এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : কখনো কি শুনেছেন যে, আকাশ থেকে টাকা পড়ে! আমরা সচরাচর দেখে আসছি, আকাশ থেকে বৃষ্টি, শিলা-বৃষ্টি পড়ে। তবে এও খবর পাওয়া গেছে, আকাশ থেকে পড়েছিল মাছ-বৃষ্টি। কিন্তু টাকা পড়ার কথা বিরল! এবার তা-ই ঘটতে যাচ্ছে।
আকাশ থেকে এবার পড়বে টাকা, প্রস্তুত থাকুন!
হ্যাঁ, এমনই ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে ইউরোপের অর্থনৈতিক মন্দা নিরসনে। এক দুঃসাহসিক সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছে ওই অঞ্চলের ব্যাংক মালিকরা।
মন্দা কাটিয়ে তুলতে নানান উদ্যোগ ব্যর্থ হবার পর শেষমেষ অর্থ বিক্রেন্দ্রিকরণের চিন্তা করছে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলো। এই বিকেন্দ্রিকরণের প্রেক্ষাপট হিসেবে হেলিকপ্টারে করে জনগণের উদ্দেশ্যে টাকা ছড়ানোও হতে পারে আকাশ থেকে।
মুদ্রাস্ফিতীর কারণে যে ছাপাকৃত নগদ অর্থ জমছে তা প্রত্যেক নাগরিকের হাতে হাতে বণ্টনও করে দেয়া হতে পারে।
হেলিকপ্টারে করে টাকা বিলিয়ে দেয়ার প্রস্তাবনা আসলেও এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে বিকল্প প্রস্তাবনা হিসেবে যুক্তরাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে তাদের ব্যাংকে ৫০০ পাউন্ড করে দিয়ে নগদ অর্থের পরিমাণ কমানো যেতে পারে। এমনটাও জানানো হয়েছে।
পুরো প্রক্রিয়াটির তত্ত্বাবধান করতে পারে খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদি যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয় তবে প্রত্যেক নাগরিককে দেয়া অর্থ হবে মূলত নাগরিকের কাছে ব্যাংকের রাখা আমানত।
সরকার প্রধানরা নতুন রাস্তা এবং রেলওয়ে নির্মাণের অর্থায়ন হিসেবে ব্যবহার করছে বন্ডগুলোকে। অর্থখাতে বন্ড ব্যবহার করার কারণে নগদ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমে যাচ্ছে এবং পূর্ণ মেয়াদ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বন্ডের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নগদ তরল অর্থ বাজারে আনা যাচ্ছে না। যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্স রেগুলেটর কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান লর্ড অ্যাডায়ান টার্নার হেলিকপ্টার দিয়ে অর্থ ছড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাবে সম্মতি প্রকাশ করেছেন।
বিশ্বব্যাপী ঋণগ্রস্ত অর্থনীতিকে স্থিতিশীলতায় ফিরিয়ে আনার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলেও অভিমত প্রকাশ করেছেন তিনি।
গত ১১ মে লন্ডনে অনুষ্ঠিত ট্রান্সফর্মিং ফিন্যান্স নামের একটি সম্মেলনে লর্ড টার্নার বলেন, আমরা এমন একটা ফাঁদে আটকে গিয়েছি যে, আমাদের অর্থ বিতরণের জন্য হেলিকপ্টার ডাকতে হচ্ছে।
এদিকে হেলিকপ্টার ব্যবহার না করে ‘পিপলস কোয়ান্টিটিভ ইজিং’ পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন জেরমি করবিন। গত মার্চে ইউরোপিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মারিও দ্রাঘি হেলিকপ্টার থেকে টাকা বিলানোর পরিকল্পনাকে খুবই চমৎকার সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছিলেন। মার্গারেট থ্যাচারের প্রিয় ফ্রি-মার্কেট বা মুক্তবাজার অর্থনীতিবিদ হলেন মিল্টন ফ্রেডম্যান।
১৯৬৯ সালে তিনি তার লেখায় বলে গিয়েছিলেন যে, যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয় এবং অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দের দিকে যায়, তবে সর্বশেষ ছাপাকৃত অর্থ হেলিকপ্টারে করে বিলিয়ে দেয়াই হবে উত্তম কাজ। এতে অর্থনৈতিক সামঞ্জস্যতা আসবে।
৪ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম