গত ২১ মে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৯১ বছর বয়স্ক ম্যাঞ্চেস্টারের বাসিন্দা জর্জ ডাউটি। একদিকে বয়সের ভার, আবার ফুসফুসে সংক্রমণ। শারীরিক অবস্থা ক্রমশই খারাপ হতে থাকে। দুদিন পরে আইসিইউ-এ নেয়া হয় জর্জকে।
স্বামীর পাশে পাশেই ছিলেন ৯২ বছরের ডরোথি। দুশ্চিন্তা বাড়ছিল, ঝক্কিও নিতে পারছিলো না শরীর। ইতিমধ্যে শরীরে দানা বাঁধে ছোঁয়াচে রোগের জীবাণু। ২৪ মে একই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ডরোথিকে। তারপর একটা সপ্তাহ।
জর্জ আইসিইউতে আর স্ত্রী ডরোথি হাসপাতালের অন্য কেবিনে। ছোঁয়াচে রোগ বলে একবারের জন্যও জর্জের সঙ্গে দেখা করতে পালেন না ডরোথি।
ডরোথির লড়াইটা শেষ হয় ১ জুন। জর্জ তখন জানেনও না তার ৬৮ বছরের সঙ্গী ওই হাসপাতালেরই একটি ঘরে জীবনযুদ্ধে হেরে গেছেন। তবে মৃত্যুও বাধা হতে পারল না দুজনের মাঝে। সে দিন রাতেই পরপারে চলে গেলেন জর্জ।
জর্জ-ডরোথির জীবনের শেষটা যেমন গল্প, শুরুটা ছিল আরো গল্পাময়। সমারসেটের একই স্কুলে দুজনে পড়তেন। স্কুল ছাড়ার পর তাদের দুজনের আর যোগাযোগ ছিল না।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল তখন। ডরোথি কেবল সংসার শুরু করেছেন। চার মাসের মাথায় যুদ্ধে নিহত হন প্রথম স্বামী। পুরনো বন্ধুর দুর্দশার কথা জেনে চিঠি লিখেছিলেন জর্জ। দেখা করতে চান ছোটবেলার বন্ধুর সঙ্গে।
কত দিন পরে দেখা, যদি চিনতে না পারেন? সেজন্য ঠিক হয়, জর্জের হাতে থাকবে খবরের কাগজ আর ডরোথির হাতে একটা গোলাপ। ম্যাঞ্চেস্টারের পিক্যাডিলি রেল স্টেশনে দেখা হয় দুজনের। প্রেমের উত্তাপে পল্লবিত হয় যুগল জীবন।
দ্রুতই বিয়ে করে ফেলেন তারা। ডরোথি ভাল কেক বানাতে পারতেন। তাই একটা বেকারির দোকান খোলেন তিনি। আর জর্জ খোলেন একটা সেলুন। দুই ছেলেকে নিয়ে এভাবেই কেটে গিয়েছিল জর্জদের ৬৮টি বছরের সংসারে পথচলা।
ব্রিটেনের রাজা-রানির বিয়ের দিনই বিয়ে হয় তাদের। ১৯৯৭ সালে ৫০ বছরের বিবাহবার্ষিকীতে তাই রাজবাড়ির পার্টিতে নিমন্ত্রণ পান এই দম্পতি।