বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:০০:২৫

পুরো একটি গ্রামে একজনই মাত্র বাসিন্দা!

পুরো একটি গ্রামে একজনই মাত্র বাসিন্দা!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : একটি বাড়িতে একা একা অনেকই থাকেন। এমন কথা শুনেছি আমরা। কিন্তু একা একটি গ্রামে একজনই থাকেন! এমন কথা কি কেউ কখনো শুনেছি? না। তেমন কথা এর আগে কখনোই শুনিনি। তবে এবার এমনই এক কথা শোনাব। তবে সেটা কোন গল্প নয়। সত্যি এমন একটি গ্রাম আছে, যেখানে একাই একজন থাকেন।

এই গ্রামে একজন ছাড়া আর কোন বাসিন্দা নেই। হয় তো এখন ভাবছেন এমনটা কি সম্ভব? এই অসাধ্যই সম্ভব করে দেখিয়েছেন এক ব্যক্তি। টানা ১০টা বছর একটা গ্রামে একা কাটিয়ে ফেলেছেন সেই ব্যক্তি!

চিনের জুয়েনসানসে গ্রামের জনসংখ্যা ১জন। গত ১০ বছর ধরে লিউ সেনজিয়া নামের এই ব্যক্তি একাই রয়েছেন গ্রামে। ১০ বছর আগে এই গ্রামের ছবিটা কিন্তু এমন ছিল না। তখন ওই গ্রামে অনেকের মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদ্র ঘাটতি হওয়ার জন্য ক্রমশ গ্রাম ছেড়ে সবাই চলে যেতে থাকে।

বয়স্ক যারা গ্রাম ছেড়ে যেতে পারেননি, তারা মারা যান। ২০০৬ সাল থেকে শয্যাশায়ী মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে একা গ্রামে থাকতে শুরু করেন লিউ। এক বছরের মধ্যে তার মা এবং ভাইও মারা যান। তখন থেকে গ্রামে একেবারে একা বসবাস করছেন তিনি।

এত বছর ধরে একা থাকতে থাকতে একাকীত্বই লিউয়ের সঙ্গী হয়ে গিয়েছে। তিনি শিখে গিয়েছেন কীভাবে একা বেঁচে থাকতে হয়। ভেড়া প্রতিপালন করা শুরু করেন। কীভাবে এই পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন, আর কীভাবেই বা বেঁচে রয়েছেন, সেই বিষয় লিউ জানিয়েছেন যে, প্রথম প্রথম গোটা গ্রামে একা থাকতে তার খুবই কষ্ট হত। অনেকদিন তিনি ঘুমোতে পারেননি। রাতে যখন হিংস্র কুকুরের ডাক শুনতেন, ভয় তিনি দুচোখের পাতা এক করতে পারতেন না। সঙ্গী হিসেবে ভেড়া প্রতিপালন শুরু করেন। ওই ভেড়াগুলো ছাড়া তার আর কোনও সঙ্গী নেই। এভাবেই দিনের পর দিন একা থাকতে থাকতে ক্রমশ এই পরিস্থিতির সঙ্গেই একাত্ম হয়ে গিয়েছেন।

স্থানীয় বনবিভাগে বন পরিদর্শক হিসেবে কাজ করেন লিউ। সারা মাস কাজ করে মাত্র ১০৭ ডলার রোজগার করেন তিনি। খাবার এবং জল সংগ্রহের জন্য তাকে অনেক দূরে যেতে হয়। কিন্তু কীভাবে এত কষ্ট করে বেঁচে রয়েছেন তিনি?

তার কি ওই গ্রাম ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না? এই প্রশ্ন কারয় লিউ জানালেন, কষ্টকর ওই পরিবেশে তার থাকতে কোনও অসুবিধা হয় না। তিনিও মাঝে মাঝে চান গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে। কিন্তু এত বছর গ্রামে থাকার পর গ্রামের প্রতি তার একটা মায়া পড়ে গিয়েছে। তাই ভাবলেও গ্রাম ছেড়ে তার আর যাওয়া হয় না।
২৭ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে