এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রতিদিন দীর্ঘ ২৫ কিলোমিটার হেঁটে আসেন বুলগেরিয়ার শহর সফিয়াতে। পেশা তার ভিক্ষা করা, প্রায় ১০০ বছর বয়স্ক এ বৃদ্ধ নিজেকে ভিক্ষা করেই নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। আজ আমাদের প্রতিবেদনে সেই কথাই উঠে আসছে।
দাদু দব্রী যার পূর্ণ নাম দভ্রাভ দব্রী, তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিজের শ্রবণশক্তি হারান। আপন বলতে তার কেউ নেই। দভ্রাভ দব্রী বুলগেরিয়ার নাগরিক, তিনি একদম নিঃস্ব রিক্ত সাধারণ এক মানুষ। কখনো তিনি জামা-কাপড় কিংবা জুতা কেনেন না।
নিজের জামা নিজেই সেলাই করেন হাত দিয়েই। এমন কি নিজেই চামড়া দিয়ে বানিয়ে নিয়েছেন এক জোড়া জুতা। বয়স তার ১০০ ছুঁই ছুঁই, এই বয়সেও তিনি দীর্ঘ ২৫ কিলোমিটার হেঁটে শহরে আসেন কেবল ভিক্ষা করতে। তিনি নিয়ম করে তার দীর্ঘজীবনে এক এক সময়ে এক এক শহরে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করেছেন।
প্রতিদিন মানুষের পেছনে পেছনে ঘুরে বেড়িয়েছেন। যাকে সামনে পেয়েছেন তাকে বলেছেন কিছু সাহায্য দিয়ে যেতে। রাস্তায় কোন শিশু দেখলেই আগলে ধরে আদর করেছেন। শিশুদের জন্য দব্রীর অন্যরকম মায়া। মানুষ তাকে যেটুকু সামর্থ্য সাহায্য দিয়েছেন।
তবে একটা বিষয় সবার কাছে রহস্য মনে হত, আসলে কি করে এই বৃদ্ধ। বিভিন্ন সময় দব্রীকে বিভিন্ন মানুষ সম্পূর্ণ ভরণ পোষণ দিতে চাইলে তিনি নেন নি। এই বৃদ্ধ ভিক্ষুক যে আসলে কি! তার বিষয়ে বিস্তারিত না জানলে কেউই ধারণা করতে পারবে না। কেনো তিনি তার সারাটি জীবন ভিক্ষা করে গেছেন।
আসলে দব্রী দাদু তার সারা জীবনের ভিক্ষার একটি পয়সাও নিজের জন্য খরচ করেননি। তিনি সারাজীবনের সকল বিক্ষার অর্থ দান করে দিয়েছেন এতিম শিশুদের জন্য। দব্রীর সারাজীবনের সঞ্চয় মোট ৫২ হাজার ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ৪০ লাখ ৩৬ হাজার দুইশ চল্লিশ টাকার সমপরিমাণ।
তিনি চাইলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নিজের কাজে ব্যয় করতে পারতেন, নিজে আর্থিক ভাবে আরও সচ্ছল হতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি তার অর্থ মানবতার কাজে লাগিয়েছে। এই বৃদ্ধ থেকে অনেকের অনেক কিছু শিক্ষা নেয়ার আছে।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/