রক্ত পাল্টে ফিরবে যৌবন!
এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : তারুণ্য ফিরে পাওয়ার চাবিকাঠি এবার হাতের মুঠোয়। সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, জরাগ্রস্ত শরীরে যৌবনের ঢেউ ফিরিয়ে দিতে পারে নবীনের রক্ত। অন্তত ইঁদুর নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে এমনই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
রাজা যযাতির জরা দূর হয়েছিল পুত্র পুরুর আত্মত্যাগে। পুরাণের সেই গল্প এবার বাস্তবায়িত হল আমেরিকার পরীক্ষাগারে। নেচার অ্যান্ড সায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধ অনুসারে, সম্প্রতি বয়স্ক ইঁদুরের পেশী ও মস্তিষ্কে গবেষণা চালিয়ে অবাক করা তথ্য আবিষ্কার করেছেন কেমব্রিজ ও ক্যালিফোর্নিয়ার দুই দল বিজ্ঞানী। দেখা গিয়েছে, বৃদ্ধ ইঁদুরের দেহে তরুণ ইঁদুরের রক্ত ঢুকিয়ে দেওয়ার পরে যৌবন ফিরে আসছে।
হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেমসেল ও জীবনদায়ি জীববিজ্ঞানের অধ্যাপিকা অ্যামি ওয়েজার্স জানিয়েছেন, অল্প বয়েসি ইঁদুরের রক্তে পাওয়া এক বিশেষ প্রোটিন বুড়ো ইঁদুরের রক্তে ঢুকিয়ে দেওয়ার পর জবুথবু প্রবীণ মূষিক ছোকরা ইঁদুরদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়চ্ছে। শুধু তাই নয়, এর জেরে বৃদ্ধের মস্তিষ্কের রক্ত ধমনীও যুবা ইঁদুরের মতোই সচল হয়ে উঠেছে।
আবার, ক্যালিফোর্নিয়ার স্যানফ্রানসিস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী লী রুবিন লক্ষ্য করেছেন, যুবক ইঁদুরের রক্ত বয়স্ক ইঁদুরের শরীরে ঢোকানোর ফলে জীর্ণ মস্তিষ্কের অচল হয়ে যাওয়া এক 'আণবিক সুইচ' ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিশক্তি ফিরে পাচ্ছে প্রবীণ ইঁদুররা।
গবেষণার সাফল্য দেখে নতুন আশায় বুক বেঁধেছে বিজ্ঞানী মহল। প্রশ্ন জেগেছে, ইঁদুরের শরীরে সফল হলে, এই প্রোটিন জরাগ্রস্ত মানবদেহেও কি তারুণ্যের সঞ্চার ঘটাতে পারে?
ওয়েজার্স জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। তবে আশার কথা, ইঁদুরের রক্তে খুঁজে পাওয়া সেই প্রোটিন মানুষের রক্তপ্রবাহেও উপস্থিত। তাই ভবিষ্যতে স্বপ্ন সফল হলেও হতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ নিয়েও আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, সঠিক পদ্ধতি না মেনে এবং চিকিত্সকের পরামর্শ না নিয়ে স্রেফ বয়স কমানোর লোভে কেউ যদি নিজের শরীরে কোনও নবীনের রক্ত প্রবেশ করাবার চেষ্টা করেন, তা হলে সমুহ বিপদ ঘটতে পারে। এমনকি, হতে পারে প্রাণ সংশয়ও।
তাই ৮০-তে না-আসার খোয়াব দেখলেও আপাতত প্রকৃতির বিধান শিরোধার্য করাই বিধেয়।
২৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/আল-আমিন/এএস