এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সেখানকার স্থানীয় টিভি চ্যানেলে যে গহবরকে ‘পৃথিবীর ধ্বংসের সূচনা’ বলে অভিহিত করেছিল তার সমাধান করেছেন রাশিয়ার গবেষকরা।
‘পৃথিবীর শেষ প্রান্তে’ রহস্যময় সেই গর্ত বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণেই আবির্ভাব হয়েছিল বলে মনে করেন গবেষকরা।
পৃথিবীর শেষ প্রান্ত হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার ইয়ামাল পেনিনসুলায় সপ্তাহখানেক আগে সৃষ্ট বিশাল একটি গর্ত রহস্য তৈরি করে রেখেছিল।
এটা কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল গর্তটি তার সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারছিলেন না বিজ্ঞানীরা। গর্তটির গভীরতা কত তা এখনো জানা সম্ভব না হলেও গর্তমুখের পরিমাপ ১০০ মিটারের মতো বলেই জানিয়েছেন রাশিয়ান গবেষকরা।
গর্ত সৃষ্টির কারণ হিসেবে অনেকে অনেক তত্ত্ব দিয়েছিলেন। কেউ বলছিলেন, গ্রহাণুর আঘাতে এটা ঘটেছে, আবার কেউ বলেছিলেন আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও) এর কারণ হতে পারে।
সায়েন্টিফিক রিসার্চ সেন্টার অব দ্য আর্কটিকের জ্যেষ্ঠ গবেষক আন্দ্রেই প্লেখানভ জানিয়েছেন, গ্যাসসমৃদ্ধ এলাকাটিতে রহস্যজনকভাবে সৃষ্ট গর্তটির কারণ হতে পারে মাটির নিচে অতিরিক্ত চাপ বেড়ে যাওয়া। এ অঞ্চলের তাপমাত্রায় পরিবর্তন আসার ফলে এ ঘটনা ঘটেছে।
গত বুধবার গর্ত সৃষ্টি হওয়ার পর প্লেখানভ এলাকাটি দেখতে যান। সেখানে তিনি ও তার গবেষক দল গর্ত সৃষ্টির কারণ উদ্ঘাটনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান।
সাইবেরিয়ান টাইমস গর্ত সৃষ্টি হওয়ার কারণ নিয়ে গবেষকদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার তথ্য প্রকাশ করেছে। সাইবেরিয়ান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গর্তের রহস্য উদ্ধারে ইয়ামাল কর্তৃপক্ষ, রাশিয়ার সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব দ্য আর্কটিক ও
ক্রায়োস্ফিয়ার ইনস্টিটিউট অব দ্য একাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষকরা কাজ করেছেন। মাটি, পানি ও বাতাস থেকে নমুনা বিশ্লেষণ করে রহস্যেঘেরা গর্তের সমাধান করতে তারা চেষ্টা করেছেন।
আর্কটিক সায়েন্টিফিক রিসার্চ সেন্টারের গবেষক অ্যানা কোরচাতোভা মনে করছেন, ভূগর্ভস্থ পানি, লবণ ও গ্যাসের মিশ্রণের ফলে কোনো এক বিস্ফোরণ থেকে গর্তটির সৃষ্টি হতে পারে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় এমনটা ঘটেছে।
এক হাজার বছর আগে ওই অঞ্চলটি সমুদ্রের নিচে ছিল। এটি মূলত পিঙ্গোপ্রবণ এলাকা। পিঙ্গো হলো মেরু এবং এর কাছাকাছি অঞ্চলে পাওয়া এক ধরনের বরফের স্তূপ, যা মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকে। পিঙ্গোর আকৃতি বেশি বড় হলে তা গলে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হওয়া সম্ভব।
বিশ্বের শেষ প্রান্তে দৈত্যকার গহবরের সন্ধান মিলেছে। কী কারণে এই গহবর তৈরি হয়েছে তা নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিল গবেষকরা।
অত্যুৎসাহীদের দাবি, কোনো উল্কাপিণ্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে এই বিশাল গহবরের। যদিও বিজ্ঞানীরা এই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/