বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:২৪:৫৪

প্লাস্টিকের দ্বীপ!

প্লাস্টিকের দ্বীপ!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : প্রশান্ত মহাসাগরে বিশাল এক এলাকাজুড়ে বছরের পর বছর ধরে জমা হয়ে আসছে প্লাস্টিক বর্জ্য। পরিস্থিতি এখন এমনই সঙ্গিন যে প্রায় পঞ্চাশ ফুট লম্বা ‘দ্বীপ’ তৈরি করে ফেলেছে এসব প্লাস্টিক।
এই কাহিনীর শুরু ১৯৯৭ সালে। ট্রান্সপ্যাসিফিক ইয়ট রেস থেকে ফেরার সময়ে ক্যাপ্টেইন চার্লস মুর কিছু প্লাস্টিকের বর্জ্য পানিতে ভাসতে দেখেন। এই রেসের পথ ছিল লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে হনলুলু পর্যন্ত এবং সে পথেরই মাঝে এক জায়গায় দেখা মেলে এই বর্জ্যরে। তখন এই বর্জ্যরে পরিমাণ তেমন বেশি মনে না হলেই মুর লিখে রাখেন সব খুঁটিনাটি তথ্য। এর মাঝে ছিল টুথব্রাশ, বোতলের ক্যাপ, জাল, সাবানের প্যাকেট ইত্যাদি।

তিনি সে সময়ে ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া এবং হাওয়াইয়ের মাঝামাঝি কোনো এক জায়গায়। আশপাশে কোনো মানব বসতি ছিল না, তার পরেও অনেক বেশি প্লাস্টিক জমে ছিল সেখানে। মাটিতে পা রাখার পর মুর বিজ্ঞানীদের জানান তিনি কী দেখেছেন। এর দুই বছর পর তিনি সাগরের সেই এলাকায় ফিরে যান, আরো বৈজ্ঞানিক উপায় ওই প্লাস্টিক আবর্জনা স্তূপের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য। ১৫ বছর পর, সম্প্রতি আবারো মুর এবং তার ৫ সঙ্গী ওই এলাকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যান।

এত গবেষণা থেকে একটি ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে আর তা হলো, আমাদের ধারণার চাইতে অনেক বেশি বর্জ্য সাগরে ভাসমান অবস্থায় আছে। ২০১৪ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, সাগরের প্লাস্টিক রহস্যময়ভাবে উধাও হয়ে যাচ্ছে। আসল কিন্তু তা নয়। বরং আমাদের চোখ এড়িয়ে সাগরে রয়ে যাচ্ছে অনেক বেশি প্লাস্টিক। এমনকি কিছু মাছ এই প্লাস্টিক খেয়েও ফেলছে। প্লাস্টিকের বর্জ্যরে পাশাপাশি রাসায়নিক কাদা এবং অন্যান্য বর্জ্য মিলে তৈরি করেছে এমন এলাকা যা কিনা টেক্সাসের চাইতে বড়।

ভাসমান প্লাস্টিকের চাইতেও আরো উদ্বেগের কারণ হলো প্লাস্টিকের দ্বীপ। মুর এবং তার সঙ্গীরা আবিষ্কার করেছেন ৫০ ফুট লম্বা জ্বলজ্যান্ত এক প্লাস্টিক দ্বীপ, যার কিনা আছে নিজস্ব বালুবেলা, পাথুরে তীর, জলনিমগ্ন ‘পাহাড়’ এমনকি প্লাস্টিকের দড়িদড়া দিয়ে তৈরি ‘প্রবালপ্রাচীর।’ এই দ্বীপে বাসা বাঁধতে দেখা গেছে শামুক, ঝিনুক, অ্যানিমোন এবং বিভিন্ন রকমের শ্যাওলা। এই দ্বীপকে দেখে মনে হচ্ছে তা টিকে থাকবে অনেকদিন।  আমরা যদি এখনই প্লাস্টিক ব্যবহারে সতর্ক না হই তাহলে ভবিষ্যতে এমন অনেক প্লাস্টিক দ্বীপের উদ্ভব হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে