খুবই সম্ভাবনাময়।

৬। মাইকেল ব্লুমবার্গ : নিউ ইয়র্কের সাবেক মেয়র তিনি। তিনি বর্তমানে ৪৩.১ বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি ব্লুমবার্গ এলপির প্রতিষ্ঠাতা। ব্লুমবার্গকে তিনি জানান, তার সাফল্যের সূত্র হলো কখনোই শেখা বন্ধ না করা। সব সময়েই নিত্যনতুন বিষয় শিখতে হবে এবং শেখার এ আগ্রহ কখনোই বাদ দেওয়া যাবে না বলে তিনি মনে করেন।

৭। চার্লস কোচ :  চার্লস কোচ তার বাবার কোচ ইন্ডাস্ট্রিজ উত্তরাধিকার সূত্রে পেলেও তিনি কখনোই তাতে থেমে থাকেননি। তিনি বহু ক্ষেত্রেই তার সাফল্য বিস্তৃত করেছেন। বর্তমানে তার মোট সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৪২.৯ বিলিয়ন ডলার। তিনি জানান ব্যবস্থাপনায় প্রমাণিত স্টাইল ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মার্কেট-বেজড ম্যানেজমেন্ট (এমবিএম) কোনো প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদে সাফল্য এনে দিতে পারে। এছাড়া ফ্রি স্পিচ, প্রপার্টি রাইটস ও প্রগ্রেস হতে পারে স্বাস্থ্যকর প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়।

৮। বার্নার্ড আর্নল্ট : বার্নার্ড আর্নল্ট বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা এলভিএমএইচের কর্নধার। তিনি ৩৪.৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের মালিক। তার প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছে বেশ কিছু বিলাসবহুল পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন ‘আমি খুবই প্রতিযোগী মনোভাবসম্পন্ন। আমি প্রতিযোগিদের কাছ থেকে এগিয়ে থাকতে পছন্দ করি এবং সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’

৯। ল্যারি পেইজ : লেরি পেইজ সার্চ ইঞ্জিন গুগলের প্রতিষ্ঠাতা। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৩৭.৫ বিলিয়ন ডলার। ল্যারি পেইজ বলেন ব্যবসার সাফল্যের জন্য  ভোক্তার প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির দিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনি চাইলেই ১০ জনকে নিয়ে একটি ইন্টারনেট কোম্পানি খুলতে পারেন, যেখানে থাকতে পারে বিলিয়ন ব্যবহারকারী। এতে বড় অংকের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে না। এ থেকে বড় অংকের অর্থ উপার্জনও সম্ভব হবে। এটি স্বাভাবিক ও এ ধরনের বিষয়ে বহু মানুষই এখন মনোযোগী হচ্ছেন।

১০। কার্লোস স্লিম হেলু : মেক্সিকান এ ব্যবসায়ীর মালিকানায় রয়েছে কয়েকশ প্রতিষ্ঠান। কার্লোসের মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৮.২ বিলিয়ন ডলার। তিনি ২০১০ সালে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতে বলেন ‘আমরা যখন সমস্যার মুখোমুখি হই, তারা চলে যায়। এ কারণে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিন এবং সাফল্যকে গোপনে ডেকে আনুন।’
২২ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন