বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:২৯:৪৯

ফুটবলের যত অজানা গল্প

ফুটবলের যত অজানা গল্প

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ফুটবল সমগ্র বিশ্বে একটি জনপ্রিয় খেলা। কালের বিবর্তনে ফলে এই খেলাতেও নানা সময় লেগেছে নানা পরিবর্তন। পাল্টে গেছে অনেক পুরনো নিয়ম-কানুন, যোগ হয়েছেও অনেক কিছুই। ফুটবল নিয়ে তেমন কিছু অজানা তথ্য এখন জেনে নিন।


১. অফসাইড : ১৮৬৬ সালের আগে খেলোয়াড়রা হাত দিয়ে বল থামানোর নিয়ম বাতিল হয়। এর আগে অফসাইডেরও কোনো নিয়ম ছিল না।

২. গোল : ১৮৬২ সালের আগে হাত দিয়ে মারলেও গোল হতো। এ বছরই নিয়ম হয়, হাতের সাহায্যে দিলে তা গোল হবে না।

৩. ক্রসবার : ১৮৬৫ সালের আগে গোলপোস্টের ভেতর দিয়ে বল প্রবেশ করালেই গোল হতো, তা যত ওপর দিয়েই হোক। এ বছরই ৮ ফুট উচ্চতার ক্রসবার দেওয়ার চল শুরু হয়।

৪. গোলরক্ষক : ১৮৭১ সালে নিয়ম করা হয়— ‘গোলরক্ষকই হাত দিয়ে বল ধরতে পারবে।’ তখন গোলরক্ষকরা হাতে বল ধরে মাঠের সবখানে চলে যেত।

৫. সময় : ১৮৭১ সালের আগে খেলার কোনো নির্দিষ্ট সময় ছিল না। আলোচনার মধ্যদিয়ে সময় নির্ধারিত হতো। কয়েক বার বিরতির নিয়মও ছিল। তখন খেলোয়াড়রা গোসল করতো, কাপড় বদলাতো, বিশ্রাম নিতো। ১৮৮৩ সালে খেলা দেড় ঘণ্টার হয়।

৬. আন্তর্জাতিক ম্যাচ : প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মধ্যে স্কটল্যান্ডের গ্ল্যাসগো শহরে ১৮৭২ সালের ৩০ নভেম্বর। এতে ইংল্যাণ্ডের ৮ জন এবং স্কটল্যাণ্ডের ৬ জন স্ট্রাইকার খেললেও ম্যাচটি গোলশূন্যভাবে শেষ হয়।

৭. রেফারি : ১৮৭৮ সালের আগে খেলায় কোনো রেফারি থাকতো না। দু’দলের দুই জন প্রতিনিধি থাকতো। সে বছরই বাঁশি ব্যবহারের চল হয়। এর আগে ব্যবহার হতো চিৎকার, ইশারা এবং ছুটির ঘণ্টা।

৮. হাফটাইম : ১৮৮৩ সাল পর্যন্ত খেলার প্রথমার্ধ দ্বিতীয়ার্ধ বলে কিছু কিছু ছিল না। ৯০ মিনিটের খেলা চলতো এক টানা। ছিল না প্রান্ত বদলেরও কোনো চল।

৯. নেট : নেট ছাড়া আবার গোলবার হয় নাকি! ১৮৯০ সালের আগে নেট ছাড়াই খেলা হতো।

১০. খেলোয়াড় : ১৮৯৭ সালের আগে একেক দলে কত জন খেলবে তা নির্ধারিত হতো দলগুলোর চুক্তির মাধ্যমে। এ বছরই নিয়ম হয় খেলোয়াড়ের সংখ্যা হবে ১১।

১১. টিকেট : এই কাণ্ডটি হয়েছিল ১৯৫০ সালে, ব্রাজিলে। ব্রাজিল ও উরুগুয়ের ফাইনাল দেখতে যাঁরা এসেছিল তাদের সঙ্গে ঢুকে যায় টিকেট ছাড়াই আরো ৬ হাজার ১৫৫ জন।

১২. শাস্তি : মেক্সিকো বিশ্বকাপে সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে ৬-০ তে হেরে যায় হাঙ্গেরি। অথচ তা হতে পারতো ১০-০ গোলে। হাঙ্গেরির কোচ তো রেগে আগুন। তিনি সব খেলোয়াড়কে একটি ঘরে বন্দী করে পাঁচ ঘণ্টা খেলাটির ভিডিও ফুটেজ দেখালেন। খেলোয়াড়দের বারবার দেখতে হলো নিজেদের লজ্জাজনক হার।

১৩. স্ট্রেচার : স্ট্রেচারে করে খেলোয়াড়কে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হলো। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি তড়াক করে স্ট্রেচার থেকে লাফ দিয়ে নেমে ফিরে আসেন মাঠে। মেক্সিকো বিশ্বকাপে বুলগেরিয়া বনাম মেক্সিকোর খেলার একসময় হুগো সানচেজ এই কাণ্ডটি করেন। পোল্যান্ডের সঙ্গে খেলায় আহত হয়ে গড়াগড়ি করছিলেন ব্রাজিলের অধিনায়ক এডিনহো। রেফারি স্ট্রেচার নিয়ে আসার জন্য ইঙ্গিত করছে দেখেই তড়তড় করে উঠে গেলেন তিনি।

১৪. বল : ১৯৩৪ সালে ইতালির বিশ্বকাপে ফাইনাল হয় স্বাগতিকদের সঙ্গে চেকোশ্লাভাকিয়ার। এই খেলায় ইতালির উইঙ্গার ওরসি একটি দুর্দান্ত বাঁক খাওয়া শটের মাধ্যমে গোল করেন। তা দেখে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন, গোলটি দৈবাৎ হয়ে গেছে। কিন্তু এ কথা শুটে ওরসি চটে টং। তিনি বললেন, ওরকম শট তিনি ইচ্ছে করলেই নিতে পারেন। পরদিন সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফারদের উপস্থিতিতে গোটা বিশেক শট নিয়েও তিনি ফাঁকা গোলপোস্টে বল ঢোকাতে পারলেন না।

১৫. বাঁশি : ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপে ফ্রান্স বনাম কুয়েতের খেলা চলছে। কুয়েতকে একে একে হজম করতে হয়েছে গুনে গুনে চারটি গোল। খেলার ৭৪ মিনিটে এক পাল্টা আক্রমণে কুয়েতের খেলোয়াড়রাও বল পাঠালেন ফ্রান্সের জালে। আল হৌতির ফ্রি কিকের সূত্র ধরে গোলটা দেন আল বুলৌসি। এই গোলের পরেও মনে হচ্ছিল কুয়েতের পরাজয় বরণ করতে হবে। পুরো বিষয়টাই তখন সময়ের ব্যাপার। কিন্তু নাটকের তখন অনেক বাকি। ৭৫ মিনিটে দেখা গেল ফরাসি খেলোয়াড় গিয়েসে বল নিয়ে ছুটছেন। হঠাৎ শোনা গেল বাঁশির শব্দ। কুয়েতিরা ভাবলেন রেফারি বোধহয় অফ সাইডের বাঁশি বাজালেন। গিয়েসে অফসাইড। অতএব গিয়েসেকে প্রতিরোধ করার দরকার নেই। কিন্তু গিয়েসে বোধহয় উত্তেজনায় খেয়াল করেননি। তিনি প্রায় বিনা বাধায় বল পাঠিয়ে দিলেন কুয়েতিদের জালে, গোল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে