এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ধৈর্য্যরে পরীক্ষায় অক্টোপাস কোন অবস্থানে তা হয়তো অনেকেরই অজানা। এটা শুধু মা অক্টোপাসদের ক্ষেত্রে। একটি মা অক্টোপাস না-কী নিজের সন্তানদের মুখ দেখার ডিমে সাড়ে চার বছর তা দেয়া!
প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে ভয়াবহ শীত ও অন্ধকারে বাচ্চান মুখ দেখার জন্য ডিমগুলোকে নিয়ে সাড়ে চার বছর কাটায় মা অক্টোপাস।
শুধু তাই নয়, বাচ্চার মুখ দেখার পরই বেশিরভাগ মা অক্টোপাস মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
বুধবার মার্কিন বিজ্ঞানীরা বর্ণনা করেছেন, মা অক্টোপাস কিভাবে তাদের গর্ভকালীন সময়টা কাটায়।
তারা দেখেছেন, নারী অক্টোপাস প্রজাতি ডিম পাড়ার সময় হলে সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় এক মাইল গভীরে চলে যায়। তারপর দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ডিমগুলোকে আগলে রাখে।
প্রাণিজগতে এতো দীর্ঘ সময় ধরে ডিমে তা দেয়ার রেকর্ড অন্য কোনো প্রাণীর নেই৷ বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল প্লসওয়ান-এ নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
মার্কিন বিজ্ঞানীরা বর্ণনা করেছেন মা অক্টোপাস তার গর্ভকালীন সময়টা কীভাবে কাটান, সে বিষয়টি সমুদ্রের তলদেশে জীবদের জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে মধ্য ক্যালিফোর্নিয়ার সমুদ্রে একটি রিমোট নিয়ন্ত্রিত সাবমেরিন পাঠিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।
সে সময় তারা একটি নারী অক্টোপাসের সন্ধান পান, যেটা সমুদ্র তলদেশের অন্তত ৪,৬০০ ফুট নীচে একটি পাথরের খাঁজে অবস্থান করছিল। সেখানে স্বচ্ছ ও আলোকিত ১৬০টি ডিমও দেখতে পান বিজ্ঞানীরা।
তারা বলছেন, ডিমগুলো প্রথম অবস্থায় একগুচ্ছ ব্লু বেরির মতো ছিলো, ধীরে ধীরে সেগুলো একগুচ্ছ আঙুরের মতো দেখতে হয়।
কিন্তু এই সাড়ে চার বছরে মা অক্টোপাসকে কখনো তার স্থান থেকে নড়তে দেখা যায়নি। এমনকি পুরোটা সময় না খেয়েই থেকেছে সে। এ দীর্ঘ সময়ে না খাওয়ার কারণে ধীরে ধীরে মা অক্টোপাসটি শুকিয়ে যায় এবং বিবর্ণ হয়ে যেতে থাকে।
২০০৭ সালের মে মাস থেকে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবিরাম অক্টোপাসটির উপর সাবমেরিনের সাহায্যে নজর রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
তারা জানান, বেশিরভাগ মা অক্টোপাস জীবনে একবার বেশ কয়েকগুচ্ছ ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পরই মারা যায়। নতুন জন্ম নেয়া শিশুগুলো কিন্তু অসহায় থাকে না।
ডিমগুলো ফুটতে এতো দীর্ঘ সময় লাগার এটা একটা কারণ, বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা৷
বিজ্ঞানীরা বলেন, মা অক্টোপাস নিজের আট বাহু দিয়ে ডিমগুলো আগলে রাখে পুরো চার বছর, যাতে কোনো আঘাত না পায় এবং ভেঙে না যায়।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/