রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬, ০৬:২৩:৫৪

শুনলে অবাক হবেন? এই গ্রামের শিশুরা উচু পাহাড় বেয়ে কিভাবে স্কুলে যাচ্ছে!

শুনলে অবাক হবেন? এই গ্রামের শিশুরা উচু পাহাড় বেয়ে কিভাবে স্কুলে যাচ্ছে!

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক: ছোটবেলায় স্কুলে গিয়েছেন নিশ্চয়ই। হয়তো আপনাদের অনেকেই কষ্ট করে পড়াশোনা করেছেন, জীবনে আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। চলুন, এক অনবদ্য সংগ্রামের শরিক হওয়া যাক। জেনে নিন পড়াশোনা করা হচ্ছে কীভাবে। শিশুদের এই উচু পাহাড় বেড়ে উঠে কোথায় যাচ্ছে? কী মনে হচ্ছে? রক ক্লাইম্বিং চলছে? ঠিকই ধরেছেন। রক ক্লাইম্বিংই বটে। যারা করছে, তাদেরও কারও বয়স চার, কারও পাঁচ, কারও বড়জোর ছয় কী সাত! না, এরা কেউ পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে না। শুনলে গা শি‌উরে উঠবে। এরা সকলেই প্রাইমারি স্কুলে যাচ্ছে! আজ্ঞে হ্যাঁ, লেখার ভুল নয়। প্রাইমারি স্কুলেই। চিনের আতুলের গ্রামের বাচ্চারা আজও এভাবেই উচু পাহাড় বেয়ে, জীবন বাজি রেখে স্কুলে যায় পড়াশোনা করতে যচ্ছে। সম্প্রতি ‘দ্য সান’-এ প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। তাতেই তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রামের শিশুদের পড়াশোনার হাল।

এই উচু পাহাড়ের নীচে অবস্থিত গ্রাম। আর স্কুল? ২,৬২৪ ফিট উঁচু এই খাড়া পাহাড়ের মাথায়। কী বেয়ে ছাত্রছাত্রীরা ওঠে? প্রকৃতিই যেন সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। উচু পাহাড়ের গায়ে গাছের শিকড় গজিয়েছে। সেই শিকড় দিয়েই প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে মই। এই মই বেয়ে পড়ুয়ারা যায় স্কুলে। আবার নেমেও আসে একই পথ ধরে। কয়েকটি জায়গায় গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগেই করে নিয়েছেন লোহা এবং গাছের ডাল দিয়ে মই। তবে ছবিতে যে মইটি দেখা যাচ্ছে, তেমন মই যাত্রাপথের খুব কম জায়গাতেই রয়েছে। প্রায় পুরোটাই গাছের শিকড় আঁকড়ে আরোহণ এবং অবতরণের ব্যাপার। চিনের ঝাওজুয়ে প্রদেশের এই গ্রামটিতে ৭২টি পরিবারের বাস। পড়ুয়ারা একবার খাড়া পাহাড় বেয়ে উপরে উঠলে দু’সপ্তাহ স্কুলে থাকে। দু’সপ্তাহ পরে নেমে আসে গ্রামে। পাহাড় বেয়ে স্কুলে পৌঁছতে এদের গড়ে লাগে দু’ঘণ্টা করে। এবারে ভাবুন, বৃষ্টি বা বরফ পড়লে এই রাস্তার কী হাল হতে পারে! এ পর্যন্ত অন্তত ৮টি শিশু মারা গিয়েছে স্কুলে যাওয়ার পথে।

এই পথের ভয়ে আজকাল অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলেই পাঠাচ্ছেন না। কেন কোনও ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না? প্রশাসনের বক্তব্য, গ্রামটি সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়াই যায়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কৃষি থেকে যে পরিমাণ আয় এই গ্রামের পরিবারগুলি করছে, তা কমে যাবে। কেননা, শহুরে এলাকার ধারেকাছে চাকরির সুযোগ কম। গ্রামবাসীরাও আগ্রহী নন বলে দাবি প্রশাসনের। আবার গ্রাম থেকে স্কুল পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হবে, তা প্রশাসন করতে নারাজ। প্রশাসনের যুক্তি, এই হাতেগোনা কয়েকজন লোকের জন্য এত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ অর্থহীন। আর প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের এই টানাপড়েনে শিক্ষার শিকড়ে ঝুলছে শিশুদের প্রাণ।-এবেলা

২৯ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে