এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : সব সাফল্যেই মানবজাতিকে উদ্বুদ্ধ করে। আবার সেই সাফল্যের পিছনে যে দুঃখ-কষ্ট-পরিশ্রম মিশে রয়েছে, তা হয়তো অনেকেরই অজানা থাকে। নিজের স্বপ্নকে পূরণ করতে একজন মানুষের জেদ, নিষ্ঠা, পরিশ্রম কতটা কাজে লাগতে পারে, তা হয়তো আজকের জেনারেশন ভাবতেই পারেন না।
তেমনই একটি কাহিনীর রূপকার হলেন সোমনাথ গিরাম। কোন বাধাই তার লক্ষ্য থেকে পিছু হঠতে দেয়নি। একই সঙ্গে চা বিক্রি করা ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া। শুধু তাই নয়, ভারতের সবচেয়ে কঠিনতম পরীক্ষা সাফল্য পাওয়া মুখের কথা নয়।
মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের একটি ছোট্ট গ্রাম থেকে পুনে চলে আসেন কৃষক বাবার একমাত্র সন্তান সোমনাথ। একসময় মনে হয়েছিল, শুধুমাত্র গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে পরিবারকে বাঁচানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। পুনে এসেও যখন কোনো কাজ জোটাতে ব্যর্থ হয়, তখন দেবদূতের মতোন একজন বন্ধুকে পেয়ে যান সোমনাথ। সেই বন্ধুর পরামর্শে একটি চায়ের দোকান খোলে সে।
একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাত্কার দেয়ার সময় সোমনাথ বলেছেন, '২০০৮ সালে যখন পুনে আসি, তখন পকেটে একটা টাকাও ছিল না। যেভাবে হোক এলাকায় চায়ের দোকান খুলি। আস্তে আস্তে দোকানের ব্যবসা বাড়তে থাকে। তখন উচ্চশিক্ষার জন্য আলাদাভাবে তৈরির হওয়ার কথা ভাবি। দোকানের কাজ শেষ হলে রাতে পড়াশোনা করতাম।'
ছোট্টবেলা থেকেই চায়ের দোকানই তার পড়াশোনাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কলেজে পড়াশোনা! সেটা চালাবেন কীভাবে? এমবিএ পড়ার ইচ্ছা থাকলেও, টাকা-পয়সার কথা ভেবে পিছিয়ে আসতে হয় তাকে। পরে সিদ্ধান্ত নেন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার জন্য পরীক্ষা দিবেন তিনি। ভারতের সবচেয় কঠিন পরীক্ষা দেয়ার জন্য শুরু হয় লাগাতার পরিশ্রম। তিনি বলেন, 'দিনের বেলায় দোকানে কাজের পর আর শরীর যেন আর কুলাতো না। তবুও রাত ২টা পর্যন্ত প্রতিদিন পড়াশোনা করতাম পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য।'
গিরামের এই সাফল্যের কাহিনীতে মুগ্ধ হয়ে মহারাষ্ট্র সরকার তাকে উপার্জন ও পরিকল্পনা প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর পদে নিযুক্ত করে। সোমনাথের মত বহু ছাত্রছাত্রী রয়েছেন, যারা শুধুমাত্র আর্থিক কারণে উচ্চশিক্ষার পড়া চালিয়ে যেতে পারছেন না। তাদেরকে সরাসরি সাহায্যের হাত বাড়াতেই সরকার একটি ফান্ড চালু করেছেন সম্প্রতি।-টাইমস অফ ইন্ডিয়া
৪ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই