বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:২৭:৩৭

প্রযুক্তি যেভাবে আপনার বুদ্ধি কমিয়ে দিচ্ছে!

প্রযুক্তি যেভাবে আপনার বুদ্ধি কমিয়ে দিচ্ছে!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আমাদের অনেকেরই ধারণা নতুন নতুন মডেলের আইফোন, ল্যাপটপ এসব থাকা মানেই স্মার্টনেস। আধুনিক এসব গ্যাজেটকে অনেকেই মনে করেন উন্নতির সূচক। একটা মাত্রা পর্যন্ত প্রযুক্তির ব্যবহার আসলেই আমাদের মস্তিষ্কের জন্য উপকারি। কিন্তু তা যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখনই তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে থাকে মস্তিষ্কের ওপর। এবং অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে প্রযুক্তি আসলেই কমিয়ে দিতে পারে আপনার বুদ্ধিমত্তা। এবং দিচ্ছেও। আসুন, জানা যাক বিস্তারিত।

১) প্রযুক্তি আমাদের ঘুম কমিয়ে দিচ্ছে : স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপ থেকে যে নীলচে আলো আসে তা শরীরের মেলাটোনিনের কাজ ব্যহত করে। শরীরের স্বাভাবিক ঘুমের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে মেলাটোনিন। বেশিক্ষণ এসব গ্যাজেট ব্যবহারের ফলে এই প্রক্রিয়া ব্যহত হয় এবং আমাদের ঘুম কমে যায়।

২) সহজেই আমাদের মনোযোগ নষ্ট করে দিচ্ছে : জরুরি কোনো কাজ করতে করতে হঠাৎই মনে হলো ফোনটা একটু চেক করে নেই। অথবা ল্যাপটপে অনেকগুলো ব্রাউজার ট্যাব খুলে রাখলেন, আসলে মনোযোগ দিতে পারলেন না একটিতেও। এভাবে আমাদের পড়াশোনা, অফিশিয়াল কাজ এমনকি পারিবারিক জীবনের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

৩) খারাপ হয়ে যাচ্ছে আমাদের স্মৃতি : প্রযুক্তির কল্যাণে প্রতিনিয়তই প্রচুর পরিমাণে তথ্য নিয়ে কাজ করছে আমাদের মস্তিষ্ক। এর ফলে আসলে যেসব তথ্য আমাদের মনে রাখাটা জরুরি তা আমরা ভুলে যাচ্ছি। এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে আমাদের স্মৃতি, থাকছে না কোনও ব্যবস্থাপনা।

৪) কোনো কিছু মনে করার জন্য আমরা ইন্টারনেটের সাহায্য নিচ্ছি : এক সময়ে ইন্টারনেট ছিলো না। অনেকে বড় বড় বই মুখস্থ করে ফেলতো, একেবারে দাঁড়ি-কমা সহ। এখন তার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। ফলে মানুষের মাঝে তা করার কোনও উৎসাহও নেই। আপনি যখন জানেন গুগল করেই একটা তথ্য জানা যাবে, তখন তা মুখস্থ করে রাখবেন কেন আপনি? এর ফলে একটু একটু করে কমে যাচ্ছে আমাদের মস্তিষ্কের মুখস্থ করার শক্তি।

৫) আপনি কোনো কিছু পড়লেও তা মনে রাখতে পারছেন না : একটা বই পড়লে আমরা যত তথ্য মনে রাখতে পারি, অনলাইনে কিছু পড়ে ততটা মনে রাখতে পারি না। ব্যাপারটা পরীক্ষা করার জন্য উইকিপিডিয়ার একটি পাতা পড়ে দেখতে পারেন। বারবার মনোযোগ হারিয়ে যাবে এবং পড়া শেষে খুব বেশি কিছু মনে থাকবে না আপনার। ল্যাপটপ, আইফোন বা ট্যাবলেটের স্ক্রিনে যাই পড়ুন না কেন, স্মৃতিতে তার খুব বেশি থাকে না।

৬) জিপিএস ছাড়া রাস্তা খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে : মস্তিষ্কের হিপ্পোক্যাম্পাস অংশে প্রভাব ফেলে জিপিএসএর ব্যবহার। যারা সব সময় জিপিএস ব্যবহার করে রাস্তায় চলেন তাদের হিপ্পোক্যাম্পাসের কার্যক্ষমতা কম থাকে। যারা জিপিএসের ওপর কম নির্ভরশীল তারা বরং প্রৌড়ত্বে গিয়ে স্মৃতি সংক্রান্ত সমস্যাগুলোয় কম পড়ে থাকেন।

৭) আমাদের মস্তিষ্ক হয়ে উঠছে মাদকাসক্ত মানুষের মস্তিষ্কের মতো : ইন্টারনেট আসক্তি খুবই বাস্তব একটি সমস্যা। মাদক ব্যবহারে মস্তিষ্কে যেসব পরিবর্তন আসে, খুব বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারেও মস্তিষ্কে সে ধরণের পরিবর্তন আসতে পারে। এর ফলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ, মনোযোগ ধরে রাখা এবং সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা কমে যায় অনেকাংশে।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে