বিশেষজ্ঞরা এখানে এমনই ১০টি কথার তালিকা দিচ্ছেন যা সফল উদ্যোক্তারা কখনোই উচ্চারণ করেন না।
১. আইডিয়া দরকার
সবারই মাথায় দারুণ সব পরিকল্পণা রয়েছে। কিন্তু একটিমাত্র আইডিয়া আপনি খুঁজে বেড়াচ্ছেন যার জন্য পেশাগত জীবন আটকে রয়েছে তেমনটি হলে বিপদ। যদি তাই চান তবে এক পা পিছে যান। সবকিছু নতুন করে সাজান। পেশাগত জীবনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে পথ পেয়ে যাবেন।
২. আমার প্রাপ্য
কঠোর পরিশ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে আপনি যেকোনো কিছু প্রাপ্য বলে গণ্য করতেই পারেন। তবে এগুলোই যথেষ্ট নয়। প্রাপ্য আসবে পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে। ব্যবসা থেকে অর্থ বের করে খরচ করাটা যদি নিজের প্রাপ্য বলে মনে করেন, তবে তা ভুল। ব্যবসাকে ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে তারপর নিজের পাওনা বুঝে নিন।
৩. আরো কিছু বিনিয়োগ
কোনো ব্যবসারই যথেষ্ট বিনিয়োগ নেই। আমেরিকার সেনসাস-এর এক জরিপে দেখা যায়, ৩০ শতাংশ ছোট ব্যবসা শুরু হয়েছে ৫ হাজার ডলারেরও কম অর্থ দিয়ে। আর ১০ শতাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসার জন্য ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। তাই বিনিয়োগের বিষয়ে দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে যা আছে তারই সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
৪. খরচ বাঁচাতে পারলে
প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা এবং খরচের মধ্যে ফারাক থাকতে পারে। মাঝেমধ্যে লাভের পুরোটাই যায় খরচের খাতায়। তাই খরচ কমাতে পারলে হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে মনে হয়। এই চিন্তা করে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মার্কেটিং এবং সেলস বিভাগে কাটছাঁট করা হয় এবং তাতে হিতে বিপরীত হয়।
৫. ক্রেতার কাছে নিষ্ঠাবান
ব্যবসায় কর্তব্যনিষ্ঠ হওয়াটা খুব কঠিন। কিন্তু খুব সহজেই হারিয়ে যায়। ক্রেতার কাছে পণ্যের মূল্য কমিয়ে আপনি বিক্রি করতে পারেন। আবার বাড়িয়েও দিতে পারেন। কিন্তু সার্ভিসের চেয়ে যদি মূল্য বেশি হয়, তবে ক্রেতা আপনার কর্তব্যনিষ্ঠার প্রতি বিশ্বাস রাখবেন না। পাশাপাশি অন্যান্যরাও কিন্তু আপনার ক্রেতার বিশ্বাস অর্জনের চেষ্টায় রয়েছেন।
৬. মার্কেটিংয়ের ওপর জোর
প্রচলিত ধারণা বলে, একজন ক্রেতা বেশ কয়েকবার পণ্যের বিজ্ঞাপণ দেখার পর আগ্রহী হবেন। এ ছাড়া দ্রুত মার্কেটিংয়ের জন্য আর কোনো উপায় নেই। তবে অনেক দিক থেকেই বিজ্ঞাপনসংশ্লিষ্ট ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বেশ কাজ হয়। মানুষের মধ্যে 'সাবধানতা'র পরিমাপ করা প্রায় অসম্ভব। তবে আয়-ব্যয়ের পরিমাপ করা যায়।
৭. প্রতিষ্ঠানটিকে পরিবার বানানো
নিজের প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বন্ধুত্বপূর্ণ এবং আন্তরিক করার চেষ্টা সবাই করেন। কিন্তু ব্যবসা কখনোই পরিবারের মতো কাজ করবে না। কর্মীদের মনোভাব অনেকটা ক্রেতাদের মতোই হবে। প্রতিষ্ঠান থেকে তারা যখন কোনো সুবিধা পাবেন না তখনই তারা চলে যাবেন। তাই আন্তরিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করুন। তবে পরিবারের মতো বানাতে যাবেন না। লভ্যাংশ ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানই টিকে থাকবে না।
৮. পাজলের অংশমাত্র
কিছু ক্ষেত্রে এটি সত্য। সব কর্মীই গুরুত্বপূর্ণ। তবে মালিক হিসেবে আপনার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কারণ এখানে আপনার ক্ষমতা এবং দায়িত্বশীলতা সবচেয়ে বেশি। শেষ পর্যন্ত আপনার ব্যবসার চেহারাটি আপনারই প্রতিফলন। এসব বাস্তবতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে তার দায়িত্ব আপনার কাঁধেই বর্তাবে।
৯. মুখের কথাতেই ব্যবসা
আপনার মুখের কথায় অনেক কিছুই হবে। কিন্তু আপনার মুখের যাবতীয় ভালো ভালো কথাতে সবাই খুশী হয়ে প্রতিষ্ঠানের জন্য মন-প্রাণ ঢেলে দেবেন না। কিছু ক্ষেত্রে ব্যবসাটিকে এগিয়ে নিতে মুখের কথা কাজ দেয়। কিন্তু যতক্ষণ না তা বাস্তবে রূপ নেয়, ততক্ষণ সে কথার কোনো মূল্য নেই।
১০. পরিস্থিতি ভালো হবে
মাঝে মাঝে অন্যের কাজের সঠিক মূল্য আপনি দিতে পারবেন না। কর্মীদের নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার পদ্ধতি খুব ভালো। কিন্তু অনেক সময়ই আপনার এগিয়ে আসতে হবে। একটি কাজের ইতি ঘটানোর আগে বুঝে নিন, আপনি সংশ্লিষ্ট কর্মীকে কতদূর পর্যন্ত এগোতে দেবেন। এ সময় তাদের সফলতা পর্যবেক্ষণ করুন এবং নিজে এগিয়ে যান যখন প্রয়োজন হবে। সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার