এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সাগরের পানির নিচের কাদামাটিতে রয়েছে শত শত কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের খনিজ সম্পদ। যেমন লোহিত সাগরের নিচের কাদামাটিতে সোনা, রুপা, দস্তা, তামা, সব কিছু পাওয়া যায়। ভূ-ত্বকের ৭৫ ভাগ সাগরের পানিতে ঢাকা। সাগরের পানির নিচে সমুদ্রবে তেল ছাড়া আরো অনেক খনিজ সম্পদ লুকানো আছে; কিন্তু তা বের করে আনার মতো প্রযুক্তি এখন মানুষের হাতে নেই।
জার্মানির কিল শহরের হেল্মহলৎস সামুদ্রিক গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে নজর দিয়েছেন লোহিত সাগরের দিকে। গবেষণা কেন্দ্রের আর্কাইভে রেড সি সমুদ্রবরে অ্যাটলান্টিস-দুই স্তরের মাটির হাজার হাজার নমুনা জমা রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, সাগরের মাটিতে তামা বা রুপার মতো মূল্যবান পদার্থ রয়েছে। এমনকি টন টন স্বর্ণও রয়েছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
মেরিন বায়োলজিস্ট ড. ভার্নার ব্রুকমান বলেন, ‘অ্যাটলান্টিস ২-এর মতো এত বেশি খনিজ সম্পদ আর সমুদ্রবে অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এখনকার মূল্য অনুযায়ী ওখানকার খনিজ সম্পদের মূল্য হবে ১৪০০ থেকে ১৬০০ কোটি ডলার। আমাদের কাছে যা নমুনা আছে, তা থেকে বলা যায়, ওখানে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টন স্বর্ণ আছে।’
স্বর্ণ, রুপা, দস্তা, তামা, সবই সাগরের পানির নিচের কাদামাটিতে পাওয়া গেছে। গবেষণা কেন্দ্রে রাখা নমুনাগুলো থেকে এগুলোর সন্ধান পাওয়া যায়। লোহিত সাগরের তলায় যেন সত্যিই সোনার খনি রয়েছে!
সৌদি আরবের জেদ্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একত্রে লোহিত সাগরের খনিজ সম্পদ খোঁজার কাজে লেগেছেন জার্মান ভূতত্ত্ববিদেরা। এ জন্য সাগরের তলা থেকে ১৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা সব কাদার চোঙ খুঁড়ে বের করে আনা হয়েছে।
তাদের ল্য সাগরবরে খনিজ সম্পদ বের করে আনার একটা পন্থা আবিষ্কার করা।
ড. ব্রুকমান জানালেন, ‘রেড সি থেকে খনিজ সম্পদ বের করার মূল সমস্যা হলো, তা থেকে মিহি কণার যে কাদা সৃষ্টি হয় তা জাহাজ থেকে সোজা সাগরে ফেলা যায় না, কেননা তার ফলে একটা বিস্তীর্ণ কাদার আস্তরণ সাগরের সব প্রাণীকে মেরে ফেলবে।’
সৌদি আরবের আটজন উঠতি ওসেনোগ্রাফার শিগগিরই সাগরের তলা থেকে খনিজ সম্পদ বের করার স্বপ্ন দেখছেন। জেদ্দা থেকে আসা এই ছাত্ররা ‘আলকর’ গবেষণা কেন্দ্রে কাজ শিখছেন। তারা জার্মান বিজ্ঞানীদের সাথে সাগরের পানির নমুনা নিচ্ছেন।
এক ছাত্র তারেক হুসেইন আল খতেইন ডিডাব্লুকে জানালেন, ‘আমি এই প্রথম বাল্টিক সাগরে এসেছি। স্বভাবতই এখানকার তাপমাত্রা, সাগরের পানিতে লবণের পরিমাণ, অন্যান্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, সব কিছু আলাদা।
গবেষকেরা একটি বিশেষ যন্ত্র দিয়ে সাগরের তলার মাটির নমুনা নেন। নরম কাদামাটি ভ্যাকুয়াম দিয়ে চোঙের মধ্যে টেনে নেয়া হয়। জাহাজে বসে আরব ছাত্ররা শিখছেন, কিভাবে এসব নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়।
বাল্টিক সাগরের কাদামাটির রঙ কালো, লোহিত সাগরে যা নয়। এখানকার কাদায় প্রচুর লোহা আছে। সৌদি আরব থেকে আসা তরুণ গবেষকেরা নিজেরাই কাজটা করে দেখছেন। দেশে ফিরে তারা এই ‘নো-হাউ’ সাগরের খনিজ সম্পদ উদ্ধারের কাজে লাগাতে পারবেন।
০৬ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম