মৌলভীবাজার : বয়স সবেমাত্র ১০। পড়ে ৪র্থ শ্রেণীতে। ছোট্ট শিশুটির নাম রিফাত। স্কুলে যায় সে। গবেষণা করে বাসায়। এ ছোট্ট শিশুটির গবেষণা নিয়ে অনেকেই হতবাক!
ক্ষুদে হলেও কিন্তু তার কাজগুলো ফেলনার নয়। বড়দের মতোই কিছু একটা আবিষ্কারের চেষ্টা করে। কাজে বেশ মনোযোগী সে। ঘরের দরজা বন্ধ করেই কাজে হাত দেয়। ডাকসাইটে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে তার। সে প্রস্তুতি এখন থেকেই চলছে তার।
প্রথমদিকে খেলনা গাড়িগুলো ভেঙে একাকার করতো রিফাত। ভাঙতে ভাঙতেই শেখা তার। শিখতে শিখতেই রিফাত এখন ক্ষুদে ইঞ্জিনিয়ার। প্রথমদিকে তার আবিষ্কার ইঞ্জিনের নৌকা। তারপর একটি মোটরচালিত পাখা বানাল সে। সর্বশেষ ছবির বোতলগাড়ি তৈরি করে সে।
রিফাতের বোতলগাড়িটি দেখে। অনেকেই অবাক। তার বোতলগাড়িটি দেখার জন্য তার বাসায় অনেকেই আসছে। তার আবিষ্কারটি দেখে অনেকেই বলছে, কি বুদ্ধিমত্তা ছোট্ট বাচ্চািটি!
ক্ষুদে ইঞ্জিনিয়ার রিফাতের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে। শহরের দি বার্ডস রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে পড়ে সে। ওর বাবার নাম মো. আব্দুল বাছিত। তিনি একজন ব্যবসায়ী।
রিফাত এ গাড়িটি তৈরি করতে ব্যবহার করেছে একটি পুরনো প্লাস্টিকের বোতল, কলমের কালির পাইপ, খেলনা গাড়ির দুইটি মোটর, স্পাইটের প্লাস্টিক বোতলের ঢিপা (মুখ), অকেজো একটি খেলনা গাড়ির চাকা আর কিছু বৈদ্যুতিক তার।
রিফাতের বাবা আব্দুল বাছিত জানান, তার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রিফাত দ্বিতীয়। সে শিশুকাল থেকেই বাজারের বিভিন্ন ধরনের খেলনা কেনার জন্য বায়না ধরতো। খেলনাগুলো বাসায় এনে এক-দুই দিনের মধ্যেই সেগুলো ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলতো। তারপর ভাঙ্গা অংশগুলো দিয়ে সে নিজের মতো করে খেলনা তৈরি করতো।
তিনি জানান, ব্যবসায়ী কাজে সারাদিনই বাসার বাইরে থাকতে হয়। বাসায় গেলে রিফাতের মা প্রায়ই বলতো, তোমার ছেলে একদিন বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। বাকি আল্লাহর ওপর ভরসা।
রিফাতের মা রোকেয়া ফেরদৌস বলেন, তাকে স্কুলে ভর্তির পর থেকেই খেলনার গাড়ি বা অন্যকিছু কিনে দিলে সেটা ভেঙে এর ভেতরে কী আছে, না আছে সেটা মনোযোগের সাথে নাড়াচাড়া করতো।
একসময় দেখা যেত, খেলনাটির মোটর আর কাগজ দিয়ে তার মতো করে আরেকটা খেলনা বানিয়ে ফেলতো। ইদানীং সে তার রুমের দরজা বন্ধ করে অনেক সময় ব্যয় করে। আমরা মনে করতাম, সে হয়তো এমনিতেই খেলা করছে। কিন্তু পরে দেখলাম সে একটা ইঞ্জিনের নৌকা, বাতাস করার পাখা এবং একটি প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে একটা চমৎকার গাড়ি বানিয়ে ফেলেছে। গাড়িটি পেন্সিল ব্যাটারি দিয়ে খুব দ্রুত গতিতে চলে।
তিনি আত্মীয়-স্বজনসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া চান, বড় হয়ে যেনো রিফাত বড় ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/