বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:১৭:৪৭

প্রেমের পরীক্ষামূলক সময় প্রথম দুই মাস

প্রেমের পরীক্ষামূলক সময় প্রথম দুই মাস

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রথম দিকে তার কথা শোনার জন্য বড্ড ব্যাকুল থাকতেন আপনি। তখন তার কথা ছিল যেন মধুমাখা। অথচ আজ, মাত্র দু'মাসেই তার কথায় মুগ্ধতা তো দূরে থাক, সমস্ত বিরক্তি এসে হাজির হয় তার নাম শুনলে।

শুরুতে ছিল লম্বা ফোনালাপ, রোমান্টিক সন্ধ্যার বিমুগ্ধতা আরো কত কি! অথচ একবারও খেয়াল করেননি, আপনার জীবন -বৃত্তান্ত, আপনার পছন্দ-অপছন্দে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই তার। দু'মাস পরই আপনি উপলব্ধি করতে শুরু করেন ভেতরের বিষয়। ভাবতে শুরু করলেন, আপনি কি সামনে আর এগোবেন, না এখানেই ইতি টানবেন সম্পর্কের?

ছোটখাটো অনেক বিষয় শুরুতে অগোচরেই থেকে যায়, পরস্পরের প্রতি অন্ধের মতো বিভোর হয়ে থাকলে এমনটি হয়ে থাকে। আসলে প্রেমের ক্ষেত্রে এমনই হয়। কিন্তু বিদ্যমান বাস্তবতায় অনেক দৃশ্যই এখন দৃশ্যান্তরে। সম্পর্কভিত্তিক অনেক সংসার প্রতিনিয়ত ভেঙে যাচ্ছে। ফলে মানুষকে এর উৎস নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। হতে হচ্ছে অনেক বেশি যুক্তিনির্ভর।

এমন নয় যে, প্রথম দিকে একে অপরের বিরক্তিকর কোনো আচরণ তাদের চোখে পড়ে না। আসলে তারা এড়িয়ে যান অথবা অপেক্ষা করেন বিষয়টি সম্পর্কে আরো স্পষ্ট হওয়ার জন্য।

এসব মনস্তাত্তিক বিষয় নিয়ে কাজ করছেন এমন গবেষকরা মনে করছেন, সম্পর্ক শুরুর প্রথম দুই মাস বিশেষ পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে আপনার প্রতি তার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে কি-না, আপনার পছন্দ-অপছন্দকে সে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে কি-না- এই সব। জেনে নিন এই দুই মাসে আপনার করণীয়গুলি:

সম্পর্ক তৈরিতে 'পরীক্ষামূলক সময়' বলে কিছু থাকা উচিত
সম্পর্কের প্রাথমিক পর্যায়েও অনেক সম্পর্ক তার চূড়ান্ত রূপ পায় না। কারণ এ সময় পরস্পরকে জানা বা বোঝার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ঘাটতি থাকে। অন্যের গুরুতর কোন ত্রুটি এড়িয়ে যাওয়ায় পরবর্তিতে নানা সংকট তৈরি হয়। এসব বিবেচনায় এ সময়ের পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। তাই, চাকরিতে যোগদানের পর কিছু সময় যেমন 'পরীক্ষামূলক' হিসেবে নির্ধারিত হয়, তেমনি এ ক্ষেত্রেও এ জাতীয় কিছু সময় বিশেষ পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা উচিত।

কেবল আবেগ নির্ভর হওয়া থেকে বিরত থাকুন
'বলা হয় যে গাছটি যত দ্রুত বাড়ে, তার ভেঙে পড়ার সম্ভাবনাও থাকে তত বেশি।' আবেগের তোড়ে হয়তো দ্রুত সম্পর্ক তৈরিতে পৌঁছানো যায়। কিন্তু শুধু আবেগ নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে এর বস্তুগত দিক, হতে হবে গ্রহণযোগ্য যুক্তির মুখোমুখি। অন্যথায় এমন হতে পারে- আপনার কাজে-কর্মে মন বসছে না, সব ক্ষেত্রে তাড়াহুড়োর প্রবণতা- এগুলি আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। সুতরাং বস্তুবাদী পর্যবেক্ষণে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন সব কাজ-কর্ম ঠিক রেখে।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা ঠিক করুন এক সঙ্গে বসে
যদি আপনি এবং আপনার সঙ্গীর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় অথবা কোনো কারণে আপনি উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন তবে ভাবুন আপনি সম্পর্ক রাখবেন কি রাখবেন না। আর নিচের প্রশ্নগুলো করুন নিজেকে।

চেষ্টা করুন উত্তরগুলোও খুঁজে বের করার
আপনার ভিতরকার মানুষটি কী বলে? যখনই সম্পর্ক নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত থাকবেন, কোন নিকটতম বন্ধুর সাহায্য নেওয়া খুবই সহজ। কিন্তু কেবল আপনিই জানেন, আপনার খুব কাছের পুরোপুরি বিশ্বস্ত একজন মানুষ আছে। সে হচ্ছে আপনার ভিতরকার মানুষ। যাচাই করুন ওই মানুষটির প্রশ্নগুলো। আপনি কী চান? আপনি কি তাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেন? আপনি কি তার সঙ্গে কিছু শেয়ার করতে পান নির্ভেজাল আনন্দ? সবকিছুই কি তার ইতিবাচক? থামুন, এক মিনিট। ভাবুন সেই সময়ের কথা- যখন আপনারা একত্রে কাটিয়েছেন, যেন উপভোগ করছিলেন একটি নির্বাক চলচ্চিত্র। কী ছিলো আপনার আকাঙ্ক্ষা সঙ্গী নির্বাচনে? সেগুলোর কোন উপস্থিতি কি দেখেছেন তার মধ্যে? সে কি যথেষ্ট সততা আর বিশুদ্ধতায় গড়া? তাকে কি নির্ভরযোগ্য মনে করেন আপনি? তার কি কথায় আর কাজে রয়েছে অভিন্নতা? কিভাবে সামাল দিয়েছেন প্রথম তর্কযুদ্ধ? কাউকে পর্যবেক্ষণের জন্য তর্কযুদ্ধ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ সময় স্পষ্ট হয় কতটা যুক্তিনির্ভর আর পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুতরাং খেয়াল করুন মতপার্থক্য দূর করতে তর্কের প্রক্রিয়া কিভাবে ভূমিকা রাখছে। কিংবা আদৌ কোনো ভূমিকা রাখছে কি-না। আর ভাবুন এ সময় পরস্পরের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল ছিলেন ব্যক্তিগত ও সম্পর্ক উভয় ক্ষেত্রে?

খুঁজুন মতপার্থক্যের মাত্রা কতটা?
পরস্পর আরো কাছে আসার ক্ষেত্রে আকর্ষণ কতটা দৃঢ় সেটি কোন বিষয় নয়। কিন্তু আপনি হয়তো শহুরে জীবনধারা পছন্দ করেন, আর অন্যজন চায় এর থেকে মুক্তি- তাহলে সম্পর্ককে প্রতিষ্ঠিত করতে এখানে সংঘাত অনিবার্য। এই সব বিষয়ের মীমাংসায় যদি আপনি ব্যর্থ হন, তবে শুধু দুই মাস কেন, জীবনভর পর্যবেক্ষণে সময় কাটিয়ে দিলেও সমাধান দূরেই থেকে যাবে।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে