কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, ফুটবলের জন্যই আমাকে সবাই চেনে৷ ফুটবল ছাড়া আমার অস্তিত্ব শূন্য৷ ফুটবল একটি পরিবারের মতন, বিশ্বপরিবার৷ ছয় বছর বয়সে আমি প্রথম ফুটবলে কিক করি৷ সেদিন ছিল আমার জন্মদিন৷
এ জন্য আমার বাবার ফুটবলার বন্ধু সোসা আমাকে একটি চামড়ার বল উপহার দেন৷ সেটিই ছিল আমার সত্যিকারের কোনো বলে লাথি মারার অভিজ্ঞতা৷ তার আগে আমরা মোজার মধ্যে কাগজ ভরে ফুটবল বানিয়ে খেলতাম৷ ১৯৪০ সালে ব্রাজিলে জন্মগ্রহণ করেন ফুটবলের এ মহাতারকা৷
১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের সদস্য তিনি৷ ফুটবলে বর্ণবাদ বিলোপে ফিফার দূত ও ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন৷ এটা কোনো ছোটখাটো পরিবার নয়, সারা বিশ্বই ফুটবল পরিবার৷ আমি এই পরিবারের জন্য কাজ করে যাই৷
আমি সব সময় চেষ্টা করি অন্যের মঙ্গল করতে৷ আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে অন্যকে খুশি রাখার৷ আমি আগে পা দিয়ে ফুটবল খেলতাম, এখন হৃদয় দিয়ে খেলি৷ আমি ইউনেসকোর হয়ে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করি৷ আমি সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টায় থাকি সব সময়৷
আমার ফুটবল খেলার অনুপ্রেরণা অনেকে৷ তারুণ্যে অনুপ্রেরণা ছিলেন আমার বাবা দোনদিনহো আর ব্রাসিলিয়ার মধ্যমাঠের ফরোয়ার্ড জিজিনহো৷ আমার চোখে তিনি ব্রাজিলের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলার৷
মিশেল প্লাতিনি, বেকেনবাওয়ার অসাধারণ ফুটবলার ছিলেন৷ লেভ ইয়াসিন ছিলেন অনন্য এক গোলরক্ষক৷ ফুটবল মাঠে ক্রুইফ, ডি স্টেফানো, জিকো যাঁর যাঁর দিনে হয়ে উঠতেন ভয়ংকর৷ ম্যারাডোনাও ফুটবলের মাঠে দুর্জেয়৷ জর্জ বেস্ট তো ইউরোপ কাঁপানো ফুটবলার৷
ফুটবল আমাকে সব দিয়েছে—খ্যাতি, সম্মান, অর্থ৷ এখন আমি ফুটবলকে দিতে চাই৷ আমি মানুষকে আমার প্রতি তাদের ভালোবাসা ফেরত দিতে পারব না৷ কিন্তু তার পরও আমি তাদের কিছু দিতে চাই৷ আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই৷ এখন যারা শিশু, আমি তাদের ‘হ্যালো’ বলে ডাক দিই৷
এতে তারা যতটা খুশি হয়, আমি তার চেয়েও বেশি খুশি হই৷ আমি পেশাদার ফুটবল ছেড়েছি ৩০ বছর আগে৷ এখন যারা আট বছর, পাঁচ বছরের শিশু, আমাকে বিমানবন্দরে দেখলে চিৎকার করে ওঠে, ‘মা, দেখো, পেলে!’, ‘বাবা, দেখো, ওই যে পেলে!’ এটা নিঃসন্দেহে অন্য রকম একটি অনুভূতি৷ আমার জন্য এটাই তো স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ উপহার৷ সূত্র : এনটিভি নেটওয়ার্কস।