এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : গ্রীষ্ম, সূর্য - বজ্রপাত: জার্মানিতে মাত্রাতিরিক্ত গরমের পর প্রায়ই ঝড় ওঠে৷ বাংলাদেশ বা ভারতে অবশ্য এই প্রবণতা বহু আগে থেকে৷ চলুন বজ্রপাত আর বিদ্যুৎ চমকানোর কয়েকটি বিশেষ দিক জানা যাক৷
আকাশে ‘শর্ট সার্কিট’
রাতের আকাশে এমন দৃশ্য বিরল নয়৷ বিদ্যুৎ চমকানোর ব্যাপারটি অনেকটা ‘শর্ট সার্কিটের’ মতো ব্যাপার৷ আর একেকটি বিদ্যুৎ চমক ৫০০ মিলিয়ন ভোল্ট পর্যন্ত শক্তিশালী হতে পারে৷ জার্মানিতে প্রতি বছর গড়ে বিশ লাখের বেশি বার বিদ্যুৎ চমকায়৷ এতে অবশ্য ভয়ের কিছু নেই৷ কেননা অধিকাংশই মাটি স্পর্শ করে না৷ বরং মেঘ থেকে মেঘে স্থানান্তর হয়৷
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
ছবিতে থাকা এই মানুষটি বজ্রপাতের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না৷ কেননা তাঁর ধাতব স্যুট বিদ্যুৎ চমক প্রতিরোধে সক্ষম৷ এই স্যুটের নীতি হচ্ছে ‘ফ্যারাডে কেজ’৷ ধাতু বিদ্যুৎ চমক থেকে সৃষ্ট বিদ্যুতের প্রবাহ প্রতিরোধ করতে পারে৷ তাই বিমান কিংবা গাড়িও ‘লাইটনিং বোল্ট’ বা বিদ্যুৎ চমকের আঘাত থেকে নিরাপদ৷
মাটিতে ফিরিয়ে নেয়া
সাধারণত উঁচু জায়গায় বজ্রপাত ঘটে৷ যেকারণে প্রায় সব বড় গির্জা বা বহুতল ভবনে ‘লাইটনিং রড’ রয়েছে, যা আর্থিং হিসেবেও পরিচিত৷ এই ব্যবস্থার ফলে বজ্রপাতের কারণে ভবনের ক্ষতি হয় না৷ বরং বিদ্যুৎ সরাসরি ভূমিতে চলে যায়৷ ১৭৫২ সালে বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন ‘লাইটনিং রড’ আবিষ্কার করেন৷
ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক আচরণ
২০১৩ সালে বজ্রপাতের কারণে জার্মান বিমা সংস্থাগুলোর ২৮০ মিলিয়ন ইউরোর মতো গুনতে হয়েছে৷ তবে সরাসরি ঘরবাড়ির উপর বজ্রপাতের কারণে এটা হয়নি৷ আসলে অনেক সময় বাড়ির কাছাকাছি বজ্রপাত হলে বাড়তি বিদ্যুৎ সাধারণ বৈদ্যুতিক লাইনের মাধ্যমে ঘরের মধ্যে চলে যায়৷ ফলে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়৷ তাই পরামর্শ হচ্ছে, বিদ্যুৎ চমকালে টিভি, ফ্রিজের মতো পণ্যের প্লাগ খুলে রাখুন৷
‘বল লাইটনিং’ এর অস্তিত্ব আছে
এটা প্রকৃত ‘বল লাইটনিং’ নয়৷ তবে বাস্তবেও এটা সম্ভব! যদিও এমন বিদ্যুৎ চমকানোর ছবি প্রকৃতি থেকে এখনো তোলা যায়নি, তবে বিজ্ঞানীরা বিষয়টি প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন৷
আকর্ষণ এবং আতঙ্কের মাঝামাঝি
গ্রীষ্মের আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো দেখে অনেকে রোমাঞ্চ অনুভব করেন৷ তবে কেউ যদি বিদ্যুৎ চমকানোর কথা শুনেই ঘামতে শুরু করেন তাহলে তাকে বলে ‘এস্ট্রাফোবিয়া৷’ বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎ চমকানো নিয়ে যাদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে তারা এস্ট্রাফোবিয়ায় আক্রান্ত৷
শিল্পীদের প্রেরণা
‘লর্ডস অফ লাইটনিং’ এর মতো শিল্পীরা বজ্রপাতের সৌন্দর্যকে এভাবেই স্টেজে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ বিভিন্ন চিত্রকর্মেও বিদ্যুৎ চমকানোর দৃশ্য একেছেন শিল্পীরা৷ নিরাপদ দূরত্বে বসে প্রকৃতির এই খেয়াল উপভোগ্য নয় বৈকি৷
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/